উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় ’রেমাল’

লেখক: Dhaka Bangladesh
প্রকাশ: ১ বছর আগে

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে খুলনার কয়রা এলাকায় অবস্থান করছে।। এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই এটি প্রবল থেকে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর হবে নিম্নচাপ। ঘূর্ণিঝড়টির পুরো প্রভাব শেষ হতে আরও পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লাগতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি রোববার রাত আটটার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করে। এরপর উপকূল থেকে শুরু করে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। এ ছাড়া, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো এই মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে চার নম্বর নৌ-মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (প্রতি ঘণ্টায় ৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (প্রতি ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ থাকে প্রতি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বাতাসের গতি ৮৯ থেকে ১১৮ কিলোমিটার থাকলে প্রবল, ১১৯ থেকে ২১৯ পর্যন্ত অতি প্রবল এবং বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের বেশি থাকলে সুপার সাইক্লোন বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

আকাশ ও নদীপথ ভ্রমণ ব্যাহত

রেমালের ক্ষতি কমাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামাসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে রোববার দুপুর ১২ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ ছিলো। ঝড়ের গতিবেগের ওপর নির্ভর করে পরবর্তীতে তা আরও বাড়ানো হয়। রিমালের প্রভাবে কক্সবাজার থেকে বিমান ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মর্তুজা বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চালু করা হবে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে সারাদেশে লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, রোববার সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের লঞ্চ এবং নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন...

  • উপকূল অতিক্রম
  • ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’
  • বঙ্গোপসাগর