বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের সাবরুল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাগর তালুকদার (৩০) এবং তার সহযোগী সপন মিয়াকে (২৮) কুপিয়ে হত্যা করেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। একই সময় মুক্তার হোসেন (২৮) নামে আরেক সহযোগীর একটি হাত কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থল থেকে কাটা হাত উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত আটটার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের ছোট মণ্ডলপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহত সাগর আশেকপুর ইউনিয়নের হাটখোলা পাড়া গ্রামের গোলাম তালুকদারে ছেলে। স্বপন মিয়া একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। নিহত সাগরের নামে হত্যাসহ ১৭টিরও অধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার।
স্থানীয়রা জানান, রোববার সন্ধ্যার পর সাগর, স্বপন ও মুক্তার একটি মোটরসাইকেলযোগে গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা ছোট মণ্ডলপাড়া গ্রামের রাস্তায় পৌঁছালে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাদেরকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে গ্রামের রাস্তায় ডোবার পাশে সাগরের লাশ এবং গফুরের বাড়ির উঠানে স্বপনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসী।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। থানা পুলিশ জানায়, সাগর তালুকদার ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে। ২৫/৩০জন সদস্য নিয়ে গঠন করে সন্ত্রাসী বাহিনী। যা সাগর বাহিনী নামে পরিচিতি লাভ করে শাজাহানপুরে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান শাহীনের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত সাগরের নামে থানায় ৩টি হত্যাসহ ১৭টিরও বেশি মামলা রয়েছে।
সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে আসেন সাগর তালুকদার। আওয়ামী সরকারের পতনের পরও তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেমে ছিল না। এলাকায় সাগর বাহিনী আগের মতোই চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলো বলেও জানান স্থানীয়রা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, নিহত সাগর এই এলাকায় পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী।
যেহেতু সাগরের নামে একাধিক মামলা ছিল তাই পুলিশ ধারণা করছে পূর্ব শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা সাগর ও তার সহযোগী স্বপনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।