ভোলায় মেম্বার হত্যা: সন্দেহ ত্রিমুখি, আটক ১

লেখক: সাব এডিটর
প্রকাশ: ৬ years ago

এম রহমান রুবেল: ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের সদস্য রফিকুল ইসলাম ওরফে হাকিম মিঝির হত্যার সন্দেহ ত্রিমুখি বলে ধারনা করছেন তার পরিবার। এদিকে তার কাছের লোকজন জড়িত থাকার আশংকা রয়েছে বেশি। জানা গেছে, ইব্রাহিম মাঝি, নাজিমউদ্দিন ও ফরিদ মেম্বার এই হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। নিহতের জানাযায় ফরিদ হাওলাদার গেলেও অন্য দুই ব্যক্তি ছিলেন পলাতক। জানাযা শেষ করে ফরিদ হাওলাদারও ঘাঁ ডাকা দিয়েছেন।

সূত্র মতে, ঈদের আগের দিবাগত রাত দুই টার সময় হেতনার হাট বাজার সংলগ্ন ব্রিজের উপর এই ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আ’লীগের সহ সভাপতি হাকিম মিজিকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান তার পরিবার ও স্থানীয়রা। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ঈদের আগের রাত ইউপি সদস্যর বাসার সামনে দোকানের মালিক আমানউল্লাহ ও ক্রেতা কালাম এর মাঝে টাকা দেনা পাওনা নিয়ে এক পর্যায় কথা কাটা কাটি হয়। কথা কাটা কাটিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্য ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। পরে দোকান মালিক আমানউল্লাহ কে পাশাতে গিয়ে দেনাদার কালাম দোকানের ভিতর মাদক রেখে পুলিশ কে ফোন করলে পুলিশ এসে তাদের দুইজনকে আটক করে ভোলা ডিবি অফিসে নিয়ে আসে। ভোলার ডিবির ওসি শহিদুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না পেয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান। দোকান মালিক ও ক্রেতাকে ছাড়ানোর উদ্দেশ্য স্থানীয় ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আ’লীগ সহ সভাপতি হাকিম মিজি তাদের আত্নীয়দের অনুরোধে তাদের কে ছাড়ানোর জন্য ভোলার ডিবি অফিসে রাত ১০.৩০ মিনিটের সময় এসে রাত ১টার সময় তাদের কে নিজ জামিনে ছাড়িয়ে নেন হাকিম।
তাদের দুই জনকে ছাড়ানোর পর থেকে ক্রেতা কালাম কে আরো খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ক্রেতা কালাম কে খুজে পাওয়া না গেলে তাকে ফোন করার পর তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ইউপি সদস্য হাকিম মিঝি তাকে খোজ করতে গিয়ে বাসার কাছা কাছি ফিরতে রাত আনুমানিক ২.৩০ মিনিট লেগেছিল কিন্তু তখন হাকিম মিঝি হেতনার হাট বাজারে এসে এক দোকানদার এর কাছে ৫০০ টাকার একটি নোট ভাঙ্গতি করে রিক্সা ভাড়া দেন। রিক্সা ভাড়া দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই হেতনারহাট ব্রিজের উপর জবাই হলো ইউপি সসদ্য হাকিম।
এমন নৃশংস ঘটনার তথ্য তার পরিবার ও স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলে বেরিয়ে আসে নানা মুখি তথ্য উপাত্ত যা আসামি ধরতে বা আইনের আওতায় আনতে বেশি দূর যাওয়া লাগে না বলে প্রতিবেদক জানান পরিবার বর্গ ও স্থানীয়রা।
তারা জানান, আমরা তিন দিকের লোক জনকেই সন্দেহ করতেছি পাশের বাসার সেলিম এর সাথে দীর্ঘদিন নাবিলা হত্যা ও জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মনোমালিনো চলে আসতেছিল এবং দ্বিতীয় তো এলাকায় এই ইউপি সদস্যর বেশি জনপ্রিয়তা থাকায় তার শত্রু হিসেবে আগামি মেম্বার পদপ্রার্থী হিসেবে নাজিম এবং ফরিদ হাওলাদর এই হত্যার সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে জানান ইউপি সদস্য হাকিম এর ফুফাতো ভাই শরিফ।
তিনি জানান ঈদের আগের দিন হাকিম মিজি ও ফরিদ হাওলাদার, ইয়াবা ব্যবসায়ী কালাম এর সাথে মিটিং হয় তিনি বলেন সেই মিটিং কি কথা হয়েছিল সেটা বলেন হাকিম মিজি। মিটিং থেকে বাসায় আসার পর তার চোখু ছিল রক্ত মাখা লাল ছিল বলেন ইউপি সদস্যর এই স্বজন।
সর্ব শেষ নিঃ সন্দেহের স্পস্ট তীর এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ী ৪নং ওয়ার্ডের জামাই বাবু ওরপে ইয়াবা বাবু কালাম বাবুর দিকেই।
জানা যায়, এই কালাম বাবুর বাড়ি ভোলার পশ্চিম ইলিশা পাঙ্গাসিয়া বাজারের কাছে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভেদুরিয়া ইয়াবা ব্যবসা করে আসছিল। কালাম এর নামে ঢাকায় ৩ টি মাদক মামলা সহ ভোলা থানায় ও মাদক মামলা আছে বলে জানান স্থানীয় ও ইউপি সদস্যর স্বজনেরা।
স্থানীয়রা নাম প্রকাশে অনিচ্ছিক জানান, কালাম দীর্ঘদিন ইয়াবা গাজা সহ অনেক খারাপ কাজের সাথে জড়িত তাই বর্তমান ইউপি সদস্য তাকে বাধা দিত, সে কোন বাধায় মানতো না তাই তার সাথে দীর্ঘদিন রেষারেষি ছিল, তার এই রেষারেষি জের ধরে গত মঙ্গলবার ইউপি সদস্যর বাসার সামনে দোকান মালিক আমানউল্লাহ ইয়াবা ব্যবসায়ী ক্রেতা কালাম এর কাছে পাওনা টাকা খুজলে টাকা দিতে অপরাগতা স্বীকার করে উল্টো দোকানের ভিতরে মাদক রেখে পুলিশ কে ফোন করে পুলিশে ধরিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী কালাম দোকান মালিক আমান উল্লাহকে।
সেই দিন রাতে দোকান মালিক আমান উল্লাহ কে ছাড়াতে ডিবি অফিসে ইউপি সদস্য হাকিম গেলে সেখান থেকে বাড়ির ফিরার পথে অর্থাৎ হেতনার হাট ব্রিজ মেম্বার এর বাসার সামনে ওৎ পেতে থাকা মাদক ব্যবসায়ী কালাম সহ তার সহযোগীদের হাতে বলি হোন জনপ্রিয় মেম্বার হাকিম মিঝি। এই ব্যাপারে ভোলার ডিবি ওসি সহিদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান আমরা একজন কে আটক করেছি বাকিদের ধরতে আমাদের ফোর্স মাঠে কাজ করছে অচিরেই তাদেরকে ধরে এনে আইনের কাছে সোর্পদ করা হবে ইনশাল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, আইনের কাছে সবাই সমান। অপরাধি যত বড় শক্তিশালীই হোক না কেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন...

  • মেম্বার খুন