
স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর প্রায় প্রতিটি মোড়েই হরেক নামের বাহারে ছড়িয়ে রয়েছে হারবাল, হোমিও চিকিৎসা কেন্দ্র। যার অধিকাংশেরই সঠিক অনুমোদন বা অনুমতি পত্র নেই। রোগিদের সাথে চলছে চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা। নিম্ন মানের ওষুধ দিয়ে রোগিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ। দীর্ঘ সময়ের সেবার নামে চলছে হোমিও চিকিৎসকদের একটি বাহানা। প্রায় প্রত্যেক চিকিৎসকই বলেন, সময় না দিলে আসল রোগ কি তা ধরা যাবে না। তেমনি এক হোমিও চিকিৎসা কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। মালিবাগ রেইলগেট সংলগ্ন আবুল হোটেলস্থ শান হোমিওতে চলছে চিকিৎসার নামে প্রতারণা।
সরেজমিনে শান হোমিও ফার্মেসীতে গিয়ে দেখা যায়, দোকান খুলে চিকিৎসার পসরা সাজিয়ে বসে আছেন একজন। পরিচয় না দিয়ে দোকানে বসা কাদের মিয়া (ছন্দনাম) কাছে রোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিনিধিকে চিকিৎসার পরামর্শ দেয়। তার কথায় কিছুটা সন্দেহ হলে এই প্রতিনিধি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সরকারি কোনো অনুমতি বা ড্রাগের অনুমতি আছে কি না দেখতে চাইলে শান হোমিওর ডাক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। তিনি বলেন, আমার অনুমতি নেই ঠিক আছে। তবে আমি দ্রুতই সব ঠিক করে ফেলবো। তাকে অনুমতি ছাড়া হোমিও ফার্মেসী খোলা রাখা ঠিক কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনি দোকান বন্ধ করে দিচ্ছি। দেখা যায়, তার দোকানে বহু ধরনের যৌন চিকিৎসার ওষুধ প্রদশিত হচ্ছে। মানুষের দুর্বল বিষয়ে খুবই আকর্ষনীয় সু-চিকিৎসার ব্যাবস্থা রয়েছে এমন অনেক পোস্টার রয়েছে সেখানে।
তিনি জানান, হোমিও চিকিৎসা একটি দীর্ঘস্থায়ী সেবাময় ব্যবস্থা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সময় নিয়ে রোগিকে চিকিৎসা সেবা দিতে হয়। এক অনুসন্ধানে দেখা যায় হারবাল, কবিরাজি ও হোমিও চিকিৎসার প্রায় ৭০ ভাগই যৌন চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে আসে। বেশিরভাগ হোমিও ডাক্তার খুব অমায়িক, ধার্মিক, দাড়ি টুপি পাঞ্জাবি পরা সৌম্য চেহারার বয়স্ক একজন। কথা মন দিয়ে শোনেন, সময় নিয়ে বোঝান, রোগ ছাড়াও আশেপাশের বিষয় নিয়ে কথা বলেন ইত্যাদি কারনে ডাক্তারের উপরে এমনিতেই ভক্তি চলে আসে আর বিশ্বাসটা আসে সেখান থেকেই। “প্রাকৃতিক নিরাময়”- মানুষের শরীর এমনই এক অবিশ্বাস্য যন্ত্র যা নিজেই নিজেকে সুস্থ করতে পারে। রোগের পাচটি পর্যায় আছে যার একটি হল নিরাময় পর্যায় যা এমনিতেই ঘটতে পারে। কবিরাজ, ঝাড়ফুক, তাবিজ, মাদুলিওয়ালারা এই পর্যায়ের উসিলাতেই বেচে আছে। ঝড়ে বক মড়ে ফকিরের কেরামতি বাড়ে এই আর কি।
হোমিওবিদেরা জীবন যাত্রা পরিবর্তনের পরামর্শ দেন যেগুলো আসলেই কাজের যেমন নিয়মিত হাটাচলা করা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, বেশি করে ফলমূল খাওয়া, শাকশবজি খাওয়া, গোস্ত কম খাওয়া, কম ঘুমানো ইত্যাদি। রোগ এতে ভাল হবে নিশ্চয়ই। ব্যাতিক্রমি উপদেশ- অনেক সময়েই হোমিওবিদেরা দেন, যেমন আপনার ধরুন চোখ উঠেছে, তিনি দাওয়াই দিলেন আর বললেন আপনি কলা খাবেন না একদম, অথবা প্রতিদিন সকালে একটা কলার তিন ভাগের একভাগ পানিতে ভিজিয়ে ৫ দিন খাবেন। এই যে ব্যাতিক্রমি একটি উপদেশ এটা একেবারে ম্যাজিকের মত কাজ করবে মনে তথা শরীরেও!
