TadantaChitra.Com | logo

৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পদ্মা সেতু নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকায় অগ্রণী ব্যাংক

প্রকাশিত : জুন ২২, ২০২২, ১২:১৮

পদ্মা সেতু নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকায় অগ্রণী ব্যাংক

অনলাইন ডেস্কঃ আগামী ২৫শে জুন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল আকাঙ্ক্ষিত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরদিন সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে। এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু  তৈরিতে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা লাগছে, এর পুরোটাই দিচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক- অগ্রণী ব্যাংক। বিস্ময়কর হলেও সত্য দেশের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ এই অবকাঠামো প্রকল্পের অর্থায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে কোনো বৈদেশিক মুদ্রাই নিতে হয়নি।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর মোট ব্যয় ৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার বা ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন ২.৪ বিলিয়ন ডলার। বাকিটা পরিশোধ করা যাবে স্থানীয় মুদ্রায়। শুরু থেকে আজ অব্দি অগ্রণী ব্যাংক পদ্মা সেতু তৈরিতে এককভাবে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে, সরকার ব্যাংকটিকে ইউএস ডলারের বিনিময়ে স্থানীয় মুদ্রা (টাকা) ফেরত দিচ্ছে।

অগ্রণী ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০১২ সালে পদ্মা সেতুর হিসাব খোলা হয় ব্যাংকটির গুলশান শাখায়। আর ডলার সরবরাহ করা শুরু হয় পরের বছর (২০১৩ সাল) থেকে। ওই বছর ৬.২৬ মিলিয়ন ডলার সরবরাহ করা হয়েছিল।

এর ঠিক পরের বছরই (২০১৪) তা লাফিয়ে বেড়ে ২৭৬.৮৬ মিলিয়নে গিয়ে ঠেকে। শুধু ২০১৮ সাল (৭২.২০ মিলিয়ন) বাদ দিলে প্রতি বছরই ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সরবরাহ করা হয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত (১৯শে জুন) ৫৩.৪৪ মিলিয়ন ডলার সরবরাহ করা হয়েছে। আর ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পে অগ্রণী ব্যাংক মোট ১৪৪৯.১৯ মিলিয়ন বা ১.৪৪৯ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করেছে।

বাংলাদেশে গত এপ্রিল প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ বাড়লেও মে মাসেই রেমিটেন্স প্রবাহ ১৩% কমে যায়। দেশে হঠাৎ করে রেমিটেন্স প্রবাহ কমে গেলেও পদ্মা সেতু প্রকল্পে ডলার সরবরাহ করা বন্ধ করেনি অগ্রণী ব্যাংক। বরং, এ মাস শেষ না হতেই মাত্র ১৯ দিনে (জুন ১-জুন ১৯) বছরের অন্যান্য মাসের তুলনায় আরও বেশি (১৪.৭৯ মিলিয়ন) ডলার সরবরাহ করেছে অগ্রণী ব্যাংক। এভাবেই, নিজস্ব রপ্তানি এবং রেমিটেন্স থেকে প্রাপ্ত  বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরিতে প্রয়োজনীয়  বৈদেশিক মুদ্রার পুরোটাই সরবরাহ করে যাছে অগ্রণী ব্যাংক। বাকি যে অন্তত এক বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করতে হবে, সেটিও অগ্রণী ব্যাংক-ই সরবরাহ করবে বলে নিশ্চিত করে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বলেন, ‘অগ্রণী ব্যাংক এর নামকরণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার দেওয়া নামের চেতনায় এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও মনোবলের কারণেই আমরা পদ্মা সেতু প্রকল্পে এভাবে সহযোগিতা করে যেতে সক্ষম হয়েছি। আমরা জাতির পিতার ‘অগ্রণী ব্যাংক’ নামকরণের স্বার্থকতা ধরে রাখতে পেরেছি বলে গর্বিত।

আমাদের এই সাফল্যের পেছনে ব্যাংকের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. জায়েদ বখত, দক্ষ পরিচালনা পর্ষদ সহ ১২,০০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যেকের অবদান রয়েছে। এছাড়াও, সেতু বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম (বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব), পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বর্তমান সেতু বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের আন্তরিক সহযোগিতার কথা বিশেষভাবে স্মরণ করছি।’

পদ্মা সেতু তৈরিতে এককভাবে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করতে কোনো ধরনের সমস্যা বা সংকটে পড়তে হয়েছে কিনা কিংবা ভবিষ্যতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে শামস-উল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতুর অর্থায়নে ডলারের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল যার আওতায় কোনো সমস্যা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা দেবে বলেছিল। শুরুতে এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আমাদের একটি ডলারও নিতে হয়নি। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমতে দেইনি। আমাদের রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় থেকে এখন পর্যন্ত ১৪৪৯.১৯ মিলিয়ন ডলার  বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করেছি। পদ্মা সেতুতে যত বৈদেশিক মুদ্রা লাগছে, তার পুরোটাই আমরা দিচ্ছি। সামনেও দিতে পারবো। সুতরাং, আমরা গর্বের সঙ্গে বলতেই পারি, অগ্রণী ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের বড় অংশীদার। কারণ, পদ্মা সেতুতে এত বড় ভূমিকা ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্য কারোরই নেই।’

জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দেশি ও বিদেশি উভয় প্রকার অর্থই পরিশোধ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, দেশের উন্নয়নে গৃহীত নানামুখী মেগাপ্রকল্পেই অর্থায়ন করে আসছে অগ্রণী ব্যাংক। ১৫টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে এই ব্যাংক ১,৭১৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল, যেগুলো থেকে জাতীয় গ্রিডে দুই হাজার ৩৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে। এছাড়া, দেশে প্রথম পিপিপি’র আওতায় নির্মিত ১১.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ (রাজধানী ঢাকার) মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারেও অর্থায়ন করেছিল অগ্রণী ব্যাংক।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।