TadantaChitra.Com | logo

১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রূপনগর থানা পুলিশের কাণ্ডঃ ইয়াবাসহ আসামী ধরে হয়ে গেল মাস্ক না পড়ার অপরাধ!

প্রকাশিত : জুলাই ২৫, ২০২১, ০৭:২৯

রূপনগর থানা পুলিশের কাণ্ডঃ ইয়াবাসহ আসামী ধরে হয়ে গেল মাস্ক না পড়ার অপরাধ!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রূপনগর থানা পুলিশ ১০ পিস ইয়াবাসহ আসামী ধরে ৬৫ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে মাস্ক না পড়ার অপরাধে অভিযোগে ডিএমপি এ্যাক্টে চালান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রায় অভিযোগ পাওয়া যায়, রূপনগর থানা পুলিশ পল্লবী এলাকা থেকে আসামী ধরে নিয়ে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে আসামী ছেড়ে দেয় অথবা ডিএমপি এ্যাক্টে কোর্টে প্রেরণ করে। যদি ডিএমপি এ্যাক্টে কোর্টে প্রেরণ করে, আসামী গ্রেফতারের জায়গা দেখায় রূপনগর এলাকায়।

ঘুষ নিয়ে সাথে সাথে ছেড়ে দিলে আসামী আবার অভিযোগ করতে পারে পুলিশের বিরুদ্ধে, এই কারণে সাধারণত ডিএমপি এ্যাক্টে কোর্টে প্রেরণ করে। সেক্ষেত্রে আসামী ১০০ থেকে ৫০০ টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেয়ে যায়। এমনই এক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে রূপনগর থানার এএসআই মুসলিমের বিরুদ্ধে।

গত ৩ জুলাই রাতে পল্লবী থানা এলাকাধীন ইসলামী ব্যাংক হসপিটালের পাশের গলি থেকে রূপনগর থানার এএসআই মুসলিম আটক করে সালাউদ্দিন ও রানাকে। এই বিষয়ে ভূক্তভূগীদের অভিযোগ, ৩ জুলাই দিনে ইসলামী ব্যাংক হসপিটালের পাশের গলিতে পুলিশের সোর্স মাদক ব্যবসায়ী অপুর সাথে তাদের কথা কাটা কাটি হয়। এই সময় ওই ব্যক্তি তাদের দেখে নেওয়ার হুমকী দেয়। যার প্রেক্ষিতে অপু রাতে পুলিশকে সাথে নিয়ে তাদের আটক করে। আটক করার সময় অপু লাল ক্যাপ ও সাদা জামা পরিহিত অবস্থায় ছিল। এছাড়াও লাল ও আরিফ নামে আরো দুই সোর্স চিল পুলিশের সাথে।

পরবর্তীতে থানায় নিয়ে সালাউদ্দিন ও রানাকে অকথ্য নির্যাতন করা হয়। এই সময় তাদের কাছে ৩ লাখ টাকা দাবী করা হয়। পরবর্তীতে তাদের পরিচিত শরীফের মাধ্যমে ৬৫ হাজার টাকা পাঠানো হয় ৪ জুলাই সকালে। শরীফ এবং তার সাথে অন্য এক ব্যক্তি এএসআই মুসলিমকে রূপনগর থানাধীন মিল্কভিটা মোড় এলাকায় টাকা দেয়।

টাকা দেওয়ার পর এএসআই মুসলিম জানায়, আজ দেরি হয়ে গেছে। আপনারা টাকা দিতে দেরী করে ফেলেছেন। আজ আর হবে না কাল সালাউদ্দিন ও রানাকে ডিএমপি করে দিব। পরবর্তীতে ৫ জুলাই সকালে আসামীকে ডিএমপি এ্যাক্টে কোর্টে প্রেরণ করে। এই সময় আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, আসামী মাস্ক না পরিধান না করার অপরাধ। কোর্ট ১০০ টাকা জরিমানা নিয়ে সালাউদ্দিন ও রানাকে মুক্তি দেয়। যদিও আসামীকে ২৪ ঘন্টার মাঝে কোর্টে প্রেরণ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও, রূপনগর থানা পুলিশ সেই বাধ্যবাধকতাও পূরণ করেনি।

এই বিষয়ে সালাউদ্দিন ও রানার অভিযোগ, তারা গরীব মানুষ। কারচুপির কাজ করে জীবন চালায়। তাদের উপর হওয়া নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সুদের উপর ৫০ হাজার টাকা নেয়। এছাড়া অন্য আত্নীয় স্বজন থেকে নেয় বাকী টাকা ধার হিসেবে।

ভুক্তভূগীরা জানান, তাদের পল্লবী এলাকা থেকে আটকের দৃশ্য পূরবী মার্কেট এবং মিডটাইনের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ছে। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ চাইলেই বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করতে পারে। এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক হসপিটালের একটি সিসিটিভি ফুটেজেও আটকের ঘটনা দূর থেকে দেখা যায়।

এছাড়াও আটক করার সময় সালাউদ্দিন ও রানার সাথে থাকা ৩টি মোবাইল সেই, রুপার চেইন, ব্রেসলেট, ২টি মানিব্যাগও ফেরত দিচ্ছে না এএসআই মুসলিম। দেই দিচ্ছি বলে দীর্ঘদিন ঘুরাচ্ছে।

এই বিষয়ে পুলিশের সোর্স ইব্রাহিম ওরফে লাল জানায়, আমি ১০ পিস ইয়াবা নেওয়ার জন্য সালাউদ্দিনকে কল করি। এই সময় ইসলামী ব্যাংকের পাশের ৮ নাম্বার লাইন এলাকায় ইয়াবা নেওয়ার সময় সোর্স অপু এসে ধরে ফেলে। অপু এই সময় মুসলিম স্যারকে ডাক দেয়। এই সময় আরো ২ জন পুলিশ, অপু, আরিফ ও আমি ছিলাম। আমাকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি।

এই বিষয়ে এই প্রতিবেদকের হাতে আসা এএসআই মুসলিমের সাথে হওয়া কথোপকথনের ২টি কল রেকর্ডে শুনা যায়, এএসআই মুসলিম বলছে রানা সালাউদ্দিনের জিনিস গুলো ফিরত দিবে। সব গুলো তার কাছে নেই। যোগার করে ফেরত দিবে। অন্যদিকে ঘুষ হিসেবে নেওয়ার টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বলে, সামনা সামনি এসে টাকার বিষয়টি দেখা হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রূপনগর থানার ওসি আরিফুর রহমান সরদার বলেন, মিরপুর ডিভিশনের আওতায় যে কোন জায়গায় রূপনগর থানা পুলিশ অভিযান চালাতে পারে।

ওসির কাছে যখন জানতে চাওয়া হলো, তাহলে আটকের ঘটনাস্থল কেন রূপনগর দেখানো হলো? এছাড়া মাস্ক না পরিধানের অপরাধে রূপনগর থেকে পল্লবীতে এসে কি অভিযান পরিচালনা করতে হয়? বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে ওসি থানায় যেতে বলেন।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।