
ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণ এবং হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করবে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে আদালতে হাজির করার পর তাদের রিমান্ডের আবেদন করবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কিলিং মিশনের প্রধান শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ আমান, তার সহযোগী তানভীর ভূঁইয়া এবং শিলাস্তি রহমান। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, গ্রেফতাররা প্রত্যেকেই আনোয়ারুল আজিম হত্যাকাণ্ডে এবং তার মরদেহ গুম করার কাজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডটি ভারতে সংঘটিত হওয়ায় এরইমধ্যে ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের একটি প্রতিনিধি দলও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এসে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড বলা হচ্ছে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহীনকে। ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহিদুজ্জামান সেলিমের ভাই তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শাহিন কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের ৫৬বিইউ ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়ার কথা স্বীকার করলেও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই জড়িত নন। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তাই তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন। এদিকে, আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জিহাদ হাওলাদার জিহাদ নামে আরও এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)। তিনি খুলনার দিঘলিয়া থানার বারাকপুর গ্রামের জয়নাল হাওলাদার।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডি জানায়, জিহাদ অবৈধভাবে মুম্বাইয়ে বসবাস করতেন। দুমাস আগে সংসদ সদস্য আনারকে হত্যার জন্য কলকাতায় আনে আখতারুজ্জান শাহীন। খুনের সময় আরও চার বাংলাদেশি ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন। কিলিং মিশন শেষে মরদেহ টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে গুম করা হয় বলে জানান জিহাদ। আজ (শুক্রবার) উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাত আদালতে জিহাদকে তোলা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
অন্যদিকে সংসদ সদস্য আনারের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারে রাতেই আটক ক্যাব চালককে নিয়ে কলকাতায় অভিযানে নামে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কলকাতার কাশিপুর থানার অন্তর্গত ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি এলাকায় অভিযানে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে তারা। সরিয়ে দেয়া হয় আশপাশের লোকজনকে। ক্যাব চালক জোবায়ের স্বীকারোক্তিতে জানান, সংসদ সদস্য আনারের লাশ গুমের সময় তিন জন উঠেছিলেন ওই ক্যাবে। এরপর নানা পরিকল্পনা করে মরদেহ ফেলা হয় কৃষ্ণমাটি এলাকায়। মরদেহ গুম করতে ব্যবহৃত সাদা রঙের ওই গাড়ি জব্দ করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
