TadantaChitra.Com | logo

২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ৮ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

নেতৃত্বশূন্য করতে ৪ মার্চ নওগাঁয় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা

প্রকাশিত : মার্চ ০৪, ২০২৩, ১১:২৬

নেতৃত্বশূন্য করতে ৪ মার্চ নওগাঁয় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা

তদন্ত চিত্র: জ ৪ মার্চ শনিবার। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এদিনটি অন্ধকার অধ্যায়। ২০০২ সালের ৪ মার্চ ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অপশাসনের আমল। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার উত্তরবঙ্গ সফরের অংশ হিসেবে নওগাঁয় ছিলেন। সেখানে তার ওপর চালানো হয় সন্ত্রাসী হামলা। এ হামলার মূল লক্ষ্য ছিল জাতীয় সংসদের তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যা। এ অপরেশনে সফল হলেই তো বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া নেতৃত্ব শূন্য হতো।

১৯৮১ সালে জাতির পিতার কন্যা দেশে ফেরার পর তাকে হত্যার জন্য ২১ বার চেষ্টা করা হয়। ২০০২ সালের ৪ মার্চ নওগাঁয় হত্যাচেষ্টা ছিল তার একটি। ৫ মার্চসহ পরের কয়েকদিনে দেশী বিদেশী একাধিক গনমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ পায়।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, শেখ হাসিনা নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের এক কর্মীসভায় যোগদান শেষে তার গাড়িবহর নিয়ে গাইবান্ধার উদ্দেশে রওনা হন। জেলা আওয়ামী লীগের অফিস থেকে কিছুদূর যাওয়ার পর গাড়িবহরের নিরাপত্তা কর্মীদের গাড়িটি পেছনে পড়ে যাওয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িটি পথিমধ্যে থামানো হয়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে রিকশায় আসা দেওয়ান খালিদ বিন হেদায়েত নামের এক যুবক শেখ হাসিনার গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। যুবকটি গাড়ির পতাকা স্ট্যান্ডটি ভেঙে নিয়ে সজোরে গাড়ির ওপর আঘাত করে। এ সময় ড্রাইভার জালাল দ্রুত গাড়িটি সরিয়ে নেয়ায় আঘাত লাগেনি। পরে খালিদ দ্বিতীয় গাড়ির ওপর হামলা চালায় এবং এতে সামনের একটি গ্লাস ভেঙে যায়। এই গাড়িটিও দ্রুত সামনের দিকে এগিযে নেয়া হলে গাড়িবহরের তৃতীয় গাড়ির ওপর হামলা চালানো হয়। এতে গাড়িটির পেছনের কাঁচ ভেঙে যায়। এই দুটি গাড়িতে শেখ হাসিনার একান্ত সচিব ও সহকর্মীরা ছিলেন।
জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টে বলা হয়, শেখ হাসিনার গাড়িতে হামলাকারী গ্রেফতারকৃত যুবক খালিদ বিন হেদায়েত বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারক রহমানের আপন মামাতো এবং সৎ ভাই। সে নওগাঁ শহরের চকমুক্তার মহল্লায় বসবাস করে। তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত খালিদ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল ফারুকের মামাতো ভাই, এক অর্থে সৎ ভাইও। জানা যায়, খালিদের পিতা মারা যাওয়ার পর কর্নেল ফারুকের পিতা ক্যাপ্টেন সৈয়দ আতাউর রহমান তার মাকে বিয়ে করে। তবে এই বিয়ে স্থায়ী হয়নি।
গাড়িতে হামলা কাঁচ ভাংচুর
দুপুরে নওগাঁ শহরের চকদেবপাড়ায আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল জলিলের বাড়িতে এক কর্মীসভা শেষ করে মধ্যাহ্নভোজ শেষে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যাওয়ার পথে এই হামলা চালানো হয়। বেলা ২টা ২৬ মিনিটে আব্দুল জলিলের বাড়ি থেকে গাড়িবহর বের হয়ে বিএসসি মহিলা কলেজের সামনে আসা মাত্র উল্টো দিক থেকে রিকশায় করে আসা এক যুবক রিকশা থেকে নেমে কমান্ডো স্টাইলে বিরোধীদলীয় নেত্রীর গাড়ির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় সে গাড়ির ডান পাশে দলীয় পতাকা লাগানো লোহার রডের ফ্ল্যাগস্টান্ড ভেঙে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে সজোরে আঘাত করে।
বিরোধী নেত্রীর গাড়ির ড্রাইভার জালাল মিয়া দ্রুত নিশান পেট্টল (নম্বর ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-০৫২৮) গাড়িটি বাম দিকে সরিয়ে নিলে সে বিরোধী নেত্রীর গাড়ির পিছনের এবং তার পিছনের গাড়িতে আঘাত করে। এতে ঢাকা মেট্টো-জ-৫৮৮৮ নম্বরের গাড়ির এবং ঢাকা মেট্টো-খ-১১-২১৫৯ গাড়ির পিছনের গ্লাস ভেঙে গেছে। বিরোধী দলীয় নেত্রীর গাড়িতে শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। পিছনের গাড়িগুলোতে বিরোধী নেত্রীর নিরাপত্তারক্ষীরা ছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সব সফর সঙ্গী অক্ষত রয়েছেন। দলীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন, বিরোধীদলীয় নেত্রীর অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শেখ হাসিনার প্রাণনাশের জন্যই এই হামলা চালানো হয়েছে। এদিকে এই হামলার ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী নেত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ডিএমপি সদস্য জাহাঙ্গীর হামলাকারী যুবককে ধরে ফেলে।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, একাধিক পত্রিকা খালিদকে পাগল বলে চালানোর চেষ্টা করলেও এসপি তা অস্বীকার করেছেন। তার পরিবারের দাবি সে বিএনপির কর্মী। নাম সর্বস্ব কিছু পত্রিকা তাকে যুবলীগ কর্মী বানানোরও চেষ্টা করেছে। দৈনিক জনকণ্ঠের আরও একটি ফলোআপ রিপোর্টের শিরোনাম ছিল, ‘খালিদের কাছে ইসলামী ব্যাংকের দুই লাখ ২০ হাজার টাকার দুটি চেক!’ এতে উল্লেখ রয়েছে দুটো চেকই ইসলামী ব্যাংকের। তার কাছে বেশকিছু চিরকুটও পাওয়া গেছে। একটি আরবি হরফের লেখা।
জানা গেছে, তাকে গ্রেফতারের পর থেকেই পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে তাকে হস্তান্তর করার জন্য নির্দেশ এসেছিল। অবশ্য পরে তাকে রংপুরের এসপির কাছে হস্তান্তর করা হয়। শুরুতেই ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে বিশেষ মহল তৎপর ছিল। তবে এই বিষয়ে মামলা হলেও বিএনপি-জামায়াত সরকার মামলার তদন্ত কাজ থামিয়ে দেয়। ফলে মামলাটি আর এগোয়নি। সব তথ্য উপাত্ত তথা আলামত ধ্বংস করে অপরাধীর পার পাওয়ার রাস্তা বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় থাকতেই করে দেয়।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

আজাদ টাওয়ার ৪৭৬/সি-২, ডিআইটি রোড ৭ম তলা, মালিবাগ রেলগেইট, ঢাকা-১২১৯

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২ , ০১৯৩৪৩৪১৬১৮

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।