এম.জাফরান হারুনঃ পটুয়াখালীর বাউফলের কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সেই চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার (৬০) কে তালাক দিয়েছে সেই প্রেমিকা কিশোরী নসিমন (১৫)। এবং বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালানো সেই প্রেমিক রমজানকে বিয়ে করার খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, রোববার (২৭ জুন) সকালে প্রেমিক রমজানের মামা বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে (৬০) তালাক দেয় ওই নসিমন। নসিমন বর্তমানে কুম্ভখালী গ্রামে তার মামা শ্বশুর বাড়িতেই অবস্থান করছেন তিনি।
এদিকে, চেয়ারম্যানকে তালাক দেয়ার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, বিচারপ্রার্থী কিশোরীকে বিয়ে করে চেয়ারম্যান বিপাকে পড়েছেন। সামাজিক ও পারিবারিক চাপসহ আইনী জটিলতা এড়াতে চেয়ারম্যান কৌশলে কিশোরীর কাছ থেকে তালাকনামা রেখেছেন। অবশ্য কিশোরী নসিমন বলেছেন, রোববার ভোরে তার প্রেমিক রমজানের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। এখন তিনি শৃংখলমুক্ত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মে মাসে কনকদিয়া ইউনিয়নের চুনারপুল এলাকার নজরুল ইসলাম হাওলাদারের মেয়ে নসিমনের সঙ্গে নাজিরপুর ইউনিয়নের তাতেরকাঠি গ্রামের গার্মেন্টকর্মী সোহেলের বিয়ে হয়। ওই বিয়েতে সম্মতি ছিল না নসিমনের। তাছাড়া নসিমনের সঙ্গে তার গৃহশিক্ষক রমজানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন সোহেল, নসিমন ও রমজানের পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। গত শুক্রবার কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে মীমাংসার জন্য যান উভয় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে সোহেল ও নসিমনের বিয়ে বিচ্ছেদ করেন চেয়ারম্যান। শালিস বৈঠকে নসিমন রমজানের সঙ্গে সংসার করতে চায়। এ সময় চেয়ারম্যান নসিমনকে দেখে পছন্দ করেন। তিনি নসিমনের বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
এছাড়াও রমজান গরীব, তোমাকে খাওয়াবে কি? আমাকে বিয়ে করলে ভবিষ্যত ভাল হবে এসব কথা বলে নসিমনকে নানা প্রলোভন দেখান চেয়ারম্যান। নসিমনের সম্মতি নিয়ে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর কাজী ডেকে চেয়ারম্যান বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। চেয়ারম্যানের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে বিয়ে করেছেন। চেয়ারম্যানের অসম বিয়ের পর এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
চেয়ারম্যানের একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, বিয়ের পর সামাজিক ও পারিবারিকসহ নানা চাপে চেয়ারম্যান বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তারপরই তিনি বিয়ে ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। একদিন পরই শনিবার সন্ধ্যায় কাজী ডেকে নসিমনের কাছ থেকে তালাকনামা রাখেন তিনি।
এবিষয়ে চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, মেয়েটি তার প্রেমিকের কাছে ফিরে যেতে চায়। সে সুখে থাকতে চায়। আমি জোর করে কারও সঙ্গে সংসার করতে চাই না। বিয়ের পর আমার ঘরেই ছিল নসিমন।
এদিকে নসিমন বলেন, আমার সিদ্ধান্তেই চেয়ারম্যানকে বিয়ে করেছি। আবার আমিই তাকে তালাক দিয়েছি। আজ রমজানের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। আমার জন্য রমজান আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। সে হাসপাতাল থেকে ফিরে এসেছে। আমি এখন তাকে নিয়েই সংসার করতে চাই। আপনারা দোয়া করবেন।
কিশোরীকে বিয়ে করার অপরাধে চেয়ারম্যানের কোন শাস্তি হবে কি না? এমন প্রশ্নে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে, যদি বাল্যবিয়ের ঘটনা হয় তাহলে চেয়ারম্যানকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
‘অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি’
অবশেষে ঢাকায় হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির বৃষ্টি। টানা একমাস দাবদাহের......বিস্তারিত