TadantaChitra.Com | logo

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় আ.লীগ

প্রকাশিত : এপ্রিল ৩০, ২০২২, ০৯:০২

ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় আ.লীগ

অনলাইন ডেস্ক: আওয়ামী লীগ গুম করে, ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর বাসায় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, ইলিয়াস আলী শুধু আমাদের দলের নেতা ছিলেন না, তিনি সিলেট এবং সমগ্র দেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত সাহসী, প্রতিবাদী ও বিজ্ঞ রাজনীতিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। আমাদের দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী যখন গুম হয়, তারপরে সারা দেশে একটা আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। এ জন্য যে, বাংলাদেশের মানুষ অতীতে গুম শব্দের সঙ্গে পরিচিত ছিল না। প্রথমে চৌধুরী আলম নিখোঁজ হলেন, এর পরেই দুজন ছাত্র নেতা; ঠিক সেভাবে বোঝা যায়নি। কিন্তু ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পরেই সারা দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুমের কালচারটা কখনো ছিল না। যারা জবর-দখলকারী ক্ষমতায় থাকেন, কর্তৃত্ববাদী সরকাররাও অতীতে এই ঘটনা ঘটাননি। আমরা দেখেছি, লাতিন আমেরিকায় রুলার-ডিকটেটর ছিল তারা গুমের আশ্রয় নিত। বাংলাদেশে আমরা এই প্রথম দেখলাম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গুম করে দেওয়া। নিখোঁজ করে দেওয়া। ইতোমধ্যে অধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো রিপোর্ট করেছে, সেখানে আছে আমাদেরই ৬ শতাধিক নেতাকে গুম করা হয়েছে। শুধু বাংলাদেশে না, এটা এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। গুমের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রতিষ্ঠান র‌্যাব এবং ৭ জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

এটা আমাদের জন্য খুব আনন্দের কথা নয়, অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। এই কথাটাই আমরা বারবার বলার চেষ্টা করেছি, গুম বা বিচারবহির্ভূত হত্যা; যার ফলে এই নিষেধাজ্ঞা এসেছে এটা সম্পূর্ণভাবে সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার আকাঙ্ক্ষায় ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য এই ফ্যাসিবাদী কায়দায় তারা গুমের আশ্রয় নিয়েছে এবং গুম করে, মানুষকে ভয় দেখিয়ে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, বলেন তিনি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা এলে একটি দেশের যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট, রাজনৈতিক সংগঠনের বৈশিষ্ট বোঝা যায়। অর্থাৎ এটা পুরোপুরিভাবে কর্তৃত্ববাদী, একনায়কতন্ত্র, স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে সেটা খুব পরিষ্কার হয়ে গেছে এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে। তার পরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে হিউম্যান রাইটস রিপোর্ট দেয়, তাতে এই বিষয়গুলো অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে এসেছে। বিচার বিভাগকেও এখানে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করতে দেওয়া হয় না। এমনকি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মামলা সম্পর্কে পরিষ্কার করে বলেছে, রাজনৈতিক কারণেই তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সাজা দেওয়ার মতো এটা কোনো মামলা হতে পারে না।

ফখরুল বলেন, আজ ইলিয়াস আলী একটি প্রতীকে পরিণত হয়েছে। একদিকে তার প্রতিবাদের প্রতীক, আরেকদিকে অত্যাচার-নির্যাতনের যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার প্রতীক। সে জন্য আমরা সব সময় আসি ইলিয়াস আলীর পরিবারের কাছে। তারা অনেক বিপদে আছেন। তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তারা অনেক বিপদে আছেন। মেয়ের ভর্তির ব্যাপারে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। পরবর্তীতে অনেক চেষ্টা করে ভর্তি করা হয়েছে।

অনেকেই প্রশ্ন করেন স্বাধীনতা যুদ্ধ করে লাভ কী হলো? আমরা যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলাম, যার কারণে যুদ্ধ করলাম—মুক্ত একটা দেশ থাকবে, সবাই সবার কথা বলতে পারবো। গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে সেই বিষয়টা একেবারে তিরহিত হয়ে গেছে, বলেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গুম ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে সরকারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। সরকারের উদ্যোগ যদি থাকতো আমরা এই জিনিসটা বের করতে চাই তাহলে ভিন্ন রকম পরিস্থিতি দাঁড়াতো। যেহেতু সরকারই জড়িত, কারণ ইলিয়াস আলীকে যখন তুলে নিয়ে যায় তখন তো সবাই দেখেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে গেছে। এমনকি যারা দেখেছে তারাও গুম হয়েছে। ড্রাইভার গুম হয়েছে। খুব পরিষ্কার এটা এই সরকারের মাধ্যমেই হয়েছে। গুম ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে কোনো উদ্যোগ নেয় না এবং পরিবারগুলো সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ কতটা দেউলিয়া হয়ে গেছে যে, তারা জাতীয় সমস্যা সমাধানে ভারতকে অনুরোধ করতে চায়। তারা এটা নিয়ে দেশের মানুষের কাছে দাঁড়াতে পারছে না। আরেকটা বিষয় তারা তো ক্ষমতায় জোর করে আছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই বাহিনীগুলোকে তারা ব্যবহার করছে। ব্যবহার করার পর তাদের বিরুদ্ধে কী করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে, বের করে দেবে বাহিনী থেকে বা আইনি ব্যবস্থা নেবে; সেটা তারা করতে পারছে না।

সম্প্রতি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২ জন নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, র‌্যাবের যে ক্যারেক্টার তারা তৈরি করে দিয়েছে, সেই ক্যারেক্টারে তারা সমস্যার সমাধান বলতে তারা ওটাই বোঝে এবং সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যে কাজগুলো করছে-করে যাবে তারা। যতক্ষণ পর্যন্ত না ব্যবস্থা নেবে। যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সরকার এখনো আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এই সরকারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, তাদের যেহেতু জবাবদিহিতা জনগণের কাছে নেই, অন্যান্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তাদেরও জবাবদিহিতার প্রয়োজন তারা মনে করে না।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।