TadantaChitra.Com | logo

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিএমএসএফের আড়ালে জাফরের সাংবাদিক তৈরির কারখানা ধ্বংসপ্রায়.!

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৮, ২০২২, ১১:৩২

বিএমএসএফের আড়ালে জাফরের সাংবাদিক তৈরির কারখানা ধ্বংসপ্রায়.!

বিশেষ প্রতিনিধিঃ দেশব্যাপী মফস্বল সাংবাদিকদের প্রশ্নবিদ্ধ প্যানেল বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সংগঠনটি ঘিরে কাদা ছোঁড়াছুড়ি, নোংরামি, অপকর্মের যেন শেষ নেই। সংগঠনের তথাকথিত সাধারন সম্পাদক আহমেদ আবু জাফরের বিরুদ্ধে তারই সংগঠনের নারী নেত্রীদের নিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনাসহ ব্ল্যাকমেইল করা, সংগঠন সদস্যদের কুৎসা রটনা, হুমকি প্রদানসহ নানা জঘণ্যতায় লিপ্ত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। স্বঘোষিত এ প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী কর্মকান্ড, তহবিল তসরুপ, সাংগঠনিক বিধি বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে পৈতৃক সম্পত্তির মতো ভোগ দখল, খবরদারিত্ব করা, নেতা কর্মিদের অশালীন গালাগাল দেয়াসহ পাহাড়সম অভিযোগ উঠেছে।

 

সাংবাদিক নির্যাতন নীপিড়ন বিরোধী প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলতেই প্রতিষ্ঠিত বিএমএসএফ এর শীর্ষ নেতারা এখন নিজেরাই সাংবাদিক নীপিড়ন ও নির্যাতনকারী হয়ে উঠেছেন। তারা নিজ সংগঠনের কয়েকজন নারী নেত্রীকেও লালসার শিকার বানিয়েছেন। এরইমধ্যে ভুক্তভোগী এক নারী নেত্রী আইনি প্রতিকার চেয়ে লালবাগের উপপুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

 

তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, সাধারণ সম্পাদক জাফর তাকে পীর ইয়ামেনী হোটেলের ৬৪২ নম্বর কক্ষে নিয়ে সভাপতি পাইলটের কাছে তুলে দেয় এবং বাইরে থেকে দরজায় ছিটকিনি লাগিয়ে জাফর নিজেই পাহাড়ায় থাকে। সেখানে তার সম্ভ্রমহানির ঘটনা ঘটে। এসব ভিডিও দৃশ্যকে পুঁজি করে সাধারণ সম্পাদক জাফর নিয়মিত ওই নারী নেত্রীর কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে চলছেন।

দশ বছর যাবত গড়ে তোলা বিএমএসএফ আজ পর্যন্ত সরকারি কোনো সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত নয়, এমনকি সংগঠনটির কোনো গঠনতন্ত্র ও ব্যাংক একাউন্ট পর্যন্ত নেই। বেশিরভাগ জেলা-উপজেলায় ‘দৈনিক কইয়া দিমু ডটকম’ মার্কার ভূয়া সাংবাদিক নিয়েই বেশিরভাগ শাখা গড়ে তোলা হয়েছে। ওই সংগঠনে ১৭ হাজার সাংবাদিক সদস্য থাকারও আজব দাবি করেন জাফর। টানা ১০ বছর ধরে সাধারন সম্পাদকের পদ দখল করে রাখা আহমেদ আবু জাফরই সর্বেসর্বা হয়ে আছেন। সংগঠনের ভর্তি ফি, মাসিক চাঁদা, শাখা অনুমোদন ও বিভিন্ন সময় নানা অনুষ্ঠানের নামে লাখ লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে আদায় করে পকেটস্থ করতেন জাফর। এ কারণে সংগঠনে তাকে ‘বিকাশ বাবা’ বলেও সম্বোধন করা হয়।

 

তিনি পেশাগতভাবে কোনো পত্রিকায় সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত না থেকেও কিভাবে সাংবাদিক সংগঠনের সাধারন সম্পাদকের পদ দখল করে আছেন তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। এসব নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলেই তার বিরুদ্ধে নানারকম গুজব ছড়িয়ে নাস্তানাবুদ করার পাঁয়তারা চালানো হয়। সেখানে পেশাদারিত্ব নেই, চলে ভূয়া ও অপসাংবাদিকতার চাষাবাদ।

সাধারণ সম্পাদক জাফর সম্পূর্ণ একক সিদ্ধান্তে বিএমএসএফকে ফেসবুক ও প্রেসরিলিজ নির্ভর সংগঠনে পরিণত করেন। তিনি সকাল, বিকাল, মধ্যরাতে নিজের মর্জিমাফিক ভুয়া মিটিংয়ের মিথ্যা প্রেসরিলিজ ফেসবুকে ছড়িয়েই হাসিল করেন সবকিছু। নেতা কর্মীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার, মা বাবা তুলে অশ্রাব্য গালাগাল দেয়া, নির্যাতিত সাংবাদিকের পক্ষে প্রতিবাদ, নিন্দা জানানো ও মানববন্ধনের জন্য আলাদা আলাদা রেটে টাকা হাতানোর ঘৃণ্য অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে সংগঠনে একক কর্তৃত্ব বহাল রাখতে পাঠাও সার্ভিস কর্মি, মাদক ব্যবসায়ি, চাঁদাবাজ, ছ্যাচড়া মাস্তানদের নামকাওয়াস্তের রিপোর্টার কার্ড প্রদানের মাধ্যমে হাজার হাজার বিএমএসএফ সদস্য বানানো হয়েছে।

ঝালকাঠি শহরের চা দোকানের মাধ্যমে কর্মজীবনে পা রাখা আহমেদ আবু জাফর স্থানীয় দৈনিক শাহনামা পত্রিকার হকার থেকেই সংবাদপত্রে সম্পৃক্ত হন। নিজে সাংবাদিকতা না করেও তিনি সাংবাদিক সংগঠনের শীর্ষ নেতা হওয়ায় নানারকম টিটকারী, টিপ্পনী ছড়িয়ে আছে লোকমুখে। তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অখ্যাত পত্রিকা ও অনুমোদনহীন অনলাইন পোর্টালের কথিত সাংবাদিকদের নিয়েই বিএমএসএফ এর বিভিন্ন শাখা গঠন করে থাকেন। এ কারণে প্রকৃত সাংবাদিকরা এ সংগঠনকে “ভুয়া সাংবাদিক বানানোর কারখানা” বলেও আখ্যা দেন।

খাদের কিনারে বিএমএসএফ (!)
সাঈদুর রহমান রিমনের মতো জনপ্রিয় সাংবাদিককে সংগঠনে যুক্ত করেই বিএমএসএফ সারাদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছিলো। জাতে ওঠার সেই সিড়ি হারিয়ে আবারও অনুমোদনহীন সংগঠনটি নিঃস্ব হওয়ার পথে। অনেকেই জানে, মাত্র অল্প কিছুদিন আগেই রিমনের বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি টাকার মানহানী মামলার প্রতিবাদে বিএমএসএফ মানববন্ধন ও প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল। প্রথম দিনেই দেশের ১৪৭টি স্থানে স্বতস্ফূর্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তি দুই দিনে আরো অন্তত ১১টি জেলায় অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মসূচি। আর দুদিন আগে বিএমএসএফ এর পল্টন কার্যালয়ে নাটকীয় হামলা, ভাঙচুর ও কথিত সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় সংগঠনটি খোদ ঢাকাতেও কোনো মানববন্ধন করাতে ব্যর্থ হলো। সারাদেশে মাত্র ৩টি স্থানে যে প্রতিবাদ সভার দাবি করা হয়েছে, সেগুলোর ছবি, ভিডিও এবং উপস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ, সন্দেহজনক।

 

এছাড়া এত চিল্লাপাল্লা, কান্নাকাটি করা সত্বেও কোনো পেপারে বিএমএসএফ এর একটা খবর পর্যন্ত ছাপা হয়নি। এমনকি রংপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, নীলফামারী সহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় জাফর নিজে ফোন করে মানববন্ধনের অনুরোধ করেও পাত্তা পাচ্ছেন না। অবশেষে আহমেদ আবু জাফর ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগিরা “বিএমএসএফ রেজিষ্ট্রেশন পেয়ে গেছে” মর্মে মিথ্যা, জালিয়াতি প্রচারণার মাধ্যমে নিজেদের রক্ষার অন্তিম উদ্যোগ নিয়েছে। ফেসবুকের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে দেয় সরকারি অনুমোদন নাম্বার ০৬/২০২২, কিন্তু সরকার কোনো দপ্তর থেকে এরকম অনুমোদন বা সনদ দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এসব মিথ্যাচারেও ভূয়ারা সংঘবদ্ধ, লজ্জাহীন। এবার সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতা যে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা কি আরো বুঝিয়ে বলতে হবে?


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।