শারমিন শান্তাঃ চট্টগ্রামের একটি প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার পর থেকে ওসি সাইরুল ইসলামকে দীর্ঘদিন ধরে তার খেসারত গুনতে হচ্ছে। নামে বেনামে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করিয়ে সামাজিকভাবে হেয় ও হয়রাণী করে আসছে ওই অপরাধী চক্র। অবশেষে তাঁর পরিবারকেও জড়িয়ে নানা রকম মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ওই চক্রটির বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, ওসি সাইরুল ইসলাম অফিসার ইনচার্জ হিসাবে সিএমপি’র চান্দগাঁও থানায় দায়িত্ব পালন করা কালীন সময় আয়শা বেগম প্রঃ জোসনা (২৭), পিতা-মৃত আঃ শুক্কুর, মাতা-হাফেজা প্রঃ আবেজা বেগম, সাং-রাজবাড়ি, ০৫নং ওয়ার্ড, মোজাম্মেলের বাড়ি, পৌরসভা, থানা-লামা, জেলা-বান্দরবানকে নকল স্বর্ণ বন্ধক রেখে প্রতারনা করার অভিযোগে ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানাধীন মৌলভী পুকুর পাড়, গাবতলা এলাকার জনসাধারন আটক করে থানায় খবর দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল হইতে আটককৃতকে হেফাজতে নেন এবং তার হেফাজত হইতে নকল ০৪ (চার) টি চুড়ি এসআই/গোলাম মোঃ নাসিম হোসেন জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করেন। আসামীর দেওয়া তথ্য ও সনাক্তমতে নকল স্বর্ণের মূল হোতা জনৈকা প্রতারক রোজিনা পারভীন ঝর্ণা (২৪), স্বামী-মামুনুল হক চৌধুরী প্রকাশ মামুন, পিতা-আলী ইউসুফ, মাতা-রাফিকুল নেছা, সাং-পশ্চিম গোমদন্ডী, থানা-বোয়ালখালী, জেলা-চট্টগ্রামকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে রোজিনা পারভীন ঝর্ণা (২৪) এর দেওয়া তথ্যমতে তাহাদের অপর সহযোগী মিটন ধর (২০) কে গ্রেফতার করে। ঘটনার বিষয়ে আনন্দ কুমার ধর (২৫), পিতা-বিমল ধর, মাতা-লক্ষী ধর, সাং-আমিরাবাদ, বনিক পাড়া, মঙ্গল নগর, থানা-লোহাগাড়া, জেলা-চট্টগ্রাম বাদী হইয়া সকল আসামীদের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানার এজাহার দায়ের করিলে মামলা নং-০৩, তাং-০১/১০/১৫ইং, ধারা-৪২০ পিসি রুজু করা হয়। মামলাটি প্রাথমিক পর্যায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, চট্টগ্রাম-১ তদন্ত করেন এবং পরবর্তীতে এসআই মোঃ গোলাম মোস্তফা, চান্দগাঁও থানা, সিএমপি, চট্টগ্রাম আসামীদের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানার অভিযোগপত্র নং-৪০, তাং-৩১/০১/১৭ইং বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন। বর্তমানে মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ওসি জানান, প্রতারকদের গ্রেফতারের পর ধৃত আসামী রোজিনা পারভীন ঝর্ণা’র স্বামী হিসেবে সাংবাদিক পরিচয়দান কারী মামুনুল হক চৌধুরী প্রকাশ মামুন (৩৫) লোকজন নিয়ে থানায় আসে। রোজিনা পারভীন ঝর্ণাকে থানা হতে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা তদবির করে। এতে কোন কাজ না হওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে উক্ত অফিসারের বিরুদ্ধে বার বার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কখনো ব্যক্তিগত আইডি কখনো বা অন্য কোন আইডি থেকে মিথ্যা, বানোয়াট ও বাস্তবতা বিবর্জিত তথ্য পোষ্ট ও শেয়ার করে আসছে। যার প্রেক্ষিতে উল্লেখিত কুচক্রী মহল তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে পরিবার’সহ সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার কু-মানশে উদ্দেশ্যে প্রনোদিত ভাবে দফায় দফায় মিথ্যা সংবাদ পরিবশন করছে।
তিনি চান্দগাঁও থানা থেকে বদলি হয়েও রেহাই পাচ্ছেন না প্রতারক চক্রের হয়রানী থেকে। তিনি বর্তমানে বোয়ালখালী থানায় কর্মরত আছেন। প্রতারক চক্রের বাড়ী বোয়ালখালী হওয়ার সুবাদে চক্রটি পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠে। সাম্প্রতিক সময়ে একই চক্র ওসি সাইরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মর্মে মনগড়া ও সাজানো মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে তাঁর সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করছে বলে জানান তিনি। জানা গেছে,২০১৫ সালের ১০ আগস্ট উক্ত চক্রের সদস্য রোজিনা পারভিন ঝর্ণা বোয়ালখালী ইকতেখারুল ইসলাম সানির বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইঃ মামলা নং-৮৮৬ দায়ের করিলে বোয়ালখালী থাানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ ওমর ফারুক বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চক্রটি পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ আদালতে মামলা দায়ের করে যা মিথ্যা বলিয়া প্রমাণিত হয়। ভুক্তভোগী বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইরুল ইসলাম জানান, অপরাধ চক্রটিকে ধরার পর থেকে তিনি নানান ভাবে হয়রাণী ও নাজেহাল হচ্ছেন। এখন তার পরিবারও এ চক্রের চক্রান্ত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এ চক্রের বিরুদ্ধে মামলা নেয়াটা তার ও তার পরিবারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িছে।
তিনি আরও বলেন, মৌরশী সূত্রে প্রাপ্ত ও তার ভাইয়ের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সফলতায় অর্জিত সব সম্পদ যা সরকারি আয়কর বিবরণীতে বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও এগুলো নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন করিয়ে সামাজিকভাবে তাদের ক্ষতি গ্রস্থ করছেন চক্রটি।বসুন্ধরার প্লটটি যাথাযথ আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিস্তিতে ক্রয় করা হয়। যার কিস্তির টাকা তার ভাই সাইফুল ইসলাম পরিশোধ করে উন্নয়ন কাজ করছে। যশোরের প্রাণ কেন্দ্র সিটি কলেজ পাড়ার জায়গাটি প্রায় ২৩ বছর আগে তাঁর বাবা ৪৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছেন। ছেলে সৌমিক হাসান যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ হার্টফোরশায়ারে “মহাকাশ প্রকৌশল” বিভাগে বৃত্তি পেয়ে লেখাপড়া পাশাপাশি লন্ডনে একটি স্বনামধন্য “ সেলেক্স গ্যালিলিও জেনারেল ডায়নামিক” নামক স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে। কর্ম ও পাঠ্য বিষয় “মহাকাশ প্রকৌশল” হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্মস্থল হতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমন করতে হয়। যার কিছু ছবি ফেইসবুকে আপলোড করা হয়। উক্ত ছবির ভুল ও মিথ্যা ক্যাপশন দিয়ে তাঁর পরিবারকে খটো করার চেষ্ঠা করছে।
জানা যায় ওসি সাইরুলদের স্বচ্ছল ও পৈত্রিক ভাবে ভিত্তশালী পরিবার। এখনো যৌথ পরিবারে বসবাস করেন তাঁরা। তিনি যথাযযথ আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাঁর সম্পদের বিবরণী আয়কর বিভাগে দাখিল করেন এবং যথাযথ ভাবে সরকারকে আয়কর পরিশোধ করেন। কিন্তু ওই চক্র পত্রিকায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে বছরে মাত্র আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন।ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরী বা অন্য কোন জায়গায় তাঁর নিজস্ব ফ্ল্যাট নেই। কোন গাড়িও নেই। তিনি বোয়ালখালী যোগদান করে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে থানা পরিচালনা করে আসছেন। যার ফলশ্রুতিতে বোয়ালখালী থানার সার্বিক আইন শৃংখলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক।