
যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে এখন থেকে রাশিয়ার গভীরে হামলা চালাতে পারবে ইউক্রেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে এই অনুমতি দিয়েছে। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এ যুদ্ধে এর আগে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভেতরে হামলা চালাতে দেননি জো বাইডেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই অনুমতি চেয়ে আসছিলেন। যেন নিজেদের সীমান্তের অনেক দূর থেকেও রুশ সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে তারা হামলা চালাতে পারেন।
মার্কিন দুই কর্মকর্তা ও একটি সূত্রের বরাতে রোববার (১৭ নভেম্বর) রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সূত্র বলেছে, ইউক্রেন সামনের দিনগুলোতে অস্ত্র ব্যবহার করে দূরপাল্লার হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। তবে অভিযান-সংক্রান্ত নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে তারা এ হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বিবিসি জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরেই ‘এটিএসিএমএস’ নামের ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসেডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। একই সঙ্গে তিনি রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোরও অনুমতি চাচ্ছিলেন। রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার ব্যাপারে রোববার জেলেনস্কি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযান ঘোষণা জানিয়ে শুরু করা হয় না। যখন প্রয়োজন হয়, তখন ক্ষেপণাস্ত্র নিজে থেকেই কথা বলে ওঠে।’
এ ধরনের পদক্ষেপের ব্যাপারে পশ্চিমা দেশগুলোকে বারবার সতর্ক করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি একাধিকবার বলেছেন, ‘রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালানোর অর্থ হচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটো সামরিক জোটের সরাসরি জড়িয়ে পড়া।’ অন্তত তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া এটিএসিএমএস মিসাইলগুলো ১৯০ মাইল (৩০৬ কিলোমিটার) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, দূরপাল্লার অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরের হামলা চালানোর অনুমতি ইউক্রেন যুদ্ধের গতিপথ বদলে দিতে পারে।
আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাত্র দুই মাস আগে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নিল বাইডেন প্রশাসন।
তবে ক্ষমতা নেয়ার পর ট্রাম্প বাইডেনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। ইউক্রেনকে যে পরিমাণে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেয়া হচ্ছিল, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে সেটার সমালোচনা করে আসছিলেন। তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর দ্রুত যুদ্ধ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তা কীভাবে করবেন, সে ব্যাপারে ট্রাম্প বিস্তারিত কিছু জানাননি।
