সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সংস্কারের মধ্য দিয়ে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন দেখার যে প্রত্যাশার কথা বলেছেন, তাতে আশা দেখতে পাচ্ছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, যদিও ওই সময়সীমা তার নিজের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি দীর্ঘ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কার্যকর কোন সংস্কার বা নির্বাচন করা অসম্ভব। নির্বাচন আয়োজনের সময় আরো আগেই প্রত্যাশিত ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
এ সময় জয় দাবি করেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া প্রকৃত সংস্কার এবং (অংশগ্রহণমূলক) নির্বাচন অসম্ভব, তাই এ প্রক্রিয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলকে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ওই সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের নতুন এ অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেন জয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৮ মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনে অর্ন্তবর্তী সরকারকে সমর্থনের যে কথা বলেছেন, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সাক্ষাৎকারে ১৮ মাসের সময়সীমাকে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক দেরি বলে উল্লেখ করলেও তিনি এতেই খুশি বলে জানান। তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে, তার দল (আওয়ামী লীগ) ছাড়া প্রকৃত সংস্কার এবং নির্বাচন অসম্ভব।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ বাহিনীতে অচলাবস্থা তৈরি হলে সেনাবাহিনী স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ শুরু করে। সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, তিনি প্রতি সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপের জন্য দেখা করেন। রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আগে বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে এই কাজ শেষ করার জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করেনি। ইউনূসের কার্যালয় জানিয়েছে, সরকারের গঠন করা ছয়টি সংস্কার প্যানেলের সুপারিশ পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সবাই সংস্কারের বিষয়ে একমত পোষণ করলে এবং ভোটার তালিকা তৈরি হলে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমাদের অন্তত এখন একটি প্রত্যাশিত সময়সীমা (নির্বাচন আয়োজনে) আছে জেনে আমি খুশি। তবে আমরা এই নাটক আগেও দেখেছি, যেখানে একটি অসাংবিধানিক-অনির্বাচিত সরকার সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। হাসিনার সাবেক এই উপদেষ্টা, তিনি নিজে অথবা অন্তর্বর্তী সরকার কেউই কারও সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে যোগাযোগ করেনি। সবচেয়ে পুরনো ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে (আওয়ামী লীগ) বাদ দিয়ে বৈধ সংস্কার ও নির্বাচন করা অসম্ভব।
নির্বাচনী সংস্কার প্যানেলের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচন বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে কি না সেটা সরকারের ওপর নির্ভর করছে। হাসিনা কবে দেশে ফিরতে পারেন জানতে চাইলে জয় বলেন, এটি তার (হাসিনার) ওপর নির্ভর করছে। এই মুহূর্তে আমি আমার দলের লোকদের নিরাপদ রাখতে চাই, তাই আমি ইউনূস সরকারের হাতে নেতা-কর্মীদের ওপর চালানো নৃশংসতা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বাড়াতে চাই।