ভোলার করোনা মোকাবেলায় সোচ্চার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডিএফআই ও চিলেকোঠা

লেখক: সাব এডিটর
প্রকাশ: ৬ years ago

সোহেল মাহমুদঃ কোভিড-১৯ পৃথিবীতে করে তুলেছে টালমাটাল, পৃথিবীকে পরিনত করেছে মৃত্যুপুরিতে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ৩২ লাখ মানুষ আক্রান্ত ও মারা গেছেন প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজারের মত মানুষ। প্রতিটি দেশ তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়াবলি একপাশে রেখে করোনা ভাইরাস রোধে এক দেশকে অন্য দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করছে। মানুষকে সচেতন করে তুলছে। আমাদের দেশেও কয়েক হাজার মানুষ কোয়ারেন্টিনে আছেন, এব্ং আক্রান্ত প্রায় ৮ হামার মানুষ।

এই পরিস্থিতিতে ভোলা জেলাকে করোনামুক্ত রাখতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন অদম্য এক তরুন দল।এই মহাদুর্যোগে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনই কাজ করছে ভোলা জেলায়। তবে চোখে পরার মত রয়েছে, ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল (বিডিএফআই) ও চিলেকোঠা নামের দুটি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন।

দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে নিজ উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন এসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা। নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও তারা নিজের জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন দেশের মানুষের জন্য । বিডিএফআই এর একজন স্বেচ্ছাসেবী আশ্রাফুল আলম সোহাগ বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি বিডিএফআই এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আব্দুল মজিদ স্যারকে জিনি আমাকে তার সংগঠনে যুক্ত করে এই মহাদুর্যোগে মানুষের সেবায় কাজ করার জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি আরো ধন্যবাদ জানাচ্ছি বিবিএস ক্যাবলস এর সম্মানিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইন্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার সিআইপি কে। যিনি আমাদের ২২২ জনের একটি বিশার টিমকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামাদি দিয়ে সহায়তা করেছেন।

তিনি বলেন, আমি একজন পেশাদার শিক্ষক। আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরও আমি বাসায় বসে থাকিনি। নিজেকে নিযোজিত করেছি জাতির সেবায়। আমরা প্রতিনি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রত্যেক জায়গায় জিবানু নাশক এন্টি-সেপ্টিক স্প্রে করছি, বিকেল থেকে রাত্র ১০টা অবদি প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে গিয়ে হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে অসচেতন জনগোষ্ঠিকে সচেতন করছি, গ্রাম মহল্লায় আড্ডারত লোকজনদেরকে করোনার ভয়াবহতা বুজিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি। এই সকল সেবা মুলক কার্যক্রম করতেগিয়ে আমাদেরকে অনেক প্রতিকুলতার স্বিকার হতে হচ্ছে। কিন্তু বিডিএফিআই এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুজিদ স্যার থেকে সকল প্রতিকুলতারই সঠিক সমাধান পেয়ে নতুন ভাবে উজ্জিবিত হয়ে জনস্বার্থে, জনসেবায় মাঠে ময়দানে ছরিয়ে পরি। সাধারণ সম্পাদক এর সহযোগিতায় আমার আবার নতুন ভাবে উজ্জিবিত হয়ে কাজ শুরু করি। যত দিন করোনার প্রার্দুভাব থাকবে এবং বিডিএফআই আমাদের পাশে থাকবে আমরাও ততদিন জনসেবায় নিযোজিত থাকবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিডিএফআই এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বলেন, ভোলা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল (বিডিএফআই)এটি রাষ্টের নিবন্ধিতি একটি জনসেবামুলক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এটি ভোলা বাসির সেবার জন্যই প্রতিষ্ঠিত। বিডিএফআই এর রয়েছে আনেক অর্জন। ঢাকা ভোলা দ্বিবা সার্ভিস এটি বিডিএফআই এর চেস্টার ফসল। বিশেষ করে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সারা বিশ্ব যখন নুজ্ঝমান সেখানে সারাদেশে বিশেষ করে ভোলা জেলায় বিডিএফআই এর কার্যক্রম ইতিহাসে স্বার্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। বিডিএফআই’ই এক মাত্র সামাজিক সংগঠন যারা রুট লেভেলে স্বেচ্ছাসেবী কাজকরার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামাদি দিয়েছে ঠিক করোনা মোকাবেলায় সম্মূখ যোদ্ধা, ডাক্তার, নার্স, প্রাশাষন ও সাংবাদিকদেরও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসরঞ্জামাদি সহায়তা দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ভোলায় যেভাবে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি ঠিক সেই ভাবে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের ক্ষুদা নিবারনের জন্যও ক্ষুদার্ত মানুষের দুয়ারে দুয়ারে দাড়িয়েছি।আমাদের এসকল কার্যক্রম বাস্তাবায়ন করছেন ভোলা জেলার ২২২ স্বেচ্ছাসেবীর সুসংগঠিত ২৪ টিম। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি বিডিএফআই এর সকল স্বেচ্ছাসেবী সদস্যদের। যারা এই বন্ধের মধ্যেও জীবনের ঝুকি নিয়ে জনসেবায় নিয়োজিত রয়েছে। আমি আন্তরিকতার সাথে ধন্যবাদ জানাচ্ছি বিবিএস ক্যাবলস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইন্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার সিআইপি কে। যিনি আমাদের এই বিশাল কর্মযগ্যে অর্থ সহ সকল সহযোগিতা দিয়ে আমাদের পাশে এসে দাড়িয়েছেন। যার সহায়তা না পেলে হয়তো এসকল কার্যক্রম বাস্তাবায়ন করা আমাদের জন্য দূর্বিসহ হয়ে যেত।

চেলেকোঠা নামের আরো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভোলা জেলায় কোভিড ১৯ এর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কাজ করে যাচ্ছে। সাধারণ নাগরিক হয়েও দেশের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে চলেছে সাব্বির মুন্না ও চিলেকোঠার সদস্যরা। যুবকদের উদ্বুদ্ধ করে জেলায় মানুষের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে চলছে চিলেকোঠা।

টিমের সদস্যদের নিয়ে ভোলা জেলায় বহিরাগতদের অবৈধ অনুপ্রবেশে বাধা দিচ্ছে তারা। এ ছাড়াও কাচা বাজারে ও জনসমাগমে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরন, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ডরাব দিয়ে স্যানিটাইজেশন, রিকশা বা মোটরবাইকে একজনের বেশি না যাওয়ার প্রতি সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সাব্বির মুন্না বলেন, এই যুদ্ধ আমাদের, সবাইকে একসাথে মিলে দেশকে করোনামুক্ত করতে হবে। প্রকৃত বীর সেই যে দেশের বিপদে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারে, এই যুদ্ধে আমাদের জিততেই হবে। এই তরুণের প্রত্যাশা দেশের প্রত্যেক জেলায় প্রত্যেক এলাকায় শান্তিকামী যুবকেরা নিজের এলাকার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে ও অসহায় মানুষের মাঝে মানবতার হাত বাড়িয়ে মানুষের প্রয়োজনে মানুষ এটাইতো আমাদের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। জাতির এই দুঃসময়ে সরকার ও প্রশাসনের পাশাপাশি সাব্বির মুন্নার মতো সচেতন তরুণেরা এগিয়ে আসবে নিজের জেলা বা এলাকাকে সুরক্ষার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এটাইতো কাম্য। এমন ছোট ছোট প্রচেষ্টায় একত্রে আমরা রুখে দিবো যে কোন জরা ব্যধি।

সংবাদটি শেয়ার করুন...