
ঢাকার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-তে আজ রোববার (৯ নভেম্বর) থেকে ব্যাংক বর্হিভূত দুই কোম্পানির শেয়ার নতুন নিয়মে লেনদেন হচ্ছে। নতুন নিয়মে শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য পরিবর্তন বা ‘টিক সাইজ’ ১ পয়সা করা হয়েছে, যা আগে ১০ পয়সা ছিল।
ডিএসই জানিয়েছে, আজ থেকে নতুন ‘টিক সাইজ’ কার্যকর হচ্ছে ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড-এর শেয়ারে। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে শেয়ারদর ৯০ পয়সায় থাকায় এই দুই শেয়ারের জন্য নতুন নিয়ম কার্যকর হচ্ছে।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর পুঁজিবাজারে নতুন এই নিয়মে আরও দুই কোম্পানির লেনদেন শুরু হয়। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে নতুন টিক সাইজে এখন পর্যন্ত ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে।
পুঁজিবাজারের ইতিহাসে ১ টাকার নিচে শেয়ার লেনদেনের ঘটনা কেবল এটিই। এর আগে কখনো পুঁজিবাজারে এক টাকার নিচে শেয়ার লেনদেন হয়নি, ফলে ১ টাকার নিচে লেনদেনে কোনো রুলসও করতে হয়নি। তবে সম্প্রতি ডিএসই ১ টাকার নিচে শেয়ার লেনদেনে নতুন এই নিয়ম চালু করেছে, যা গত ২৯ অক্টোবর থেকে কার্যকর রয়েছে।
আজ রোববার নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডিএসই জানায়, গত বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে দুই কোম্পানির শেয়ারদর ৯০ পয়সায় স্থির হওয়ায়, ওই দুই শেয়ারে আজ থেকে নতুন ‘টিক সাইজ’ কার্যকর হচ্ছে। কোম্পানি দুটি হলো- ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড।
এর মধ্যে ফাস ফাইন্যান্সের শেয়ার লেনদেনের শুরুতেই গত বৃহস্পতিবারের ৯০ পয়সা থেকে আরো ১০ শতাংশ বা ৯ পয়সা কমে ৮১ পয়সায় স্থির হয়েছে। আর বেলা ১১টা পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শেয়ার প্রায় ৭ শতাংশ বা ৬ পয়সা কমে ৮৪ পয়সায় নেমেছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আজ লেনদেন শেষেও শেয়ার দুটির দর ক্লোজিং প্রাইসে স্থির থাকবে। তবে শেয়ারের দর বাড়তে বাড়তে যদি ১ টাকার উপরে উঠে যায় (১ টাকা ১ পয়সা, ২ পয়সা থেকে ৭ পয়সা পর্যন্ত), তাহলে ওইদিন লেনদেন শেষে তা ‘রাউন্ড ফিগার’ বা পূর্ণ সংখ্যা ১ টাকায় রূপান্তর হবে। পরের কার্যদিবস থেকে এটি পুরোনো ‘টিক সাইজ’ নিয়মে ফিরবে, অর্থাৎ শেয়ারদর বাড়া বা কমার সর্বনিম্ন হার হবে ১০ পয়সা।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শেয়ারদর ১ টাকার নিচে নেমে নতুন টিক সাইজে লেনদেন হচ্ছে। ফলে এখন পর্যন্ত ৪টি শেয়ার নতুন টিক সাইজে লেনদেন করছে।
সম্প্রতি এক টাকার নিচে নেমে যাওয়া শেয়ারের লেনদেন প্রক্রিয়া আটকে যাওয়ায় নতুন এই নিয়ম চালু করে ডিএসই, যা গত ২৯ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে। প্রচলিত ‘টিক সাইজ’ অনুযায়ী, ১ টাকার উপরের সব ধরনের ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ একবারে সর্বনিম্ন ১০ পয়সা পর্যন্ত কমতে বা বাড়তে পারে। অন্যদিকে, সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা রয়েছে ১০ শতাংশ। এই হারে ৯০ পয়সা দরের শেয়ারে ১০ শতাংশ পরিবর্তন মানে ৯ পয়সা। কিন্তু ‘টিক সাইজ’ যেহেতু ১০ পয়সা, তাই ৯ পয়সা বাড়া বা কমার সুযোগ ছিল না। তাছাড়া, ১০ পয়সা বাড়িয়ে শেয়ারদর ১ টাকা বা ১০ পয়সা কমিয়ে ৮০ পয়সা করাও সম্ভব নয়— তাহলে সার্কিট ব্রেকারের লিমিট ভাঙবে, নিয়মের লঙ্ঘন হবে। ফলে লেনদেন প্রক্রিয়া সচল রাখতে বাধ্য হয়েই এই নিয়ম চালু করে ডিএসই।
নতুন ‘টিক সাইজ’ চালু করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত ১৬ অক্টোবর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে চিঠি দেয় ডিএসই। পাশাপাশি ২৯ অক্টোবর থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকরের তথ্য জানিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে নিজস্ব ওয়েবসাইটে ঘোষণা দেয় স্টক এক্সচেঞ্জটি।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এক টাকার নিচে নেমে যাওয়া শেয়ারের লেনদেন এখন ৮৯, ৮৮, ৮৭, ৮৬, ৮৫ পয়সা—এ ধরনের সূক্ষ্ম দরেও অর্ডার দেওয়া যাচ্ছে।
