গণপূর্তে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নুরে আলমের ঠিকাদারি লাইসেন্স বানিজ্য!

লেখক: সাব এডিটর
প্রকাশ: ৩ years ago

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গণপূর্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুঁইফোঁড় কোম্পানি ও নামেমাত্র ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স প্রধান করেন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নুরে আলম। এসব করে তিনি কালো টাকার মালিক বনে গেছেন। অধিদপ্তরে তার প্রভাব ও ক্ষমতার দাপট এতই যে নির্বাহী প্রকৌশলীরাও আতঙ্কে থাকেন। অনেক প্রকৌশলীর বিভিন্ন অপকর্মের আমলনামা তার জানা থাকায় প্রকৌশলীরাও মুখ খুলতে নারাজ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিশ্বত্ব সূত্র তদন্ত চিত্রকে জানায়, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসুর সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য নুরে আলম। ঐ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী থাকাকালে দুইটি অফিস আদেশের মাধ্যমে ৪৩টি নামে মাত্র কোম্পানিকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঠিকাদারির লাইসেন্স প্রধান করেন। দুই আদেশেই সদ্য বিদায়ী অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসু স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে।

অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রদীপ কুমার বসুর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৪৩টি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদারি লাইসেন্স প্রধান করেন নুরে আলম। এছাড়াও অন্যান্ন তত্ত্বাবাধায়ক প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার ভুয়া লাইসেন্স প্রধান করেন অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর নুরে আলম। তার এসব অপকর্মে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেন জনৈক ঠিকাদার।

অভিযোগে উল্লেখ করেন, বিগত বিশ বছর যাবত নিয়মিত ঠিকাদারি কাজ করার পরও গণপূর্ত অধিদফতরে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এদিকে ৪- ৫ বছর ধরে হঠাৎ গণপূর্ত বিভাগে অস্বাভাবিকভাবে ঠিকাদারি লাইসেন্সের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তিনি অভিযোগে বলেন, গণপূর্তের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নুরে আলম টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স বানিজ্য করায় অতিরিক্ত ঠিকাদারি লাইসেন্স বেড়ে গেছে। তার অপকর্মের ফলে যারা প্রকৃত ঠিকাদার তারা বঞ্চিত হচ্ছে। অধিদপ্তরের অনেকেই বলেন, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে টাকার বিনিময়ে ঠিকাদারি লাইসেন্স দিয়ে নুরে আলম অনেককে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। এমনকি নুরে আলম নিজেকে অধিদপ্তরের সবচেয়ে বড় ক্ষমতাবান মনে করেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়, নুরে আলম এসব অপকর্মের কালো টাকা দিয়ে গ্রামের বাড়ী গাইবান্ধা সদরে স্ত্রীর নামে প্রচুর সম্পদ ক্রয় করেন। ঢাকা, মাওয়া রোডেও তার সম্পদ রয়েছে। এমনকি ব্যাংকে অনেক টাকা রয়েছে স্ত্রী ও নিজের নামে। এসব অপকর্ম করেও তার কোন কিছুই হয়নি। ঠিক অপকর্মের মধ্য দিয়ে তার কর্মস্থলে বুক ফুলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তার এমন অপকর্মের কথা উর্ধতন কর্মকর্তারা জানলেও কোন ব্যবস্থা নেননি। বরং নিরবতা পালন করছেন। মনে হয় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নুরে আলমের কাছে সবাই জিম্মি।

এসব বিষয়ে নুরে আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন। এরপর ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। অফিসে গিয়ে কথা বলতে চাইলে তাকে পাওয়া যায় নাই। তার অপকর্ম নিয়ে আরো বিস্তারিত থাকবে পরবর্তী প্রতিবেদনে।

সংবাদটি শেয়ার করুন...