ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সম্পাদকের লাগামহীন কান্ড!

লেখক: সাব এডিটর
প্রকাশ: ৬ years ago

টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার অবুঝ সহকারী কমিশনার ভুমি, হেমনগর ইউনিয়নের অর্ধমাতাল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নামেমাত্র সেক্রেটারীর লাগামহীন কান্ড। মোটা চাঁদা না দেওয়ায় ফুলের বাগান ভাংচুর। বাড়ী ভাঙ্গার হুমকি।

নিজস্ব প্রতিবেদক‍ঃ বাংলাদেশ ও সদাশয় সরকার যেই মুহুর্তে স্বরণকালের মহামারী করোনা ভাইরাসের ছোবল থেকে দেশবাসীকে রক্ষায় জীবনপণ সংগ্রাম করে যাচ্ছেন ঠিক সেই মূহুর্তে গোপালপুর থানার অবুঝ সহকারী কমিশনার ভূমি, হেমনগর ইউনিয়নের অর্ধমাতাল চেয়ারম্যান রওশন খান আইয়ুব এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নামেমাত্র সেক্রেটারী আনিছুর রহমান তালুকদার হীরা সামান্য ১টি ফুলের বাগান ভাংগার কাজে ব্যস্ত।

স্থানীয় হেমনগর লিংক মাধ্যমে জানা যায়, গোপালপুর থানার হেমনগরে স্থাপিত হক ন্যাশনাল ক্লিনিকের গরীব মালিক তার শেষ সম্বল জমি বিক্রী করে ক্লিনিকের সামনে অবস্থিত সরকারী পুকুরের ভাঙ্গন রোধে দুই লক্ষ টাকা খরচ করে পুকুরের পাড় বাধাই করেন এবং ক্লিনিকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও সামনের গরু, ছাগল, গোবর ও বখাটেদের অত্যাচার বন্ধে আরো এক লক্ষ টাকা খরচ করে পুকুর পাড়ে সরকারী পরিত্যাক্ত জায়গায় ছোট ১টি ফুলের বাগান করে দেন। ক্লিনিক মালিক বিগত তিন বৎসর যাবৎ উক্ত পুকুর পাড়ে ও বাগানে দেশী বিদেশী অনেক ফুল ও ফলের গাছ রোপন করেন। ক্লিনিক মালিকের এহেন কর্মে বিগত তিন বৎসরে প্রশাসন বা এলাকাবাসী পক্ষ হতে কোন বাধা বা আপওি প্রদান করা হয় নাই। বরং বিগত তিন বৎসরে এলাকার সুধীজনেরা এবং ক্লিনিকে আগত হাজার হাজার রুগীরা মালিকের এহেন কর্মে সাধুবাদ জানিয়ে এসেছেন।

দীর্ঘ তিন বৎসর পর হঠাৎ করে এলাকার চাঁদাবাজদের মোটা অংকের চাঁদা দিতে অস¦ীকার করায় চাঁদাবাজগণ একে অপরের যোগসাজসে ষড়যন্ত্র মূলকভাবে ফুলের বাগানটি ভাংগার পায়তারা করিতে থাকে। ঘটনা জানতে পারিয়া মালিক ফুলের বাগানটি রক্ষার জন্য ২৬/৪/২০ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবরে লিখিত আবেদন দাখিল করেন (কপি সংযুক্ত)। কিন্তু দূঃখ জনক সত্য এই যে, কর্তৃপক্ষ ক্লিনিক মালিকের দাখিলকৃত আবেদন আমলে না নিয়ে এবং আত্মপক্ষ সর্মথনের কোন প্রকার সুযোগ না দিয়ে চাঁদাবাজদের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি মহোদয় ২৭/৪/২০ ইং তারিখে ঘটনাস্থলে আসিয়া ফুলের বাগানটি ভেংগে তছ্নছ্ করে দিয়ে যান। সুযোগে সহকারী কমিশনার ভূমি মহোদয় চলে যাওয়ার পর চাঁদাবাজগণ বাগানে রক্ষিত লক্ষাধিক টাকার লোহার গ্রীল, ১০ হাজার টাকার অব্যবহিত ইট, আনুমানিক ১০ হাজার টাকার সিমিটের খাম ও হাজার হাজার টাকার ফুল ও ফলের গাছ লুটপাট করে নিয়ে যায়। সর্বপরি সহকারী কমিশনার ভূমি মহোদয় চলে যাওয়ার পর স্থানীয় ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব খাদেমুল ইসলাম তার লালিত সন্ত্র্রাশীদের সাথে নিয়া পুকুর পাড়ে রক্ষিত সরকারী জায়গার শতাধিক ফল মূলের গাছপালা কাটিয়া তছনছ করেন। এ ব্যাপারে ২৮/৪/২০ তারিখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খাদেমুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারী গাছ কাঁটার দায়ে গোপালপুর থানায় ৮৯২ নং জিডি করা হয়। অথচ একই স্থানে সরকারী জায়গায় চাঁদাবাজদের তৈরী হাঁস পালনের পাকাঘর এবং জুয়ার আসর ঘর বহাল তবীয়তে রহিয়াছে। যাহা প্রতি নিয়তঃ এলাকায় রোগ জীবানু ছড়াইতেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায় হেমনগরের চাঁদাবাজগণ শুধুমাত্র হক ন্যাশনাল ক্লিনিকের সামনের বাগান ভেংগে ক্ষান্ত হন নাই। তাহারা বাগান ভাংগার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য হক ন্যাশনাল ক্লিনিকের বাড়ী ভাংগার হুমকি দিয়ে যান। তাহাছাড়া বিগত দিনে হক ন্যাশনাল ক্লিনিক থেকে চাঁদা বাবদ গৃহিত ১,৫০,০০০/- টাকার দায় হতে মুক্তির জন্য চাঁদাবাজগণ ক্লিনিক মালিককে সবার সামনে নিয়া চাঁদার কথা অস্বীকার করান এবং মালিকের স্বীকারোক্তি ভিডিও করে হেমনগর লিংকে ছেড়ে দেন। ইহাতে ক্লিনিক মালিকের সামাজিক মর্যাদায় ব্যাপক আঘাত হানে। যাহা মালিককে আত্মহত্যার দিক নির্দেশ করিতেছে।

মোবাইল সাক্ষাৎকারে হক ন্যাশনাল ক্লিনিকের মালিক জানান। তিনি কোন ব্যবসায়ী নন। সয়ং আল্লাহ উপহার হিসাবে তাহার দুই সন্তানকে বিসিএস ক্যাডার ডাক্তার করায় এবং এক সন্তানকে বাংলাদেশের সর্ব্বোচ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েট হতে আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ার করায় জীবনের শেষ প্রান্তে তিনি মানব সেবার জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম বিভূই পল্লী গ্রামে ক্লিনিকটি স্থাপন করিয়াছেন। তিনি চাঁদাবাজদের এহেন মশা মারতে কামান ব্যবহারের মতো নেক্কার জনক ঘটনায় ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য সরকার প্রধানসহ দেশ দরদী সংবাদিক ও মিডিয়া কর্মীদের সাহায্য প্রার্থনা করেন।

ফোনে তাহাকে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতার বিষয় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি গোপালপুর থানার সনামধন্য ওসি মোস্তাফিজুর রহমান সাহেবের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং স্থানীয় হেমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর জনাব শফিকুল ইসলাম সর্বদা তাহাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাহায্য করায় তিনি পুলিশ বিভাগের নিকট চিরঋৃণী ও কৃতজ্ঞ বলে জানান। একমাত্র পুলিশের যথাযথ হসÍক্ষেপে তার ক্লিনিক ও পরিবারবর্গ অদ্য পর্যন্ত হেমনগরে সুরক্ষিত আছে বলে স্বীকার করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হেমনগরের পুরাতন রাজবাড়ী, রাজার শত শত বিঘা খাস জমি, হাওর, পুকুর, কলেজ বর্তমান চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্য। বাহুবলে যে যতটুকু পারেন, খাস জমি ও বিশাল বিশাল পুকুর দখল করে বসে আছেন। হেমনগরে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ড নাই। এখানে সবাই পেট নীতিতে বিশ্বাসী। নাটের গুরু চেয়ারম্যান ও তার বাহাম ভুক্ত সন্ত্রাসীরা সারা বৎসর রাজবাড়ীর সম্পদ সমূহ লিজ, ইজারা ও ভাগ ভাটোয়ারা করিতে গিয়া মারামারি, হানাহানি, মামলা মোকদ্দমা, শালিশ দরবার ও ঘুষ লেনদেনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করিয়া লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতেছে। গোপালপুরের সহকারী কমিশনার ভূমিসহ সবাই দূর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজ নেতাদের তাবেদার। জানা যায় মাত্র কিছুদিন পূর্বে ৩০/১/২০২০ তারিখে গোপালপুরের সহকারী কমিশনার ভূমি মহোদয় হেমনগরের ৭০২ নং দাগের ৩৭ শতাংশ সরকারী খাস জমি উদ্ধারের জন্য নোটিশ জারী করেন। নোটিশ জারীর পর হেমনগর তহশীল অফিসের নায়েব জনাব আলী আজগর তালুকদারের মাধ্যমে সহকারী কমিশনার ভূমিকে ৩,০০,০০০/- লক্ষ টাকা ঘুষ প্রদান করা হলে সরকারের খাস জমি উদ্ধারের নোটিশ হাওয়া হয়ে যায় ।

সংস্থার পক্ষ হতে বিবিধ মাধ্যমে চেয়ারম্যান রওশান খান আইয়ুব সর্ম্পকে জানতে চাওয়া হলে জানা যায় হেমনগরবাসী বহু আগেই তাহাকে অন্তর হতে অনাস্থা প্রদান করিয়াছেন। তিনি গায়ের জোড়ে সন্ত্রাশী কর্মকান্ডের মাধ্যমে আজঅবদি কোনভাবে দায়িত্ব পালন করিয়া আসিতেছেন। সন্ত্রাশী কর্মকান্ডের কারণে তাহার বিরুদ্ধে কেহ মুখ খুলিতে পারিতেছেন না। তাহাকে চেয়ারম্যান হিসাবে স¦ীকার না করায় তিনি নিজ গ্রাম শাখারিয়া নিবাসী শামছু খান এর ছেলে শাহিনুরকে প্রকাশ্য দিবালোকে শালিশের মাধ্যমে বেধম মারপিট করে চিরতরে পংগু করে দেন। সমালোচিত চেয়ারম্যান রওশান খান আইযুব সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে এলাকার কতিপয় ব্যক্তিবর্গ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মোবাইল যোগে হাঁ বা না ভোটের ব্যবস্থা গ্রহণসহ হেমনগর কলেজের অধ্যক্ষগণসহ হেমনগর নিবাসী আনিছুর রহমান তালুকদার হীরা, ইউপি সদস্য টুটুল, ইউপি সদস্য রাজাসহ স্থানীয় নলিন বাজার ও শাখারিয়া গ্রাম নিবাসী আওয়ামী লীগের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুরোধ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন...