জিয়াউর রহমান : দেশের উন্নয়নে সরকার যখন এগিয়ে চলেছে ঠিক তখনই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী রাজাকার আল-বদর ও তাদের পরিবার দেশে একটি কুচক্রী মহলের সাথে যোগসাজশে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। কিন্তু এদেশের মানুষ ও সরকার তাদেরকে আইনের মাধ্যমেই প্রতিহত করছে, দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
রাজাকারদের তালিকা নিয়ে যখন দেশব্যাপী আলোড়ন তখন কিছু কিছু প্রতারক ও দালাল রাজাকার এবং তাদের পরিবার সু-কৌশলে একটি মহল ও কোন কোন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সু-সম্পর্ক তৈরী করে প্রতারণার মাধ্যমে সমাজে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে রাজাকার ও রাজাকার পরিবারের সন্তানরা অসহায় ও দরিদ্র গ্রামবাসীকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নানারকম পায়তারা ও নীল নকশার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাস রংপুর এবং কুড়িগ্রাম মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিলাদী ও বইপত্রে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম জেলায় মুক্তিযুদ্ধের সময় থানা পিচ কমিটির নের্তৃত্বে পাকহানাদার বাহিনী অত্র এলাকায় বাঙ্গালীদের উপর ব্যাপক হত্যাকান্ড চালায়। রাজাকার ও আলবদররা তাদের নির্দেশনায় বাঙ্গালীদের বাড়িঘরে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ করে এবং খুন ধর্ষনসহ নানা অপরাধের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা ছিল।
ভুরুঙ্গামারী থানার প্রিন্সিপাল কমর উদ্দিন, আহমদ আলী সরকার, মাওলানা আব্দুল লতিফ প্রমুখ পাক আর্মির ঘণিষ্ঠ সহচর এবং তাদের দিকনির্দেশনায় পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক যুদ্ধ ও গণহত্যা সংগঠিত করে।
তৎকালীন নাগেশ্বরী থানার পিচ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মসীহ উদ্দিন আনসারী এবং সহ-সভাপতি উমর আলী আহমেদ নাগেশ^রী থানা পিচ কমিটি এবং পাক আর্মির অন্যতম ঘটিষ্ঠ সহচর পিচ কমিটির সদস্য শাহাজাহান আলী বেপারীসহ অন্যান্য ঘনিষ্ঠ সহচর কুটিপয়রাডাঙ্গা গ্রামের অন্যতম রাজাকার আবু বক্কর সিদ্দিক, আব্দুল লতিফ, ফজলুল হক বেপারী, সোলেমান আলী বেপারী, আসমত উল্লাহ সহ অনেকেই নাগেশ্বরী থানা এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীকে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করে অত্র থানা এলাকায় তাদের নির্দেশনায় রাজাকার ও আলবদররা বাঙ্গালীদের ঘরে ব্যাপক লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ করে।
মহান স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও গ্রামে গ্রামে এখনও জীবিত রাজাকার এবং রাজাকারদের সন্তানরা নিরীহ গ্রামবাসীকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে যাচ্ছে এবং গ্রামসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে। যার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রতারক ও দালাল রাজাকারপুত্র হাফিজুর রহমান বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান বকুল, রাজাকার আবু বক্কর সিদ্দিক, রাজাকার আব্দুল লতিফ, রাজাকারপুত্র শমসের আলী, মতিয়ার রহমান খোকা, আফসার আলী, আব্দুল হাকিম, মোঃ সাজু সহ এই চক্রটি নাগেশ্বরী থানা এলাকায় কোন কোন মুক্তিযোদ্ধাকে ব্যবহার করে তাদের আড়ালে নানা রকম অপকর্ম করে যাচ্ছে।
উক্ত দালাল ও রাজাকার চক্রটি নাগেশ্বরী এলাকার কুটিপয়ড়াডাঙ্গা গ্রামের প্রতারক রুহুল আমিন, আপেল, ফারুক ও আবুল হাসেমদের সাথে যোগসাজশে অসহায় গ্রামবাসীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। গ্রামের মানুষের মুখে মুখে এখন দালাল বাবু ও জয়নালের অপকর্ম এবং অত্যাচারের কাহিনী শোনা যায়। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রতারক হাফিজুর রহমান বাবু, আপেল, ফারুক ও জয়নাল চক্রটি জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রামবাসীর স্বাক্ষর জাল করে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন জনের সাক্ষর জাল করে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগসহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে এবং নানাভাবে নিরীহ গ্রামবাসীসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে হয়রানী করছে।
এই বিষয়ে গ্রামবাসী সকলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন।
তদন্ত চিত্র/জিয়া