ভোলা জেলা প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম উপজেলা সদরে তার বাসভবনের সামনে আজ দুপুরে একটি সমাবেশ ডেকেছেন। সমাবেশ ঠেকাতে গতকাল বিকেল থেকে উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে সভা করেছে আওয়ামী লীগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোলা ৪ আসন, চরফ্যাশন ও মনপুরার সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের নির্দেশে প্রত্যেকটি ইউনিয়নের রাস্তার মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।
জরুরি প্রয়োজনেও কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। শুধুমাত্র সরকারি চাকরিজীবী, প্রাণ-আরএফএলের মতো বড় কোম্পানিগুলোর আইডি কার্ডধারী বিপণন কর্মী এবং এনজিও কর্মীদের তল্লাশি চৌকি পাড় হতে দেয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা যাতে কোন অবস্থাতে সমাবেশে যোগ দিতে না পারে সেজন্য গতকাল রাতে সভা করে মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চৌকি বসানোর ঘোষণা দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা। ভোর ছয়টা থেকে মোড়ে মোড়ে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয় তারা। আওয়ামী লীগ করেন না এমন ব্যক্তিরা প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পর্যন্ত বাজারে যেতে পারছেন না। চরফ্যাশন বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান তল্লাশি চৌকির কারণে তাদের কর্মচারীরা দোকানে আসতে পারেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানা রোডের একজন দোকানী জানান, আইডি কার্ড না থাকায় তার দুজন কর্মচারী দোকানে আসতে পারেনি, তাই একা একাই দোকান সামলাতে হচ্ছে তাকে।
চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের হামিদপুর এলাকায় বসবাস করেন রাকিব( ছদ্মনাম)। পরিবারের জন্য কিছু কেনাকাটা ও মায়ের ঔষধ কিনতে তাকে চরফ্যাশন বাজারে যেতে হবে। সকাল আটটার সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখেন রাস্তার মোড়ে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা। অবস্থানকারীরা সবাই পরিচিত হওয়ায় এবং রাকিব বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত না থাকার সুবাদে তল্লাশি চৌকি পাড় হতে পেরেছেন তিনি। কিন্তু একটু সামনে আসতেই পরের মোড় খাসপুকুর পাড়ে আটকে দেয়া হয়। তাকে বলা হয় এমপির নির্দেশ রয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ছাড়া কেউ বাজারে যেতে পারবে না। তাই বাধ্য হয়ে ফেরত আসেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরমাদ্রাজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল জানান, সংসদ সদস্যের নির্দেশে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক জমাদার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মিয়ার নেতৃত্বে ইউনিয়নের প্রত্যেকটি মোড়ে মোড়ে এ তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা যাতে সমাবেশে অংশ নিতে না পারে তাই তারা অবস্থান নিয়েছেন। সমাবেশ গণতান্ত্রিক অধিকার কিন্তু কেন বাধা দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার নেতা জ্যাকব ভাইয়ের নির্দেশ- বিএনপি'র কোন লোক ঘর থেকে বের হতে পারবে না। এর বাইরে আমি কিছু বলতে পারবোনা। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে একই ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করছে।