নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ পেশাগত দায়িত্ব পালনে সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন দৈনিক অন্য দিগন্ত পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ রাশেদুল কবির অনু। শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকাল ৫টায় আদমজী-ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে পুরোনো থানার সামনে সন্ত্রাসী হামলার এ ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর জখম হন সংবাদকর্মী অনু। এঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমুলপাড়া এলাকার শামসুর রহমানের ছেলে সন্ত্রাসী আব্দুল্লাহ আল মামুন অবৈধ ভাবে রাসায়নিক কেমিক্যালের ব্যবসা করে আসছিল।
সন্ত্রাসী হামলার শিকার আহত সাংবাদিক রাশেদুল কবির অনু জানান, সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ব্লু রঙের ড্রামভর্তী কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ বোঝাই একটি পিকাআপ ভ্যানের (ঢাকা মেট্র-ন ১৫-৩৪৪৬) ধাক্কায় একটি রিক্সা দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার এক পাশে পড়ে আছে। ড্রাইভারের সাথে কথা বলার সময় হঠাৎ আক্রমণাত্বক ভঙ্গিতে হাতে লোহার পাইপ নিয়ে একজন তেড়ে আসে এবং হামলা করে। এতে তার পিঠে ও ডান হাতে গুরুতর জখম হয়। ফোন করে ঘটনাটি থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তাছাড়া পিকাপের ধাক্কায় আহত রিক্সা চালককে ঘটনাস্থল থেকে তাৎক্ষণিক সরিয়ে ফেলা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হামলাকারী ঐ ব্যক্তির নাম আব্দুল্লা আল মামুন। সে নাহার এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের নামে আদমজী ইপিজেডে স্থানীয় ক্যাডার বাহিনী নিয়ে দলীয় পরিচয়ে দাপটের সাথে ঠিকাদারি ব্যবসা করছে। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে পূর্বে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় চেক জালিয়াতি ও নারী কেলেঙ্কারীর মামলা রয়েছে। এসব মামলায় সে জেলও খেটেছে ।

তিনি আরো জানান, কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থের বিষয়ে পিকআপের ড্রাইভারের কাছে জানতে চাইলে পিকআপ থেকে নেমে এসে সন্ত্রাসী আব্দুল্লাহ মামুন ধমক দিয়ে ড্রাইভারকে পিকআপ নিয়ে চলে যেতে বলে। তার এমন আচরণে পিকআপে থাকা ড্রামভর্তি কেমিক্যাল নিয়ে সন্দেহ হলে পিকআপের ছবি তোলায় আমার হাত থেকে প্রথমে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে পাশের একটি কার ওয়ার্ক শপ থেকে লোহার পাইপ এনে পেছন থেকে হঠাৎ অতর্কিত হামলা চালায়।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কেমিক্যালের ব্যাপারে জানতে চাওয়ায় কোন কিছু না বলে তাড়াহুড়ো করে ড্রাইভারকে গাড়িসহ সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পিকআপে থাকা ড্রাম ভর্তি ঐ কেমিক্যাল নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। আদমজী ইপিজেড ছাড়া আশে পাশে কোথাও কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় এমন কোন কারখানা বা স্থাপনা না থাকা সত্তেও পিকআপটি এসও এলাকায় নিয়ে লুকিয়ে ফেলা হয়। তবে সেগুলো কোথায় নেওয়া হয়েছে তা আর জানা যায়নি। তাহলে কী সেগুলো ইপিজেড এলাকা থেকে অবৈধভাবে বের করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ রয়ে যায়। পরে আশেপাশের লোকজন এসে আমাকে তাঁর হাত থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় আলিফ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে কথা হলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর শাহিন শাহ পারভেজ জানান, সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।