
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বলেছেন, ১০০ বছর পরও আমরা আরেকজন বেগম রোকেয়া গড়ে তুলতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমরা তার স্বপ্ন ও দিকনির্দেশনাকে কাজে লাগাতে পারিনি। কথা বলেছি, কিন্তু বাস্তবে অগ্রগতি আনতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, বেগম রোকেয়ার জন্মদিনের এই আয়োজন শুধুমাত্র তাকে স্মরণ করার জন্য নয়, বরং আমাদের ব্যর্থতা চিহ্নিত করারও। কেন এই শতাব্দী পরও আরও বেগম রোকেয়া আসেনি, কেন আমরা সমাজকে সেই দিকনির্দেশনায় নিয়ে যেতে পারিনি—এই প্রশ্নগুলো আমাদের ভাবতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, দুর্ভিক্ষের প্রভাব প্রথমে পড়েছিল নারীদের এবং শিশুদের ওপর। মেয়েরা জানতো না তাদের নিজের নাম কী। সমাজ তাদের নাম ও পরিচয় থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। “আমরা নাম লিখতে শিখালাম, শিক্ষার মাধ্যমে স্বনির্ভর হতে শেখালাম। বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন আজও আমাদের প্রেরণা,” তিনি যোগ করেন।
তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া সবসময় সমাজকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করেছেন। নারীদের লেখাপড়া শেখাতে বলেছিলেন যাতে তারা স্বাবলম্বী হতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সেই শিক্ষা কাজে লাগাতে হবে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নারী শিক্ষার অগ্রগতি তুলে ধরে জানান, এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছেলে-মেয়ের সংখ্যা প্রায় সমান হলেও, মেয়েদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এখনও যথাযথ নয়। তিনি নারী নেতৃত্বকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার মূল চালিকা শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়’ করার ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি এ বছর বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত চারজনের হাতে পদকও তুলে দেন। পদকপ্রাপ্তরা হলেন: নারী শিক্ষা (গবেষণা) শ্রেণিতে: রুবানা রাকিব, নারী অধিকার (শ্রম অধিকার) শ্রেণিতে: কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার শ্রেণিতে: নাবিলা ইদ্রিস, নারী জাগরণ (ক্রীড়া) শ্রেণিতে: ঋতুপর্ণা চাকমা।
