মেহেদীকে ঠেকাতে একাট্টা সিন্ডিকেট, তারেকের নির্দেশনা উপেক্ষিত

লেখক: সাব এডিটর
প্রকাশ: ৬ years ago

মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদারঃ দীর্ঘ ২৭ বছর পর কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে খ্যাত সংগঠনটির ষষ্ঠ কাউন্সিল ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র বাছাই সম্পন্ন করে বৈধ প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে বাছাই কমিটি।

তবে বাছাই কমিটির স্বচ্ছতা নিয়ে তুলছেন সংগঠনের পদ প্রত্যাশী এবং তাদের অনুসারীরা। তাদের দলের, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নিজ বলয়ের লোকদের পদায়ণ করতে মরিয়া সিন্ডিকেটের সসদ্যরা। ফলে নানা অজুহাতে বাদ দেয়া হয়েছে মনোয়নয়ন প্রত্যাশী অনেককেই। আপিলে নিস্পত্তির সুযোগ থাকলেও নানাভাবে আপিল কমিটিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ।

ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দিতার জন্য আবেদন করা ৭৬ জন প্রার্থীর মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৩১ জনকে বাদ দেয়া হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বৈধ প্রার্থী হয়েছেন ৪৫ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদে বৈধ প্রার্থী ১৫ এবং সাধারণ সম্প্রাদক পদে ৩০ জনকে বৈধ প্রার্থী বলে তালিকা প্রকাশ করা হয়।

বিবাহিত এবং ছাত্রত্ব না কারণে অনেকেই বাদ পড়েছেন বলে বাছাই কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। বাদ পড়াদের মধ্যে আল মেহেদী তালুকদার, কেএম সাখাওয়াত হোসেনসহ ১৫জন আপিল করেছেন। তাদেরকে আপিল আবেদন গ্রহণ করে শুনানির জন্য ডাকা হয়।

জানা গেছে, দলীয় হাইকমান্ড নির্বাচন পরিচালনা, যাচাই বাছাই ও আপিল কমিটি নামে তিনটি করে থাকলেও কমিটির বাইরের লোকদের হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এই নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন বৈধ প্রার্থীর তালিকা থেকে বাদ পড়া নেতারা। তাদের দাবি, আপিল কমিটিতে যাদের দায়িত্ব পালন করার কথা শুধু তারাই করবেন এখানে দলের অন্য নেতারা হস্তক্ষেপ করছেন। এটা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। এর জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ছাত্রনেতারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাছাই কমিটির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন বলেন, আমরা একটা সুষ্ঠু ও সুন্দর কাউন্সিলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশনা মেনে স্বচ্ছভাবে আমরা প্রার্থী বাছাই কাজ সম্পন্ন করেছি। কারো অভিযোগ থাকলে তা আপিলে নিস্পত্তি করা হবে।

আপিল কমিটিতি রয়েছেন- বিএনপির ভাইস চেয়াররম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান। আমান বিদেশে থাকার অন্য দুই সদস্য আপিল নিস্পত্তি নিয়ে কাজ করছেন বলে জানা গেছে।

বৈধ প্রার্থী ঘোষণার পর বুধবার আপিলের জন্য নির্ধারণ ছিল। বৃহস্পতিবার আপিল শুনানি করা হয়। শুনানির সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতার বা্ইরেও শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সুলতাল সালাউদ্দিন টুকু, আকরামুল হাসান সহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সভাপতি প্রার্থী আল মেহেদী তালুকদার বাদ পড়া প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, আমাকে বিবাহিত বলে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এটা ষড়যন্ত্র। যে মেয়ের নাম ও ঠিকানা দেয়া হয়েছে, আমি সেই ঠিকানা নিয়ে খোঁজ নিয়েছি কিন্তু কোনো অস্তিত্ব পাইনি। আমি আপিল কমিটিতে এর জবাব দিয়েছি। আশা করি তার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি যাতে প্রার্থী হতে না পারি। আমি দেশনায়ক তারেক রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

অপর আরেক প্রার্থী কেএম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমার ছাত্রত্বের সব কাগজ না থাকায় আমাকে বাদ দেয়া হয়েছিল। আমি আপিলে সব কাগজ জমা দিয়েছি। আশা করি আমি প্রার্থীতা ফিরে পাব।

মেহেদী তালুকদার আরও জানান, আপিল বোর্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন জন নেতার বাইরে অনেকে নেতা উপস্থিত ছিলেন। এটা কোনো ভাবে কাম্য নয়।

জানতে চাইলে আপিল কমিটির প্রধান শামসুজ্জামান দুদু এ প্রসঙ্গে এখনই কিছু বলতে নারাজ। তবে দলের এক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ছাত্রদলের কাউন্সিল বন্ধ করতে বড় একটি অংশ কাজ করছে। এই খবর তারেক রহমানের কাছে আছে। ফলে গত রাতে তারেক রহমান দায়িত্বপ্রাপ্তদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন যে কোনো মূল্যে ছাত্রদলের একটি সফল কাউন্সিল করতে হবে।

উল্লেখ্য, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হবে। প্রার্থিতা যাচাই-বাছাই শেষে ২ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। নির্বাচনে সারা দেশে সংগঠনের ১১৭টি ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোটার।

সংবাদটি শেয়ার করুন...