TadantaChitra.Com | logo

১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সিন্ডিকেটের কবলে ফায়ার সার্ভিস; চট্টগ্রামের কিং ও ফায়ার সার্ভিসের কোটিপতি উপ-পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) জসিম উদ্দিন

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২০, ২০২৩, ০৬:৩৬

সিন্ডিকেটের কবলে ফায়ার সার্ভিস; চট্টগ্রামের কিং ও ফায়ার সার্ভিসের কোটিপতি উপ-পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) জসিম উদ্দিন

নিয়োগ, বদলী ও টেন্ডার বানিজ্যের অভিযোগ উঠলেও নেওয়া হয় না ব্যবস্থা!
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের যে কোনো দুযোর্গে সবার আগে ডাক পড়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের। সংস্থাটির সর্বজনবিদিত। এসবের পিছনেও রয়েছে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। প্রতিবার ফায়ারম্যান নিয়োগে উঠে দুর্নীতির অভিযোগ। জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কোটা দেখানো হয় যা, নিয়োগ দেওয়া হয় তার দ্বিগুণ। অর্থাৎ বিজ্ঞপ্তিতে কোটা ৪ শ দেখানো হলেও চুরান্ত নিয়োগ দেওয়া হয় ৮ শ বা ৭ শ প্লাস। প্রতিটি নিয়োগে এমন করে জনবল নিয়োগ দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। এসব বিষয়ে উচ্চ আদালতে মামলা ও একাধিক রীট করা হয়েছে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের দুর্নীতি ও নিয়োগ বানিজ্য বন্ধ হয়নি। বর্তমানে সিন্ডিকেট করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এই সংস্থার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। এই কর্মকতারা অল্প কয়েকদিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। এদের মধ্যে চট্টগ্রামের কিংখ্যাত বর্তমান উপ-পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) জসিম উদ্দিন। এই অধিদপ্তরে চাকরী করার সুবাধে নিজের পরিবার ও স্ত্রীর আত্মীয় স্বজনকে কোটিপতি বানিয়েছেন তিনি। চট্টগ্রামের অনেকেই তাকে ফায়ার সার্ভিসের কিং ও কোটিপতি অফিসার হিসেবে চিনেন। চট্টগ্রাম কেমিক্যাল ব্যবসায় জড়িত এ কর্মকর্তা যেখানেই বদলী হয়েছেন, সেখানে বসেই চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ করেছেন। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসে কোন কিছু ক্রয় করতে হলে তার মাধ্যমেই হয়। উপ-পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) হওয়ার আগে তিনি রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালকের দ্বায়িত্ব পালন করেন। সেখানে থেকেই চট্টগামে মসুর ডাল ক্রয় নিয়ন্ত্রণ করেন। মসুর ডালের চমক দেখিয়ে জসিম উদ্দিন বর্তমান ডিজির আস্থাভাজন হয়ে উঠেন।

এছাড়াও চট্টগ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ঠিকাদার লাল ভাইয়ের সাথে উপ পরিচালক জসিম উদ্দিনের সখ্যতা রয়েছে। আগামীতে অধিদপ্তরের সব ধরনের ক্রয় সংক্রান্ত কাজ এ ঠিকাদারকে দিয়ে সম্পন্ন করাবেন জসিম উদ্দিন। বিনিময়ে ডিজিকে কমিশন দিবেন। এসব প্রলোভন ও আশ্বাসে ডিজিকে ম্যানেজ করে অধিদপ্তরে বদলী হয়ে আসেন উপ পরিচালক জসিম উদ্দিন। চট্টগ্রামে মসুর ডাল ক্রয়ে পরিক্ষামূলক সাকসেস হওয়ার কারণ মহা পরিচালক মাইন উদ্দিন মহামান্য রাষ্ট্রপতির আইন অমান্য করে জসিম উদ্দিনকে বদলী করেন। যা সংবিধানের ১৩৩ ধারা পরিপন্থী। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের এনাম কমিটি (ম্যানুয়াল) আইনকে বৃধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। সংবিধানের ১৩৩ ধারায় বলা আছে, এই সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে সংসদ আইনের দ্বারা প্রজাতন্ত্রেও কর্মে কর্মচারীদেও নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন; তবে শর্ত থাকে যে, এই উদ্দেশ্যে আইনের দ্বারা বা অধীন বিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অনুরূপ কর্মচারীদের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণ করিয়া বিধিসমূহ প্রণয়নের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং অনুরূপ যে কোন আইনের বিধানবলী সাপেক্ষে অনুরূপ বিধিসমূহ কার্যকর হইবে। এই আইন অনুযায়ী অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সব ধরনের বদলী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করতো। বদলীর আদেশে মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উল্লেখ্য করা হতো কিন্তু এসব তোয়াক্কা না করে বর্তমানে ডিজি কোন ক্ষমতা বলে বদলী করেন তা অনেকের বোধগম্য নয়।

অভিযোগ উঠেছে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের প্রভু হিসাবে খ্যাত স্বরণকালের চাঞ্চলকর কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন অতীতের সকল অপকর্মের বেড়াজাল হতে মুক্তি পেয়ে বর্তমানে অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) পদে যোগদান করেছেন। অতীত রেকর্ড থেকে জানা যায়, অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার আঃ মতিন থেকে শুরু করে দীর্ঘ দুই যুগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন পর্যন্ত সকল মহা পরিচালকগণ আলোচ্য জসীম উদ্দিনের দাপটের সামনে চট্টগ্রামকে আলাদা স্বাধীন ফায়ার সার্ভিস হিসাবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হতেন। সিতাকুণ্ডের হাজার হাজার কোটি টাকার বাড়ীঘর শিল্প কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক আলোচ্য জসীম উদ্দিন ফায়ার সার্ভিস বিভাগ হতেই আলাউদ্দিনের প্রদীপ পেয়ে চট্টগ্রামের প্রভু হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। অধিদপ্তরের বর্তমান পুতঃপবিত্র মহা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন অধিদপ্তরের সুনাম ও গতিশীলতার ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে তার প্রিয়পাত্র স্বরণকালের আলোচিত জসীম উদ্দিনকেই অধিদপ্তরের কান্ডারী হিসাবে উপ পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) পদে পদায়ন করেছেন। ইতিমধ্যে জসীম উদ্দিনের স্বর্গরাজ্য চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের রেশনের মুশারীর ডাল ক্রয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ দেশব্যাপী আলোচনার ঝর তুলেছে। যাহা দুর্নীতির শিক্ষাগুরু জসীম উদ্দিনের উপর বর্তায় বটে। অধিদপ্তরের বর্তমান ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন তার আপন ভাই মোঃ আনিছ উদ্দিনের পরিচালিত মেসার্স নজির এন্ড সঙ্গ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতি কেজি ১৪ টাকা বেশী দরে মশুর ডাল ক্রয় করিয়া তাহা দেশের সকল বিভাগে সরবরাহ করেন। যাহাতে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন মর্মে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের জনৈক কর্মকর্তা জানান। এ ব্যাপারে অধিদপ্তরের বর্তমান উপ পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) জসীম উদ্দিন নেপথ্যে থাকিয়া মহাপরিচালককে সার্বিক সহযোগীতা করেন। বর্তমান ডিজি মাইন উদ্দিন, আপন ভাই আনিছ উদ্দিন এবং উপ পরিচালক জসীম উদ্দিন জড়িত বটে ।

জানা যায়, টেন্ডারের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মচারীদের মশুর ডাল ক্রয়ের জন্য সম্প্রতি একটি টেন্ডার আহবান করা হয়। এতে অংশ গ্রহণ করেন যথাক্রমে মেসার্স মাতৃছায়া ট্রেডার্স ১১৮/৯০ টাকা, মেসার্স এমরান এন্টারপ্রাইজ ১২২/৮০ টাকা, মেসার্স শাহজাহান ট্রেডার্স ১২৪/- টাকা, মেসার্স এম এ জি ট্রেডার্স ১২৬/- টাকা, মেসার্স ফোকাস ১২৬/৯৫ টাকা, মা এন্টার প্রাইজ প্রতি কেজি ১৩১/৫০ টাকা, নজির এন্ড সঙ্গ ১৩২/-টাকা এবং ফ্রেন্ডসীপ এন্টারপ্রাইজ ১৪৮/- টাকা। এমতাস্থায় বর্তমান ডিজির সাথে আতাতঃ করে প্রতি কেজি ১৪/-টাকা বেশী দরে মেসার্স নজির এন্ড সন্সকে মশুর ডালের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। যাহার নেপথ্যে বর্তমান ডিজির আপন ভাই আনিছ উদ্দিন ও উপ পরিচালক জসীম উদ্দিন নাটের গুরু হিসাবে কাজ করেন বলে জনৈক কর্মকর্তা জানান । উল্লেখ করা যায় যে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল নিয়োগসহ দেশী ও বৈদেশিক ক্রয়খাতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি নিত্যদিনের ঘটনা। ইতিপূর্বে বিভাগটির বৈদেশিক গাড়ী পাম্প ক্রয়খাতে ১০০ কোটি টাকার দূর্নীতি সংসদীয় কমিটি কর্তৃক প্রমাণিত হইলে সংসদীয় কমিটি যথাসময়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার আবু নাঈম মোঃ শহিদুল্লার চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করেন। ঘটনার আলোকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ দায়েরসহ, দুদক, মহামান্য হাইকোর্ট এবং সুপ্রীম কোর্টে কয়েকটি মামলা হয়। অদ্যবদি দুর্নীতি সমূহের কোন বিচার হয় নাই এবং সরকারী আমলাদের যোগসাজসে সবই ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে দুর্নীতির অভারণ্য ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর প্রতিনিয়তই তাহাদের দূর্নীতি ও অপকর্ম যথারিতি চালিয়ে যাইতেছে। পরিনামে বিগত বৎসরেও দেশব্যাপী শতাধিক পত্র পত্রিকায় ফায়ার সার্ভিসের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে স্বরণকালের আলোচনার ঝড় উঠে।

এক অভিযোগে বলা হয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের সাবেক পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ ও বদলী বানিজ্য, সরকারী অর্থ আত্মসাৎ, বঙ্গবন্ধু ফায়ার একাডেমির নামে জমি অধিগ্রহণে অর্থ আত্মসাৎ, সরকারী অগ্নি নির্বাপনের গাড়ী ও ইক্যুইপমেন্ট ক্রয়ে হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় বর্তমানে তার সিন্ডিকেট একই কায়দায় অধিদপ্তরটি লুটেপুটে খাচ্ছে। এছাড়াও তৎকালীন পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) হাবিবুর রহমান বিভিন্ন পদোন্নতিতে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমান পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম (যুগ্ম সচিব) বিভিন্ন নিয়োগ ও বদলী বানিজ্য হাবিবুর রহমানের সাথে যোগশাজসে করেন। অধিদপ্তরের অনেকেই জানেন, সাবেক পরিচালক হাবিবুর রহমান এখনো ফায়ার সাভির্সে কর্মরত। অর্থাৎ অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকান্ড তার কথা মতোই চলে। এসবের জন্য অধিদপ্তরের সকল সেক্টর তিনি নিজে সেভাবে সাজিয়ে দিয়ে গেছেন। বেশির ভাগ লোকই তার হাতে পদোন্নতি পেয়ে অধিদপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। তার সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা বর্তমান পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক (ওয়ারহাউজ ও ফা: প্রি:) মানিকুজ্জামান, সহকারী পরিচালক (অপারেশন) নজমুজ্জামান, উপপরিচালক (রাজশাহী) ওহিদুল ইসলাম, উচ্চমান সহকারী (রাজশাহী) শাহজাহান, সিনিয়র স্টেশন অফিসার (কক্সবাজার) খলিলুর রহমান সহ বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় হাবিবুর রহমানের সিন্ডিকেট সদস্য রয়েছে।

এই অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়, সম্প্রতি ফায়ারফাইটার নিয়োগে হাবিবুর রহমান তদ্বির করে ২০ জনকে চাকুরি দিয়েছেন। এছাড়াও ড্রাইভার নিয়োগে রয়েছে তার ১৫ জন। এদের কাছ থেকে জন প্রতি ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন সাবেক পরিচালক হাবিবুর রহমান। একই সাথে সিন্ডিকেট করে জনপ্রতি ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে ১০০ ড্রাইভার নিয়োগ দিয়েছেন বর্তমান পরিচালক ওয়াহিদুল ইসলাম। গত ০৫ ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখ চুরান্ত নির্বাচিত ১৫০ ড্রাইভারের তালিকা প্রকাশ করে। যার মধ্যে অনেকেই ভাইভায় অযোগ্য ছিলেন। তাদেরকেও টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেন। ওয়াহিদুল ইসলাম সাবেক পরিচালক হাবিবুর রহমান সিন্ডিকেটের লোক হওয়ার কারনে আগের সচিব তার যোগদান পত্র গ্রহণ করেন নাই। এরপর সেই সচিব বদলী হলে ওয়াহিদুল ফায়ার সার্ভিসে যোগদান করেন। তখন কথার ছলে হাবিবুর রহমান বলতেন সচিবকে সরিয়ে ওয়াহিদুল ইসলামকে যোগদানের পথ সুগম করেছেন তিনি। এ অধিদপ্তরের কিভাবে টাকা কামায় করার যায় তার সবই জানা সাবেক পরিচালক হাবিবুর রহমানের। তার সেই অভিজ্ঞতা থেকে বর্তমান পরিচালক ওয়াহিদুল ইসলাম কে পরিচালনা করা হচ্ছে। হাবিবুর রহমানের নির্দেশনায় ইতিমধ্যে ওয়াহিদুল ইসলাম প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নিয়োগ, বদলী ও কেনাকাটা থেকে।

হাবিবুর রহমানের যত দুর্নীতিঃ- সাবেক পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ ও বদলী বানিজ্য সরকারী অর্থ আত্মসাৎ, বঙ্গবন্ধু ফায়ার একাডেমির নামে জমি অধিগ্রহণে অর্থ আত্মসাৎ, সরকারী অগ্নি নির্বাপনের গাড়ী ও ইক্যুইপমেন্ট হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ও অপকর্মের বিষয় নিয়ে বর্ণনা করা হলো-

১। সম্পদ ও অর্থের তথ্যঃ সাবেক পরিচালক প্রশাসন অর্থ হাবিবুর রহমান এর ময়মনসিংহের টাউন হল মোড়ে ২টি বাড়ি (একটি নির্মানাধীন), জামালপুর-এ তাঁর বাড়ীর কাছে কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ ও সদর এ একটি ক্লিনিক, মিরপুর সাড়ে এগারতে ৬ তলা বিশিষ্ট দালান বাড়ী, তিখারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজ এর সামনে ইস্টার্ন হাউজিং এ ৬টি ফ্ল্যাট, পূর্বাচলে ১০ কাঠার ২টি প্লট ক্রয় এবং বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের নামে বেনামে ব্যাংকে শতশত কোটি টাকার এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র ক্রয়। তাছাড়া বাসায় প্রায় শত কোটি টাকার ডলার রয়েছে।

২। নিয়োগ বানিজ্যঃ সাবেক পরিচালক প্রশাসন (অর্থ) হাবিবুর রহমান এর আমলে বিভিন্ন পদে প্রায় ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রায় ৪,০০০ (চার হাজার) জনবল হাবিবুর রহমান নিজস্ব চ্যানেলে নিয়োগ বানিজ্য সম্পন্ন করতেন। হাবিবুর রহমান এর ভাইরা ভাই ফরিদ মেম্বার এর মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যান্ডিডেট এর নিকট থেকে এ সকল নিয়োগ বানিজ্যের টাকা লেনদেন করতেন। এ সকল টাকা সিনিয়র স্টেশন অফিসার হিরন এর মাধ্যমে ডলারে রূপান্তর করা হত।

৩। বদলী বানিজ্যঃ ফায়ার সার্ভিস বিভিন্ন পদে প্রায় ১৪,০০০ (চৌদ্দ হাজার) জনবল নিয়োজিত আছে। গত দুই থেকে আড়াই বছরে এই চৌদ্দ হাজার জনবলের মধ্যে প্রায় তের হাজার জনবল বিভিন্ন জায়গায়/দূর দূরান্তে বদলী করে এবং পুনঃরায় তাদের নিকট থেকে বিভিন্ন পদ ভেদে জনপ্রতি পঞ্চাশ হাজার, এক লক্ষ, দেড় লক্ষ করে টাকা নিয়ে তাদের সুবিধামত স্থানে বদলী করেন এবং নিজস্ব আত্মীয় স্বজনকে স্ব-স্ব জেলায় পদায়ন করা হয়। এর প্রমাণ হিসেবে বাংলাদেশের যে কোন ফায়ার স্টেশনে যে কোন স্টাফকে জিঙ্গাসাবাদ করলে সত্যতা পাওয়া যাবে।

৪। সরকারী অর্থ আত্মসাৎ ঃ সরকারী অগ্নি নির্বাপনের জন্য উপরে চাকচিক্য এবং ভিতরে কমদামি পার্স ব্যবহৃত গাড়ী ও কমদামী ইক্যুইপমেন্ট বেশি দাম দেখিয়ে ক্রয় করে শত শত কোটি টাকা সরকারী অর্থ আত্মঘাৎ করেন। যার প্রমান হিসেবে যে সকল গাড়ী ক্রয় করেন তার অধিকাংশ গাড়ীই এখন পূর্বাচলে মাটিতে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। সরেজমিনে তদন্ত করলে দেখতে পারবেন।

৫। বঙ্গবন্ধু ফায়ার একাডেমির নামে জমি অধিগ্রহণে অর্থ আত্মস্বাৎ বি.জে. সাজ্জাদ হোসেন এর বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় অবস্থিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু ফায়ার একাডেমি করার কথা কিন্তু দেশে গাজিপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত এত ভালো ভালো জায়গা থাকা সত্ত্বেও ডিপার্টম্যান্ট এর কথা বাদ দিয়ে নিজ স্বার্থের কথা চিন্তা করে নিজ উপজেলায় তাঁর ভাই মুরাদ হোসেন এর মাধ্যমে প্রায় ৫০ (পঞ্চাশ) একর জমি নদী মাতৃক এলাকায় অর্থাৎ নদীর জমি ক্রয় করেন। যাতায়াত ব্যবস্থায় একটি গাড়ি ঢুকলে আর একটি গাড়ী আসতে পারবে না। উল্লেখিত জমি যত টাকায় কেনা হয়েছে তাঁর তিনগুন দিয়ে মাটি ভরাট করে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। এ সকল কাজ কি দুর্নীতির আওতার মধ্যে পড়ে না, এটাই কি ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু ফায়ার একাডেমি করার স্বপ্ন। তাও আবার নদীর ভিতর। এগুলো কি দেশের মিডিয়া ও অন্যান্য কর্মকর্তার নজরে আসেনি। একবার একটু ভদন্ত করে দেখেন যে সত্যতা পাওয়া যায় কিনা
গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অদক্ষ জনবল পদায়ণগ্ন নারয়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ এলাকায় সেজান জুস কোম্পানীর আগুনে ৫২ জনকে হত্যা করা হয়। তার মূল কারণ হলো ফায়ার সার্ভিসের দক্ষ ফায়ারফাইটারদেরকে দূরবর্তী বদলী করায় এবং নতুন, আগুন দেখে ভয় পাওয়া ফায়ারফাইটারদের উল্লেখিত স্থানে পদায়ন করায় প্রাণহানি ঘটনার মূল কারণ।

৬। ড্রাইবার নিয়োগে অনিয়মঃ ড্রাইবারদের নিয়োগের বেলায় ভূয়া এবং হালকা কাগজপত্র দিয়ে ড্রাইবার নিয়োগ দেওয়ায় এবং তাঁদের আইডি কার্ড টেমপারিং করায় এবং ৪ মাস ট্রেনিং এর জায়গার ৮মাস ট্রেনিং করানোর পরও গাড়ি চালাতে পারে না। স্টেশন পর্যায়ে এসকল ড্রাইবারদের গাড়িতে ফারারফাইটাররা উঠে না। অযোগ্য ড্রাইবার নিয়োগ দেওয়াতে অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। যাহা সরেজমিনে তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে।

৭। হাবিবুর রহমান এর কুকর্মঃ প্রথমে সে লজিং মাস্টার হিসেবে এক বাড়িতে নিয়োজিত থেকে পড়াশুনা করা অবস্থায় ঐ বাড়িতে বিবাহ করে কিন্তু তার কু-চরিত্রের কারনে তাঁর স্ত্রী একটি সন্তান থাকা অবস্থায় বাধ্য হয়ে তাকে তালাক দেয়। পরবর্তীতে ২য় বিবাহ করেন। বরিশালের ডিসি থাকা অবস্থায় নারী নিয়ে ধরা খায় এবং তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে ঢাকায় আনা হয়। ফায়ার সার্ভিসের সুন্দর সুন্দর ফায়ারফাইটারদের নিয়ে সমকামী করতে থাকেন। যাহা স্বরাস্ট মন্ত্রণালয়ের তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় বিচার হয়। তাঁর কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারনে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন নারী কর্মচারীদের দূরবর্তী বদলী করে দেন। এছাড়াও তিনি বহিরাগত বিভিন্ন মেয়েদের সাথে শারিরীক সম্পর্ক করে তাদের তদ্বিরে বিভিন্ন লোকজন নিয়োগ দেন। এসব লোক বেশিরভাগ আউটসোর্সিং এ নিয়োগ দিয়েছেন। শারমিন সুলতানা নামের এক মেয়ের সাথে দৈহিক সম্পর্ক করে বনিবনা না হওয়া শারমিন সুলতানা বিভিন্ন দপ্তরে গত বছর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগও দেন। যা পরে দেন-দরবার করে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান (বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব) সুরাহ করেন। এ নিয়ে পুরো ফায়ার সার্ভিস ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ বিব্রত ছিল। এসব নারীবাজি নির্বিগ্নে করতে বেইলী রোড এক নারীকে একটি বাড়ী কিনে দেন হাবিবুর রহমান। যার সম্পূর্ণ টাকা তিনি দেন। যদিও ওই নারীকে তিনি বোন ডাকেন। তার বাসায় বিভিন্ন নারী নিয়ে আনন্দ প্রমোদ করেন হাবিবুর রহমান। অনেকেই অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমানকে নারী-পুরুষ খেকো বলে সম্বোধন করেন। এসব বিষয়ে গোপন তদন্ত করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।

৮। নিয়োগ বানিজ্যের টাকা ও সিন্ডিকেটের বিষয়ের তথ্য জানতে পারায় ড্রাইবার মোল্লা মাসুদ ও আজাদকে বদলী করা হয়।
এই অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ঠিক হাবিবুর রহমানের দেখানো পথেই হাটছেন বর্তমান পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) ওয়াহিদুল ইসলাম। বলা চলে ওয়াহিদুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক হাবিবুর রহমানের একনিষ্ঠ লোক। হাবিব যা বলে, সেটাই করেন ওয়াহিদুল ইসলাম। এসব নিয়ে অধিদপ্তরে সমালোচনার শেষ নাই। হাবিবুর রহমানের হাত ধরেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর মহা দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে রেখে গেছেন। যেটুকু ভালো আছে তা ধ্বংস করতে বর্তমান পরিচালক ওয়াহিদুল ইসলামকে সহযোগিতা করছেন হাবিব। পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) ওয়াহিদুল ইসলাম নিজেকে মাদারীপুরের আলোচিত জেলা প্রশাসক দাবী করে সকল কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেছেন। অভিযোগে এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ভেস্তে যাবে বলে উল্লেখ্য রয়েছে। এমনকি ধ্বংস হবে একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। এদের লাগাম এখনি টেনে ধরা জরুরী বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন অধিদপ্তরের একজন কর্মচারী।

আগামী পর্বে থাকছে উপ-পরিচালক (প্রশাঃ ও অর্থ) জসিম উদ্দিনের নারীবাজীর প্রতিবেদন।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।