দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে শেয়ার ও ইউনিটের দরবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেলেও লেনদেনে সামান্য ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এক্সচেঞ্জের সবগুলো মূল্যসূচক উত্থান করলেও লেনদেনের পরিমাণ আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমে গেছে, যা বাজার বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীদের নজর কাড়ছে।
ডিএসইতে মঙ্গলবার মোট ৩৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৮৫টির দাম বেড়েছে, ৫৬টির দাম কমেছে এবং ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মূলত দর বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে ‘এ’ ক্যাটাগরির ১৫৪টি শেয়ার ও ইউনিটে, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৭১টি এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৬০টি শেয়ারে।
দরবৃদ্ধির ফলে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে ৪,৯৫১ পয়েন্টে পৌঁছেছে। এছাড়া শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১,০৩৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে ১,৯০৬ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধান সূচকের সামান্য উত্থান বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে।
তবে লেনদেনের পরিমাণে কিছুটা পতন লক্ষ্য করা গেছে। মঙ্গলবার ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৭৯ কোটি ৭ লাখ টাকা, যা সোমবার (৩০ নভেম্বর) লেনদেন হওয়া ৪১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার তুলনায় ৩৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা কম। রোববারের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৯২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। লেনদেনে এই ধীরগতি বাজার বিশ্লেষকরা মূলত বিনিয়োগকারীদের অপেক্ষা এবং সাপ্তাহিক প্রফিট বুকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করছেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ও মঙ্গলবার বেশিরভাগ শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এক্সচেঞ্জে লেনদেন করা ১৬৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ৫৮টির কমেছে এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। তবে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২ পয়েন্ট কমে ১৩,৮৫১ পয়েন্টে এবং সিএসসিএক্স ১ পয়েন্ট কমে ৮,৫৩৬ পয়েন্টে নেমেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে মোট লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকা, যা মূলত সীমিত অংশগ্রহণ ও ছোট বিনিয়োগকারীদের অপেক্ষার সঙ্গে যুক্ত।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডিএসই ও সিএসইতে শেয়ার ও ইউনিটের দরবৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক বার্তা হলেও লেনদেনে পতন সাময়িক উদ্বেগ তৈরি করেছে। বাজারের সীমিত অংশগ্রহণ, বিনিয়োগকারীদের সাবধানী মনোভাব এবং সাম্প্রতিক বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা লেনদেন কম হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, “দরবৃদ্ধি দেখে কিছুটা আশা জন্মায়, কিন্তু লেনদেনের পরিমাণ কম হওয়ায় আমরা খুব বেশি রিস্ক নিতে পারছি না। বাজারে স্থিতিশীলতা আসা প্রয়োজন।”
বিশ্লেষকরা আরও উল্লেখ করেছেন, আগামী দিনে পুঁজিবাজারের দিকনির্দেশ মূলত সরকারের অর্থনীতি-উদ্বৃত্ত নীতি, বৈশ্বিক শেয়ার বাজারের পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগকারীর মনোভাবের ওপর নির্ভর করবে।