ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রোজেনেকা সম্প্রতি আদালতে স্বীকার করেছে যে, তাদের করোনার টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাদের এই স্বীকারোক্তির পর শুরু হয়েছে তোলপাড়।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ওষুধ ভারতে তৈরির লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই)-কে। অতিমারির সময়ে দেশটির বেশিরভাগ মানুষই নিয়েছিলেন কোভিশিল্ডের টিকা। ফলে যারা এই টিকা নিয়েছেন, তাদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
এ ঘটনায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করেছেন বিশাল তিওয়ারি নামে একজন আইনজীবী। কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কতখানি, তা তদন্তের আবেদন জানানোর পাশাপাশি ক্ষতিপূরণেরও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আদালতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করার পর এবার আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন দুই সন্তান হারানো বাবা–মা। কোভিশিল্ড নেয়ার পর ওই দুই দম্পতির মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
২০২১ সালে ১৮ বছর বয়সী রিথাইকা শ্রী ওমত্রি হায়দরাবাদের বাগ আম্বারপেটের একটি কেন্দ্রে করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেন। পাঁচদিনের মাথায় তার তীব্র জ্বর আসে, ১১ দিনের মাথায় রক্তক্ষরণ আর বমি থেকে হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। এর দুই সপ্তাহ পরে তার ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
অপরদিকে ২০২১ সালের জুলাই মাসে ভেনুগোপালন গোবিন্দনের কন্যা করুন্যার মৃত্যু হয়। ভেনুগোপালনের অভিযোগ, তারা মেয়েরও মৃত্যু হয়েছে কোভিশিল্ড নেয়ার পরে। মেয়ের মৃত্যুতে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছেন মৃতদের বাবা–মা। করুন্যার বাবা ভেনুগোপালন গোবিন্দা সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করে নেয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন,
প্রসঙ্গত, অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে ব্রিটিশ আদালতে প্রথম মামলা দায়ের করেন জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি। তার অভিযোগ ছিল, ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিশিল্ড নেয়ার পর তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। ফলে তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে গেছে। একই অভিযোগে ব্রিটিশ হাইকোর্টে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে প্রায় ১০ কোটি পাউন্ড দাবি করে ৫১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ বা আইসিএমআরের বিজ্ঞানী ডা. রমন গঙ্গাখেদকর। তিনি বলেছেন,
তার দাবি, প্রথম ডোজ নেয়ার পর টিটিএসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর সেই ঝুঁকি কমতে থাকে। আর বুস্টার ডোজের পর এই ঝুঁকি একেবারেই থাকে না।