সুকমল চন্দ্র দাস (বাধন): করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত সরকার ১৩ মার্চ বিকাল থেকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা জয়নগর চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট যাত্রীদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর দর্শনা এখন জনশূন্য। অন্যদিকে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা পর থেকে খাঁ খাঁ করছে দর্শনা জয়নগর - গেদে চেকপোস্ট এলাকা। যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জয়নগর সীমান্তে হাজার হাজার মানুষের পদভারে মুখরিত থাকত। এখন নেই কোনো কোলাহল। অলস সময় কাটাচ্ছে বিভিন্ন পরিবহন কাউন্টারের লোকজন,আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিক কর্মচারী, ইমিগ্রেশন, কাস্টমস, আনসার সদস্যরা। নেই অটো চালকদের হাঁকডাক। সর্বত্র নীরব-সুনসান। এ যেন অচেনা এক চেকপোস্ট।
চেকপোস্ট এলাকার ব্যাবসায়ী অসিফ ইকবাল জানান, চেকপোস্টকে কেন্দ্র করে এখানে ছোট বড় অর্ধশত দোকান রয়েছে। যাত্রীদের আনা নেয়ার জন্য পায়ে চালিত ১০০টি ভ্যানগাড়ি রয়েছে, ৩০-৪০টি অটো/ইজিবাইক ও ২০টি রিকশা চলাচল করে। গত ২ মাস ধরে আমরা একদম বেকার হয়ে পড়েছি।
১৯৪৭ সালে চেকপোস্টটি স্থাপিত হয়। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধ শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় ১৯৭৮ সালে চালু হয়। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে এক ঘণ্টার জন্যও পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াত বন্ধ হয়নি। এমন একটি ভাইরাস রোগে (করোনা) সারা পৃথিবীর সাথে সম্পূর্ণ আলাদা করে দিয়েছে দর্শনা চেকপোস্টকে। করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে ভারতে ভ্রমণ ও ভিসা স্থগিত ঘোষণার পর বিপাকে পড়েছেন অসহায় রোগী ও ব্যবসায়ীরা।
এদিকে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় দুই দেশের মধ্যে রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক গতিতে চলছে। ইতিমধ্যে দ্ইু চলানে পেঁয়াজ, শুকনা ঝাল ও আদা আমদানি হয়েছে। যার ফলে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, রাজশাহী, বগুড়া, মানিকগঞ্জ, মাগুরা, ফরিদপুর, রাজবাড়ি পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোরসহ বিভিন্ন এলাকার পাসপোর্টধারীদের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার পাসপোর্টধারীযাত্রী দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকেন। এ ছাড়া প্রতিদিন প্রায় ৩/৪ র্যাগ বিভিন্ন ধরনের পন্য মালবাহী ট্রেনে পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়। প্রতিবছর আমদানি পণ্য ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে সরকার।
দর্শনা জয়নগর চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রাশেদ জানান, সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকায় কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীযাত্রী ছাড়া সকল পাসপোর্টযাত্রীদের যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছেনা। আমরা ইমিগ্রেশনের ১৬ জন পুলিশ সদস্য, কাস্টমস, বিজিবি ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা প্রতিদিন ডিউটি করি।