হেয় করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার ঘোষণা দিয়েছেন বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম।
গতকাল রোববার সকালে তার নির্বাচনী এলাকার কাহালুতে গণসংযোগকালে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে এ কথা বলেন তিনি।
ইসির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে হিরো আলম বলেন, ‘ইসি (ইসি সচিব) বিষয়টি কি তা আপনারা সবাই জানেন। আমি নির্বাচনে দাঁড়ানোর পর থেকে একের পর এক ষড়যন্ত্র চলছে। প্রথমে রিটার্নিং কর্মকর্তা আমার মনোনয়ন বাতিল করল। তার পর আমি আপিল করলাম, সেখানেও বাতিল করল। পরে হাইকোর্টে রিট করলাম, সেখান থেকে রায় পক্ষে আসে। রায়ের পরেই কিন্তু আমি নির্বাচনে দাঁড়াই। তার পর ইসি কিন্তু সেদিনকে একটি কথা বলল, হেলালুজ্জামান (হেলালুদ্দীন আহমদ)-হিরো আলমের মতো লোক, ও আমাদের হাইকোর্ট দেখায়। উনি কিন্তু ওখানে ‘তুই’ বলে একটা শব্দ বলেছে।’
ব্যালট পেপার ছাপানো নিয়ে বিড়ম্বনার কথা বলতে গিয়ে গত বুধবার এক কর্মশালায় ইসি সচিব ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেন-‘হিরো আলম পর্যন্ত ইসিকে হাইকোর্ট দেখায়। সেও বলে যে, নির্বাচন কমিশনকে হাইকোর্ট দেখিয়ে ছাড়ছি; বোঝেন অবস্থা!’
এর প্রতিক্রিয়ায় হিরো আলম বলেন, ইসি সচিব আমাকে ইনসাল্ট (অপমান) করে কথা বলে নাগরিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ প্রকাশ করেছেন। একটি দায়িত্বপূর্ণ জায়গায় থেকে একজন প্রার্থী সম্পর্কে তিনি এ কথা বলতে পারেন না। এ ধরনের মন্তব্যের জন্য আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ করব।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র এই প্রার্থী নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের পদত্যাগও দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, বগুড়া-৪ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন আলোচিত অভিনেতা হিরো আলম। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়ন বাতিল করেন। ইসিতে আপিল করেও প্রার্থিতা ফিরে পাননি হিরো আলম।
পরে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট তার মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরে হিরো আলম বলেন, ইসিকে হাইকোর্ট দেখিয়ে ছাড়লাম।
বুধবার হিরো আলমের প্রসঙ্গ তুলেন ইসি সচিব। হিরো আলমের ‘হাইকোর্ট দেখানো’ প্রসঙ্গে ইসি সচিব আরও বলেন, ও তো (হিরো আলম) স্বতন্ত্র প্রার্থী। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যখন গেল তার মনোনয়ন বাতিল হল। আপিলে বাতিল হল। পরে হাইকোর্টে রিট করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছে হিরো আলম। তাকেও প্রতীক দেয়া হয়েছে। এ রকম ৫০ জনের বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। তাদের প্রতীক নিয়েও হাইকোর্ট নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন। এসব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ও ব্যতিব্যস্ত।
ইসি সচিবের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হিরো আলম বলেন, একজন সচিব এমপি প্রার্থীর সঙ্গে তুই-তোমারি করে কথা বলতে পারেন না। তিনি আমারে ইনসাল্ট (অপমান) করে কথা বলেছেন। আমি সচিবের কথার নিন্দা জানাই এবং তার পদত্যাগ দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, দেশের নাগরিকদের ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার আছে। সে ছোট হোক বা বড় হোক। তারা কিন্তু জনগণের সেবক। তারা কিন্তু আমাদের চাকরি করে। তারা জনগণের কথা বলবে। উনি (হেলালুদ্দীন) সেদিন যেভাবে কথা বলসে, তখন কিন্তু একতরফা কথা বলসে। ক্ষমতা দেখাইসে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনারের উচিত দেশের সবার হয়ে কথা বলা।
প্রসঙ্গত, ইউটিউবে বিচিত্র অভিনয়, গান আর নাচ দেখিয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন হিরো আলম। তার প্রকৃত নাম আশরাফুল আলম। তিনি এর আগেও স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচিত এই ‘হিরো’।