TadantaChitra.Com | logo

১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশাল-৪ আসনে নৌকাকে ডুবাচ্ছে এমপি পংকজ!

প্রকাশিত : জুন ২২, ২০১৮, ১৭:৪২

বরিশাল-৪ আসনে নৌকাকে ডুবাচ্ছে এমপি পংকজ!

* বরিশাল-৪ আসনের বিতর্কিত দুর্নীতিবাজ সাংসদ পংকজ নাথের অপকর্মের পরিত্রান পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি।
* সাংসদ পংকজ নাথের অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা।
* সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ড, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, নিয়োগ বাণিজ্য, নির্বাচন বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্য, খাস জমি বরাদ্দের নামে বাণিজ্য, ফসলি জমির ধান কেটে নেয়ার বাণিজ্য, দখল বাণিজ্য, মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাতের অভিযোগ বরিশাল-৪ আসনের সাংসদ পংকজ নাথের বিরুদ্ধে।

তদন্ত চিত্র ডেস্কঃ ঠিক যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহা-সড়কে। তখনই কিছু সংসদের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এমনই এক বির্তকিত সংসদ বরিশাল-৪ আসনের পংকজ নাথ। আ:লীগ ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীর নিধনই এখন একমাত্র তার কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর এমন কর্মকান্ডে নিয়ে সম্প্রতি ঐ আসনের সাধারণ মানুষ ও আ:লীগের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি লিফলেট বিতরণ করেন।
ঐ লিফলেটে উল্লেখ করা হয়, সারাদেশে আজ উন্নয়নের জোয়ার বইতে শুরু করলেও বরিশাল-৪ এ কেবলমাত্র পংকজ নাথ ও তাঁর পরিবারের উন্নয়ন হয়েছে। বরিশাল-৪ আসনে প্রায় ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ভোটারের মধ্যে সনাতন ধর্মাবলী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট মাত্র সাড়ে ১১ হাজার। ১৯৭০-২০১৩ সাল পর্যন্ত যথাক্রমে-১৯৭০, ১৯৭২, ১৯৯১ সালে ত বারের জন্য প্রয়াত জননেতা মহিউদ্দিন আহমেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাকী সময় বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টি ক্ষমতার আসনে আসীন থাকেন।

লিফলেট থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় নির্বাচনে আপনার নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যখন আওয়ামী লীগের হাতে ন্যাস্ত হয়, ঠিক তখনি বরিশাল-৪ আসনের সর্বস্তরের জনগণ আন্তরিকতার সহিত সাংসদ পংকজ নাথকে অভিভাবক হিসেবে সাদরে গ্রহণ করেন। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সবার ইচ্ছাকে পদদলিত করে পংকজ নাথ নিজে এবং স্বজন-পরিবার ও অনুসারীদের স্বার্থকে চরিতার্থ করার মানসে অত্র এলাকায় হত্যঅ, খুন, রাহাজানি, চোরাচালানী, দলীয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, মাদকসেবন ও বিক্রয়ের অভয়ারন্ন, টেন্ডার, তদ্বির, নিয়োগ, চাঁদাবাজি, মনোয়ন, নির্বাচন, সিন্ডিকেট, কমিশন ইত্যাদি বাণিজ্যসহ নানা ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে লুটপাটের মাধ্যমে মেতে উঠেন।

তিনি দলের প্রবীণ ও ত্যাগী নেতা কর্মীদের হটিয়ে অযোগ্য, অদক্ষ, দলছুট, সুবিধাভোগী, বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টি থেকে এনে চিহ্নিত খারাপ লোকজনদের নিয়ে দলীয় গ্রুপিং সৃষ্টি করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে নিজস্ব সন্ত্রাসী ও ক্যাডার বাহিনী গড়ে তোলেন এবং সরকারের সার্বিক উন্নয়নের কথা না বলে নিজেকে স্বঘোষিত উন্নয়নের রুপকার বলে ঘোষণা করেন। তাহার এহেন অসাংগঠনিক, দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীরা কথা বললে তিনি তাকে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে হাত-পা ভেঙ্গে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে মিথ্যা মামলায় জড়ায়ে জেলে পুড়েন অথবা এলাকা ত্যাগে বাধ্য করেন। যার ফলে আ’লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আজ গৃহবন্দী।

সর্বত্র খবরদারি, জুলুম, অন্যায় ও অত্যাচারের কারনে এলাকায় দলের জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। বরিশাল-৪ আসনের এমন কোন আ’লীগের নেতাকর্মী বা শুভাকাঙ্খী খুঁজে পাওয়া যাবে না- যিনি পংকজ নাথ ও তাঁর অনুগত সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনীর প্রতিহিংসার শিকার হন নাই। পংকজ নাথ দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের অনাস্থা কুঁড়ানোর পাশাপাশি গোটা জেলায় আ’লীগকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর ছোট ভাই মনোজ নাথ, চাচাত ভাই রামকৃঞ্চ নাথ, ভাগিনা রিপন নাথের ইশারায় চলে সমস্ত প্রশাসন ও অবৈধ বাণিজ্য। দলীয় কোন নেতাকর্মী পংকজ নাথের বিরাগভাজন হলে তাদের দূর্দশার আর সীমা থাকে না। সন্ত্রাসী হামলা, একের পর এক মামলা, পুলিশ পাঠিয়ে তাদের গ্রেফতার করানো পংকজ নাথের অপরাজনীতির কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিগত ৪ দলীয় জোট সরকারের শাসনামলে আ:লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যত মামলা ও হামলা হয়েছে তার চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা এখন এখানে। পংকজ নাথের নির্যাতন ও হামলার ভয়ে হাজার হাজার আ:লীগের নেতা-কর্মীরা আজ এলাকা ছাড়া। ৩ থানায় এযাবৎ যত মামলা ও হামলা হয়েছে তার ৯৫% ই আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সারা এলাকায় যুব সমাজের হাতে আজ তিনি তুলে দিয়েছেন ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ অবৈধ অস্ত্র। পংকজ নাথের সাথে মাদক ও চোরাচালানিদের সু-সম্পর্কের কারনে ভোলা জেলার ল²ীপুর হয়ে মেহেন্দিগঞ্জের ইলিশা নদী দিয়ে কালীগঞ্জ রুট হয়ে সমস্ত মাদক এখন দক্ষিণাঞ্চলে। যার নেপথ্যে পংকজ নাথ নিজেই।

লিফলেটে আরো উল্লেখ করা হয়, একজন অতি সাধারণ পরিবারের ছেলে পংকজ নাথ। টিউশনি আর গরীবের ফান্ডের টাকায় লেখা-পড়া কালীন জাতীয় ছাত্রলীগের ব্যানারে তাঁর অবির্ভাব ঘটে। তিনি ২০০১ সালের বিগত ৪ দলীয় জোট সরকারের কেন্দ্রবিন্দু হাওয়া ভবনের দৃষ্টি কাঁড়তে সক্ষম হন। সারা এলাকায় যখন আ:লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ৪ দলীয় জোট সরকারের অমানবিক নির্যাতন হামলা-মামলা হচ্ছে তখন তিনি পুলিশ প্রহরায় এলাকায় সফর করতেন এবং নিজেকে হাওয়া ভবনের একান্ত লোক বলে প্রচার করতেন। সেই সময়েই হাওয়া ভবনের বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে রাতারাতি তিনি শত কোটি টাকার মালিক হয়ে যান।

তিনিই একমাত্র দুর্নীতিবাজ যিনি ১/১১ এর সময় প্রথম শীর্ষ দুর্নীতিবাজ হিসেবে স্ব-স্ত্রীক গ্রেফতার হন। অভাবনীয় সেই সুযোগ এসে যায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের পরে। আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তার নির্বাচনী এলাকা সহ উত্তরায় বিলাসবহুল বাড়ী, অভিজাত এলাকায় নামে-বেনামে একাধিক প্লট, ফ্ল্যাট ও গার্মেন্টস। বীহঙ্গ গাড়ির রুটের মালিকানা, ইন্ডিয়াতে একাধিক বাড়ি ও মার্কেট। এযাবৎ তিনি হুন্ডি, মানি লন্ডারিং এর মাধ্যমে দেশের বাহিরে শত শত কোটি টাকা পাচার করেছেন। কিছুদিন আগেও পংকজ নাথের স্ত্রী মনিকা নাথের চাকুরীর টাকায় তাদের সংসার চলতো, আজ তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক কিভাবে হয়েছেন তা আ:লীগের নেতাকর্মীরা প্রধান মন্ত্রীর কাছ থেকে জানতে চায়।

এক নজরে বরিশাল-৪ আসনে পংকজ নাথের সামান্য কিছু দুর্নীতি ও অপকর্মের খতিয়ান:

সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ড : পংকজ নাথ বরিশাল-৪ আসনে আ:লীগ গঠনতন্ত্র পরিপন্থী বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত আছেন। তিনি দলীয় গ্রæপিং এর মাধ্যমে দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে দলীয় ভাবমূর্তি দারুনভাবে ক্ষুন্ন করছেন। তিনি দলীয় চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে নিজের ইচ্ছামতো আ:লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নামে একাধিক কমিটি ঘোষণা দিয়ে দলীয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। পংকজ নাথের নির্দেশে কাজীরহাট থানার ২০১৭ সালের মহান বিজয় দিবস ও আ:লীগের সদস্য সংগ্রহ নবায়ণ ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে তার অনুগত ক্যাডার পলাশ মাল ও নেহাল এর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বহু নেতাকর্মীকে আহত করে এবং আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে সদস্য সংগ্রহ নবায়ণের ১০০ পাতার একটি বহি কাজীর হাট থানার আ:লীগের সভাপতি আঃ জব্বার খান এর হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তিনি ঐ এলাকায় আওয়ামী লীগ নিধনে-স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন।

সন্ত্রাসী কর্মকান্ড : পংকজ নাথের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাঁরই নির্দেশে গত ২০১৬ সালের রমজানের ঈদের দিন দুপুর বেলা আলতু সর্দারের নেতৃত্বে পংকজ নাথের সন্ত্রাসী বাহিনী মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আ:লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক চেয়ারম্যান জামাল মোল্লা ও গোবিন্দপুর ইউনিয়ন আ:লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল মোল্লার বাড়িতে হামলা চালিয়ে একজনকে নিহত করে এবং প্রায় ১৫-২০ জনকে মারাত্মক জখম করে। ভাষানচর ইউপি নির্বাচনে পংকজ নাথের মনোনীত বিদ্রোহী প্রার্থীকে জয় লাভ করানোর জন্য ওয়ার্ড আ:লীগের সভাপতি সমীর চারুকে তিনি হত্যঅ করার নির্দেশ দেন এবং হত্যা করেন। তার অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের প্রতিবাদে কাজীরহাট থানা আ:লীগের সহ:প্রচার সম্পাদক সঞ্জয় শীল পংকজ নাথের ছোট ভাই মনোজ নাথ ও ভাইয়ের স্ত্রীর নামে দুদকে মামলা (স্মারক নং ৩৮১, তাং ০৫/০৩/২০১৭ ইং) করায় তার হাত-পা ভেঙ্গে দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠান। যার জি.আর নং ২৬/২০১৭। এমনিভাবে যুবলীগ নেতা ডিকেন ও আতিক মাস্টারসহ শত শত নেতাকর্মীকে তিনি হাত পা ভেঙ্গে মারাত্মক জখম করেন।

নিয়োগ বাণিজ্য : পংকজ নাথ ২০১৭ সালে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সরকারী রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৫ জন নৈশপ্রহরী কাম দপ্তরী নিয়োগ দিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে ৫-৭ লক্ষ টাকা নেন। কলেজ-হাইস্কুল-মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রতিজনের কাজ থেকে ১৫-২০ লক্ষ টাকা করে নেন। পুলিশ-আর্মি-বিজিবিসহ অন্যান্য নিয়োগ দিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে ৫-২০ টাকা করে নেন। সরকারী রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রহস্যজনকভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে ১০-১৫ লক্ষ টাকা ( উক্ত নিয়োগের ব্যাপারে দুদকে মামলা চলমান) সহ আরো প্রায় ৩০ জনের কাছ থেকে নিয়োগ বাবদ প্রায় ১০-১৫ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন।

নির্বাচন বাণিজ্য : পংকজ নাথের বরিশাল-৪ আসন মোট ২১টি ইউনিয়ন, ২টি উপজেলা, ১টি পৌরসভা, ৩টি থানা নিয়ে গঠিত। ২০১৬-১৭ ইউপি নির্বাচনে পংকজ নাথ প্রতিজন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ২০-৬০ লক্ষ টাকা করে নেন এবং ২৫১ জন ইউপি মেম্বার ও ১২ জন পৌর কাউন্সিলরের কাছ থেকে ৫-১৫ লক্ষ টাকা করে নেন। উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মেয়রের কাছ থেকে ২০-৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধুমাত্র অনৈতিক সম্পর্কের কারণে জামাতের রোকনের মেয়ে রওমান বিনতে শফিকুল ইসলাম রোমানাকে তিনি নিজের অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন।

সবচেয়ে আশ্চার্যের বিষয় তিনি ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি যথাক্রমে- জয়নগর, চানপুর, জাঙ্গালিয়া, দরিচর খাজুরিয়া,আন্দারমানিক, ধুলখোলা ইউনিয়নে আওয়ামী মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাঁর মনোনীত বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করায়ে তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তাদের বিজয়ী করেন এবং নির্বাচন বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি ধুলখোলা ইউপি নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থী আলহাজ্ব আকবাল মাতব্বর এর বিরুদ্ধে ধানের শীষ প্রার্থীকে জয়লাভ করান। চানপুর ইউপি নির্বাচনে নৌকা মার্কা প্রার্থী লায়ন মাহে আলম ও তার এজেন্টদের ভোট কেন্দ্র যেতে দেন নাই। প্রার্থী নিজের জীবন রক্ষার্থে নির্বাচন বর্জন করে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হন। পংকজ নাথ জেলা পরিষদ নির্বাচনেও নির্লজ্জের মত নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরোধীতা করেন এবং তাঁর নির্বাচনী এলাকার ভোটারদেরকে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য করেন।

কমিশন বাণিজ্য : পংকজ নাথ শুরু থেকেই সরকারী উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডারের উপর ১৫%-২০% টাকা কমিশন নেন। অতি দরিদ্র কর্মসংস্থান প্রকল্প ৪০ দিনের কর্মসূচির ওপর ৩০%-৩৫% টাকা কমিশন তাকে দিতে হয়। এছাড়াও মাদক, চোরাচালান সিন্ডিকেটের কাছ থেকে ৫০% কমিশন নিয়ে থাকেন। টিআর, কাবিখা, কাবিটা এর উপর ৬০% কমিশন নেন তিনি। বরিশাল-৪ এখন তার কারনে মাদক সেবন, বিক্রয় ও চোরাচালানের অভয়ারণ্য এবং দক্ষিণাঞ্চলের ট্রানজিট পয়েন্ট।

খাস জমি বরাদ্দের নামে বাণিজ্য : পংকজ নাথ খাস জমি বরাদ্দের নামে নিজের স্বজন ও পরিবারের নামে-বেনামে শত শত একর জমির মালিক হয়েছেন। তিনি তাঁর চাচাতো ভাই রামকৃঞ্চ নাথের মাধ্যমে আলিমাবাদ, শ্রীপুর ইউনিয়নের লড়াইপুর মৌজার রাম খতিয়ানের নামে ১৬৪৬ একর এবং অন্যান্য মৌজায় আরো ৫ হাজার একর জমির দখল নিয়ে দরিদ্র কৃষকদের মাঝে বরাদ্দ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

ফসলি জমির ধান কেটে নেয়া বাণিজ্য : পংকজ নাথের নির্দেশে তাঁর অনুগত সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী চলতি মৌসুমে বরিশাল-৪ আসনের উলানিয়া, গোবিন্দপুর, জাঙ্গালিয়া, জয়নগর, খাগেরচর, লালপুর, বিশকাঠালি, নাছুকাঠি, আলিমাবাদ, বামুনেরচর সহ চরাঞ্চলের বিভিন্ন মৌজার প্রায় ৫ হাজার একর জমির ধান জোরপূর্বক কেটে নিয়ে গেছেন। এই এলাকায় চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, চাঁদাবাজির সংখ্যা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছেন।

দখল বাণিজ্য : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর সর্বকনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেল এর নামানুসারে ১৯৮৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান পৃষ্ঠপোষকতায় মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ ও পাঠাগার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। উক্ত পরিষদ ও পাঠাগারের নামে .০২৩৫ শতাংশ রেকর্ডীয় জমির উপরে উহা প্রতিষ্ঠিত, যাহার রেজি: নং-০০১/১১, পৌর হোল্ডিং নং-৫৭০, পৌর প্ল্যান নং-৪৩১। উক্ত পরিষদ ও পাঠাগারের জমি অবৈধভাবে দখল করে পংকজ নাথের বাবা হরিনারায়ণ নাথের নামে অডিটরিয়াম করার পায়তারা করলে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আ:লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, উক্ত সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন সাগর বাদী হয়ে পংকজ নাথসহ সংশ্লিষ্ট ১২ জনের বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রতিকারে আদালতে মামলা করেন।

যাহার নং-৬৬/১৬, তাং-২৩/০৮/২০১৬ ইং। আদালত উক্ত জমিতে স্থিতিবস্থার নির্দেশ দিলেও পংকজ নাথ ক্ষমতার প্রভাবে উক্ত জমির বেশ কিছু অংশ দখল করেছেন। বাদী নিরুপায় হয়ে মহামান্য হাইকোর্টের স্বরণাপন্ন হলে হাইকোর্ট মূল মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতিবস্থা বলবৎ থাকার নির্দেশ দেয়া সত্তে¡ও পংকজ নাথ উক্ত জমিতে কাজ চালিয়ে গেলে বাদী পংকজ নাথের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন। যাহার নং-০১, তাং-০৪/০১/২০১৮ ইং। মামলার কারণে বাদীকে পংকজ নাথ জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন। এছাড়াও পংকজ নাথ নদী-নালা, খাল-বিল, মাছ-ঘাট, খেয়া-ঘাটের টেম্পু স্ট্যান্ড, লঞ্চ টার্মিনাল, নদীর বালু, মাছের পাড়া, খাদ্য গোডাউন, সরকারী রাস্তার গাছ, ফসলী জমি ইত্যাদি দখরের মাধ্যমে বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

মুসলামনদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত : পংকজ নাথ প্রতিবছর ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে মসজিদের নামে উন্নয়নের বরাদ্দ এনে সিংহভাগ টাকাই মন্দির সংস্কারে ব্যয় করেন। তিনি মৃত ব্যক্তির কফিন নিয়ে টানা হেঁচড়া, কবর জিয়ারত, মসজিদ মাদ্রাসায় ঢুকে মিলাদে অংশগ্রহণ, ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রাখতে প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করেন। ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি হয়ে নিজের গুণকীর্তন বলে উসকানিমূলক বয়ান দেন। তিনি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত গিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার লক্ষে সংখ্যা লঘু নির্যাতিত হচ্ছে বলে কল্পকাহিনী তৈরি করে নিজের সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করার মানসে ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত করেই চলছেন।

তার এমন কর্মকান্ড থেকে বরিশাল-৪ আসনের সাধারণ মানুষ ও আ:লীগ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরিত্রাণ পাইতে প্রদানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

তবে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ও লিফলেট বিরতণের বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। এরপর তার মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোন সাড়া দেননি।(চলবে)


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।