TadantaChitra.Com | logo

২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

উচ্চ আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কচু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর ও মামলাবাজ মোশারেফের জমি জবর দখলের চেষ্টা! ভোলা ভেদুরিয়া মাঝিরহাটের মুর্তিমান এক আংতঙ্কের নাম মামলাবাজ মোশারেফ!

প্রকাশিত : জুলাই ২৭, ২০১৮, ১৭:২৫

উচ্চ আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কচু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর ও মামলাবাজ মোশারেফের জমি জবর দখলের চেষ্টা! ভোলা ভেদুরিয়া মাঝিরহাটের মুর্তিমান এক আংতঙ্কের নাম মামলাবাজ মোশারেফ!

ভোলা জেলা সংবাদদাতা: দ্বীপ অঞ্চল ভোলা জেলায় প্রতিনিয়ত ঘটে চলছে নানা রকম ঘটনা। কেউ নেশার পাগল কেউ আবার বিভিন্ন ফন্দি ফিগিরে ব্যস্ত। এখানকার বসবাস কারীগন সম্পূর্ন মৌলিক অধিকার জন্য বিভিন্ন হারভাঙ্গা পরিশ্রম করে থাকেন। এই অঞ্চলের একটি বিরাট অংশ বেকারত্ব থাকার কারনে অভাবের তারনায় অনেকেই বিভিন্ন রকম কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ করছেন চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, লুঠপাট, ভূমিদস্যুতা, জলদস্যুতাসহ অন্যর জমি জবর দখল করা এখানকার প্রতিদিনের ঘটনা। এ অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ নদীতে মাছ ধরে আর তা বাজারে বিক্রি করে সংসার চালান। মামলা আর হামলা এ অঞ্চলের বিরাট একটি সমস্যা। এখানকার মানুষ সকল প্রতি কুলতার সাথে মোকাবেলা করেও মামলা ও হামলার কাজ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। কিছু লোক এ মামলাকে পুঁজি করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায়ের লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকেন সার্বক্ষনিক। তেমনি আমাদের অনুসন্ধানে এমন একজন মামলাবাজ ব্যক্তি পাওয়া গেছে। ভোলা জেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নে তার বসবাস। থানা ও কোর্ট কাচারী যেন তার হাতের মুঠোয়। তাই তাকে নিয়ে আমাদের এ প্রতিবেদন।
ভোলা থানাধীন ভেদুরিয়া ইউনিয়নের এলাকাবাসীর কাছে মুর্তিমান এক আংতঙ্কের নাম মামলাবাজ মোশারেফ হোসেন। ইনকাম রোজগার না করলেও হয়ে গেছেন অবৈধ পথে বিশাল অর্থবিত্তের ও জমি জমার মালিক। ভন্ডামী আর মানুষের নামে মামলা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। মামলাবাজ মোশারেফ ছোট থেকেই বিচক্ষন ও চতুর প্রকৃতির লোক। সূত্রে জানা যায়, সাধারন মানুষের নামে মামলা করে জমি আত্মসাৎ করা মোশারেফের নেশা ও পেশা হয়ে দাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে মামলাবাজ মোশারেফ পুলিশ প্রশাসনকে বোকা বানিয়ে এলাকার সাধারন মানুষসহ তার আপন ভাই ভাতিজার নামে ৫০-৬০ টা মামলা করেছে। কিছু মামলা বিচারে খালাস হলেও অন্য মামলা গুলো স্বাক্ষীর তারিখে স্বাক্ষী হাজির না করাতে এমনকি কয়েক তারিখ নিজে হাজির না থাকাতে ২৪৭ ধারায় খালাস হওয়ার পর মোশারেফ পুনরায় কোর্টে ধান কাটার মামলা করেন ঐ আসামীদের নামে। এমনকি নিজের ঘরে তার স্ত্রীকে দিয়ে আগুনে জ্বালাইয়া অন্যদের নামে মামলা করতে দ্বিধা করেন নাই মোশারেফ। সূত্রে জানা যায়, মোশারেফ হোসেন এখন মামলাবাজ নামে এলাকায় পরিচিত লাভ করে আসছেন। নিজের হীন স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাধারন মানুষ সহ আপন ভাই ভাতিজাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে আসছেন দীর্ঘদিন। অন্যদিকে মামলাবাজ মোশারেফকে সহযোগিতা করে আসছেন ভোলা ধনিয়া এলাকার জাহাঙ্গীর নামের আরেক মামলাবাজ। এই দুই প্রতারকের খপ্পরে এখন অনেক সাধারন মানুষ অসহায় জিবন যাপন করছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ডের অভিযোগসহ চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মামলাবাজ, চাঁদাবাজ মোশারেফ ও জাহাঙ্গীর তালুকদার মিলে ভোলা জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকার বিরোধী জঙ্গি সংগঠন তৈরি করে আসছেন এমনও অভিযোগ বিদ্যমান রয়েছে। সূত্রে আরো জানা যায়, মামলাবাজ মোশারেফ যদি প্রতি মাসে দুই তিন দিন কোর্ট কাচারীতে না যেতে পারে তাহলে মাথা গরম থাকে। তাই সে প্রতি মাসে একটার পর একটা অভিযোগ এনে ভাই-ভাতিজা সহ এলাকার নিরীহ মানুষের নামে মামলা করে আসছে। বর্তমানে নিজে মামলা না করলেও জাহাঙ্গীর তালুকদার ও এলাকার অন্য মানুষ দিয়ে মামলা করে আসছে। মূলত তার মামলা গুলো হয়রানী ও অর্থ আত্মসাতের জন্য করে আসছে বলে এলাকাবাসী জানান। যদিও ভাই ভাতিজাদের নামে যে মামলা গুলো করছেন প্রতিটি মামলা জমিজমা সংক্রান্ত বলে আসছে। তবে এলাকাবাসীর প্রশ্ন জমিজমা সংক্রান্ত হলে তিনি বাটারা আইনে আদালত করতে পারতেন। তা না করে সে কেন ফৌজদারী মামলা করে আসছে? এমন প্রশ্ন সাধারন মানুষের মাঝে। এক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীও রস্যজনক ভুমিকায়। অন্যদিকে কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার ঘাড়েও পড়ছে মামলাবাজ মোশারেফের অপকর্মের সাহায্যকারী হিসাবে তেমনি বললেন এলাকাবাসী। তারা জানান, যদি থানায় অভিযোগ দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে পুলিশ যে প্রাথমিক তদন্ত করে ঘটনাস্থলে না এসে মামলাবাজ মোশারেফ থেকে টাকা নিয়ে এজাহার করে আসামীদেরকে হয়রানী করতে থাকে। এর তালিকায় রয়েছেন বর্তমানে ভোলা থানায় কর্মরত কয়েকজন এস আই ও এ এস আই।
মোশারেফের আরেক সহযোগী কচু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরের মিথ্যা মামলা থেকে নির্দোষ প্রমানিত আসামীরাঃ


মামলাবাজ ও ভূমিদস্যু ভোলা জেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে কচু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর তালুকদার কর্তৃক দাখিলকৃত মিথ্যা মামলা হুবাহুব তুলে ধরা হলঃ প্রতারক ও মামলাবাজ জাহাঙ্গীর তালুকদারের কেস এই যে, আসামীদের সাথে বাদীর জমিজমা নিয়ে বিরোধ আছে। নালিশী জমি বাদী ও তার স্ত্রী ক্রয় সূত্রে মালিক দখলকার থেকে উক্ত জমিতে বাগান ও পুকুর সৃজন করে পিলার দ্বারা জমির সীমানা স্থাপন করে। আসামীগন দূর্লোভেরব শবতী হয়ে বাদীর দখলি সম্পত্তি হতে তাকে বেদখল করার জন্য ষরযে লিপ্ত হয়। আসামীদের চাপ ও হয়রানীর কারনে বাদী জমি বিক্রী করতে বাধ্য হয়। উক্ত জমি ১নং সাক্ষী কাশেম মাঝি ও ৬ নং সাক্ষী গিয়াসউদ্দীন ক্রয় করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। ঘটনার তারিখ অর্থাৎ ১০/০৫/২০১৫ইং তারিখ সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময় সাক্ষী আবুল কাশেম মাঝি ও গিয়াস উদ্দিন জমির সিমানা ও পিলার দেখতে যান। ১/৬নং সাক্ষী বায়না বাবদ বাদীকে একলক্ষ টাকা প্রদান করেন। আসামীগন বিষয়টি জানতে পেরে আসামী জহিরুল ইসলাম এর হাতে থাকা লাঠি দ্বারা বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি ডান হাত দিয়ে ঠেকালে তার হাতে ফলা জখম হয়। আসামী জিয়ারুল ইসলাম বাদীর হাতে পায়ে লোহার রড দিয়ে ৪/৫ টি আঘাত করলে তার শরীলে ফুলা জখম হয়। আসামী মো: ডালিম বাদীর বুকে,পিঠে,সিনায় ৮/১০ টি ঘুষি মারে এবং তিনি মাটিতে লুটাইয়া পড়ে যান। এক পর্যায়ে আসামী তার লুঙ্গির গোছায় থাকা জমি বিক্রীর বায়না বাবদ ১,০০.০০০/- টাকা জোর পূর্বক নিয়ে যায়। আসামী ডালিম বাদীর পকেটে থাকা মোবাইল ও আসামী জিয়ারুল ইসলাম তার হাত হতে ঘড়ি নেয়। বাদী আসামীদের কবল হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন ও সাক্ষীগন ঘটনাস্থলে আসলে আসামী গন এই মর্মে হুমকি প্রদান করে যে তাদরে বিরুদ্ধে কোন প্রকার মামলা করলে খুন জখমের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
বিচার্য বিষয়ঃ
১। বিগত ১০/০৫/১৫ইং তারিখ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় ভোলা থানাধীন ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ০৪নং ওয়ার্ডস্থ আসামীগন বাদীর ভোগ দখলীয় সম্পত্তিতে অনাধিকার প্রবেশ করে বাদীকে মাইরপিট করেছে, বাদীর পকেট থেকে ১০০,০০০/- টাকা মোবাইল নিয়ে গিয়াছে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন কি ?
২। উক্তরূপ অপরাধে আসামীগন দন্ডবিধির ৪৪৭/৩২৩/৩৭৯/৫০৬(২) ধারার অপরাধে প্রকৃত দোষী কি ?
৩। আসামীগন শাস্তী পাবে কি ?
আলোচনা ও সিদ্ধান্ত: ১-৩ নং বিচার্য বিষয়ঃ
সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত সুবিধর্থে ১-৩নং বিচার্য বিষয় সমূহ এক লওয়া হল। এই মামলার বাদীপক্ষ ০৬ (ছয়) জন সাক্ষী গ্রহন করেন।
অত্র মামলার বাদী মো: জাহাঙ্গীর তাং পি,ডব্লিও-১ হিসাবে তাহার জবানবন্দী বলেন আমি বাদী। আসামী জহিরুল, জিয়ারুল, ডালিম, মোতালেব, সালাহউদ্দীন মোট ৭ জন। ২৭ শে বৈশাখ রবিবার সকাল দশটায় এস.এ ১০৮ নং খতিয়ানে ঘটনা। আমি ভেদুরিয়া জমি কিনি। ৪ বছর দখল করি। অন্যত্ত বিক্রি করার কথা বলি। জনৈক গিয়াসউদ্দিন এর সাথে বায়না করি। জমির দখল দিতে গেলে আসামী জহিরুল আমাকে বাশের লাঠি দিয়ে ৪/৫ টা বারি দেয়। ডালিম ৪/৫ টা ঘুষি দেয়। আমি পড়ে গেলে জহিরুল লুঙ্গির কোচা থেকে ১ লাখ টাকা নেয়। নালিশী দরখাস্ত প্র-১,১/১।
জেরায় তিনি বলেন, আসামীদের সাথে জমি জমা নিয়ে মূলে বিরোধ। জমি আমি ভোগ দখল করেছিলাম। ২০ বছর যাবৎ আসামীরা আমাকে না: জমি থেকে বেদখল করেছে। ১ বৎসর যাবৎ ভেদুরিয়া যাই না। এই খতিয়ানে আসামীদের জমি থাকলে কাগজ দেখাইয়া নিয়া যাক। আমি আদালতে কোন মামলা করি নাই। ঘটনাস্থলে ৩/৪ মাস পর যাওয়া হয়। জমির সুষ্ঠু ফয়সালা পেলে আসামীদের বিরুদ্বে কোন অভিযোগ নাই। আমার বাড়ি থেকে ঘটনাস্থল ৭/৮ মাইল দূরে। আমার নামীয় খরিদা দলিল দাখিল করেছি। ঘটনার ইংরেজী তারিখ বলতে পারব না। গেছে বৈশাখের আগের বৈশাখ মাসে ঘটনা। তবে বাংলা সাল বলতে পারব না। আজকে বাংলা ফাল্গুন মাস। ২৮ তারিখ। মোবাইলের মডেল নম্বর বলতে পারব না। সীম নাম্বার খেয়াল নাই। মোবাইল কেনার ক্যাশ মেমো দাখিল করি নাই। ২ টি বান্ডিল ছিল। ১০০ টি ৫০০/- টাকার নোট ও ৫০ টি ১০০০/- টাকার নোট ছিল। টাকা নেয়ার সময় আমি বাধা দিয়াছি। আসামিরা আমাকে মাইরপিট করেছে ও হুমকি ধামকি দিয়েছে। আমি থানায় যাই নাই। সাক্ষী কাশেম মাঝি আমার স্ত্রীর বড় ভাই। স্বপন আমার বড় শালার ছেলে। আ: শহিদ আমার শালা। রাহিজল আমার শশুড়। সাক্ষীরা সকলেই আমার আন্তীয়। মনোয়ারা আমার স্ত্রী। আখতার হোসেন শ্যালক। ২ জন স্বাক্ষী বাইরের। খতিয়ানে মোট আমার জমি ৫৯ শতক। ৪ টি দাগ। কোন দাগে জমি কতটুকু বলতে পারব না। ২৬৮২ও ২৬৯৯ দাগ আমার দাবী। পশ্চিমে মোশাররফ। আসামী মোতালেব জমি ভোগ দখল করে। আমি হাসপাতালে ভর্তি হই নাই। ঘটনার দিনে মামলা দায়ের করেছি। কোর্ট থেকে ঘটনাস্থল ৫/৬ মাইল দূরে। সকাল ১০ টার সময ঘটনা। রাত ৮ টার সময় আদ্লাতে মামলা দায়ের করেছি। ঘটনাস্থলে প্রথম আসে মোতালেব। সবার শেষে ছালাউদ্দিন আসে।
ঘটনা স্থলের উত্তর পাশে শহীদ মান্নানের বাড়ী। দক্ষিন পাশে আকবর জয়নালদের বাড়ি, পূর্ব পাশে সরকারি রাস্তা, পশ্চিম পাশে মোশারফেদের বাড়ী। এসব বাড়ি কোন লোক সাক্ষী নাই। সত্য নয় জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় মিথ্যা মামলা করেছি। সত্য নয় আমার বর্নিত মতে কোন ঘটনা ঘটে নাই।
সাক্ষী মো: কাশেম মাঝি সাক্ষী-২ হিসাবে তাহার জবানবন্দী বলেন, আসামী জহিরুর,জিয়ারুল, ডালিম ,মোতালেব, ফরিদ, আরিফ, সালাহউদ্দিন। ঘটনার তারিখ মনে নাই। বাদীর জমিতে ঘটনা। ৪ বছর ধরে দখল করে। ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম। বাদী সেখানে গেলে আসামীরা বাদীকে মারধর করে। আমরা ভয়ে সরে যাই। মতি গতি দেখে ভয়ে সরে যাই।
বিজ্ঞ আইনজীবি অনুপস্থিত থাকায় জেরা হয় নাই।
সাক্ষী গিয়াসউদ্দীন সাক্ষী-৩ হিসাবে তাহার জবানবন্দী বলেন, আসামীদের নাম জহুরুল, জিয়ারুল, ডালিম, মোতালেব, ফরিদ সহ মোট ৭ জন। ঘটনার তারিখ বৈশাখ মাসের ২৭ তারিখ রবি বার সকাল ১০ টার সময় বাদীর জমিতে ঘটনা। বাদীর বাড়ী ধনিয়া। বাদী ভেদুরিয়া ৪ নং ওয়ার্ডে জমি কিনেছে। পরে বাদী এ জমি আমার কাছে বিক্রী করতে চায়। দরদাম সাব্যস্থ প্রতি গন্ড ৭৫ হাজার টাকা। জমি ছিল ৭ গন্ডা। আমি বায়না হিসেবে ১,০০,০০০ টাকা বাদীকে দেই। বাদী আমাকে জমি বুঝ দিতে আসে। সাথে ৭/৮ জন লোক ছিল। তখন আসামীরা বাধা দেয়। জহুরুল লাঠি দিয়ে বাদিকে বারি দেয়। বাদী মাটিতে পড়ে গেলে জহুরুল বাদীর কোচ থেকে আমার দেয়া ১ লাখ টাকা নিয়ে যায়। জিয়ারুল বাদীর মোবাইল নিয়ে যায়। ডালিম বাদীকে কিলঘুষি মেরে বাদীর ঘড়ি নিয়ে যায়।
জেরায় তিনি বলেন, আমার গ্রাম চর রমেশ। ঘটনাস্থল থেকে আমার বাড়ী ১ কি: মি: দুরে। বাদীর বাড়ি থেকে আসামীদের বাড়ি ৬/৭ মাইল দুরে। জমির দাগ খতিয়ান নম্বর বলতে পারবো না। এই খতিয়ানে কে কতটুকু জমির মলিক জানিনা। ঘটনার ইংরেজী তারিখ বলতে পারব না। ঘটনার বাংলা সাল বলতে পারব না। ঘটনা আমি দেখেছি । আমি জমি বুঝ নিতে গিয়েছিলাম। ১০ টার সময়ে ঘটনাস্থলে যাই। ১১ টার সময়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসি। বাদীর সাথে আসামীদের মামলা আছে কিনা জানিনা। আমি যাওয়ার পরে আসামীরি ঘটনাস্থরে চলে আসে। বাদীর সাথে জমি কেনাবেচার কারনে সম্পর্ক হয়েছে। মাইরপিট করার সময় আমি বাধা দিয়াছি। আমি বাদীকে হাসপাতালে নিয়ে যাই নাই। আমি ৫০০/- টাকার একটি বান্ডিল ও ১০০০/- টাকার একটি বান্ডিল দিযাাছলাম। সত্য নয় ঘটনার দিনে আমার বর্নিত মতে কোন ঘটনা ঘটে নাই। সত্য নয় আমি বাদীকে দ্বারা এই মামলা করাইয়াছি। সত্য নয় মিথ্যা সাক্ষী দিলাম।
সাক্ষী স্বপন সাক্ষী-৪ হিসাবে তাহার জবানবন্দী বলেন, আসামীদের নাম জহির, জিয়া, ডালিম, আ: মোতালেব,পরিদ , াারিফ, সালাউদ্দিন। ঘটনার তারিখ গত বৈশাখের আগের বৈশাখের ২৭ তারিখ রোজ রবিবার সকাল ১০ টার সময় মাঝির হাটের উত্তর পাশে ঘটনা। বাদী গিয়াসউদ্দীনের কাছে জমি বিক্রী করেছে। মাঝির হাটে বায়নাপত্র হয়। বাদী গিয়াসউদ্দীনকে নিয়ে জমিতে যায়। তখন ডালিম, জিয়ারুল, মোতালেব বলে যে কিসের জমি। তোমার কোন জমি নেই। তখন বাদী বলে আমার জমি আছে এবং আমি বিক্রী করব।
জেরায় তিনি বলেন ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম। সত্য নয় মিথ্যা সাক্ষী দিলাম।
সাক্ষী আজহার সাক্ষী-৫ হিসাবে তাহার জবানবন্দী বলেন, আসামীদের নাম জহুরুল, জিয়া। অন্যদের নাম জানি না। ঘটনার তারিখ গেছে বৈশাখের আগের বৈশাখ ২৭ তারিখ সকাল ১০ টায় জমিতে ঘটনা। আমি কাছে যাই নাই। আমি কিছু দেখিনাই। আসামী জেরা করেন।
সাক্ষী মনোয়ারা বেগম সাক্ষী-৬ হিসাবে তাহার জবানবন্দী বলেন, আসামীদের নাম আ: রব, জহিরুল, জিয়ারুল, ডালিম, আরিফ। ঘটনার তারিখ গত বৈশাখের আগের বৈশাখের ২৭ তারিখ রবিবার সকাল ১০ টার সময় চর ভেদুরিয়ায় আমাদের জমিতে ঘটনা। আমি জমি বিক্রীর জন্য ১ লক্ষ টাকা বায়না নিয়াছি। আমার জমি বুঝ দিতে গেলে আসামীরা আমাদের মাইরপিট করে ১ লাখ টাকা নিয়া গিয়াছে। আসামীরা মোবাইল নিয়াছে। জহিরুল ১ লাখ টাকা, জিয়ারুল মোবাইল, ডালিম হাতের ঘরি নিয়াছে।
জেরায় তিনি বলেন, ধনিয়া থেকে ঘটনাস্থল ১০ মাইল দুরে হবে। আমরা সবাই ধনিয়াতে থাকি। আজকে বাংলা কোন মাসের কত তারিখ তা জানিনা। কোন সালে ঘটনা জানি না। বাদী আমার স্বামী। আমি ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিলাম। নদী ভাঙ্গার কারণে আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই নিয়ম। সাক্ষী স্বপন আমার ভাইপো। সাক্ষীরা সবাই আমার আত্মীয়। জমির চারপাশের চৌহদ্দি বলতে পারবো না। জমির দাগ/খতিয়া বলতে পারবো না। জমি আমার ও আমার স্বামীর নামে কেনা। জমির দলিল দাখিল করেছে কিনা জানি না। ডান পাশের আসামীর নাম ডালিম, তার পাশে মোতালেব তার পাশে জিয়ারুল। সত্য নয় আসামীদের চিনি না। আমি এখন আসামীদের নাম দেখে চিনতে পারবো না। ১ হাজার নোট ১০০ টি ছিল। অন্য কোন নোট ছিল না। কোন কোম্পানীর মোবাইল ও ঘড়ি ছিল জানি না। আমার স্বামী হাসপাতালে ভর্তি হয় নাই। ঘটনাস্থলে সবার শেষে ডালিম এসেছে। ডালিম কয়টায় এসেছে জানি না। মোতালেব ১০ টার সময় এসেছে। অন্যান্য আসামীরা কে কয়টার সময় এসেছে বলতে পারবো না। সত্য নয় আসামীরা ঘটনাস্থলে ছিল না। সত্য নয় আমার স্বামী মিথ্যা মামলা করেছে। সত্য নয় মিথ্যা সাক্ষী দিলাম।
বাদীপক্ষকে এখন সন্দেহাতীতভাবে প্রমান করতে হবে যে, ঘটনার তারিখ ও সময় আসামীগন বাদীর ভোগ দখলীয় সম্পত্তিতে অনাধিকার প্রবেশ করে বাদীকে মাইরপিট করেছে, বাদীর পকেটে থেকে ১,০০,০০০/- টাকা ও মোবাইল নিয়ে গিয়েছে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন। বাদী মোঃ জাহাঙ্গীর তালুকদার পি,ডব্লিও-১ হিসাবে নালিশী দরখাস্তের সমর্থনে জবানবন্দি প্রদান করেছেন। তিনি জবানবন্দিতে ঘটনার তারিখ ২৭ শে বৈশাখ রবিবার সকাল ১০ টা বলেছেন। তবে ঘটনার সাল বলতে পারেন নাই। তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন যে, তিনি ভেদুরিয়া জমি কিনে। সে জমি গিয়াস উদ্দিনের সাথে বায়না করে। জমির দখল দিতে গেলে আসামী জহিরুল তাকে বাশের লাঠি দিয়ে ৪/৫ টা বারি দেয়। অন্যান্য আসামীরা তাকে মারধর করে। আসামী জহিরুল লুঙ্গির গোছার থেকে ১,০০,০০০/- টাকা নিয়ে যায়। আসামীপক্ষের জেরাতে পি, ডব্লিও-১ বলেছেন, ২০ বছর যাবৎ আসামীরা তাকে নালিশী জমি থেকে বেদখল করেছে। দেড় বছর যাবৎ ভেদুরিয়া যান। জমির সুষ্ঠ ফয়সালা পেলে আসামীদের বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নাই। সাক্ষী কাশেম মাঝি তার স্ত্রীর বড় ভাই। স্বপন তার বড় শালার ছেলে। আঃ সহিদ তার শালা, রহিজল তার শশুড়। মনোয়ারা তার স্ত্রী। আখতার হোসেন তার শ্যালক। অর্থাৎ সাক্ষীগন সকলেই তার আত্মীয়। পি,ডব্লিও-১ কোন দাগে কতটুকু জমি তা বলতে পারেন নাই। তিনি জেরায় আরো বলেছেন যে, আসামী মোতালেব জমি ভোগ করে। পি,ডব্লিও-১ জেরাতে আরো বলেছেন যে, ঘটনাস্থলের চারপাশে যেসব লোকদের বাড়ী আছে। এসব বাড়ী কোন লোক সাক্ষী করেন নাই। অর্থাৎ পি,ডব্লিও-১ এর জেরা প্রদত্ত বক্তব্য দ্বারা প্রমান হয় যে, তফছিল বর্নিত জমিতে বাদীর দখল নাই। এবং তিনি জমির সুষ্ঠ ফয়সালা পেলে তার অভিযোগ নাই এবং মামলার সাক্ষীগন তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তাছাড়া ঘটনাস্থলের চারপাশের লোকজন তার মামলায় সাক্ষী নাই। তাছাড়া মামলার ঘটনাস্থল হল ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আর বাদীর বাড়ী হল ধনিয়া ২ নং ওয়ার্ড। ঘটনাস্থল থেকে বাদীর বাড়ীর দুরত্ব ১০ মাইল ইহা বাদীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম পি,ডব্লিও-৬ হিসাবে তার জেরাতে স্বীকার করেছেন। তাছাড়া বাদী গিয়াস উদ্দিনের কাছে জমি বিক্রয়ের জন্য বায়না করেছেন এই মর্মে কোন বায়না চুক্তি নাই। তাছাড়া বাদী বায়না বাবদ ১ লক্ষ টাকা কোন তারিখে কোন স্থানে গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে গ্রহণ করেছেন তার কোন বর্ণনা নালিশী দরখাস্তে উল্লেখ নাই। এমন কি বাদী তার জবানবন্দিতে বলেন নাই যে গিয়াস উদ্দিন বায়না বাবদ তাকে ১ লক্ষ টাকা দিয়েছে। তাই গিয়াস উদ্দিন বাদীকে জমি কিনার জন্য বায়না বাবদ এক লক্ষ টাকা দিয়েছিল উক্ত টাকা আসামী জহিরুল নিয়েছে ইহা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমান হয় না। ঘটনাস্থল থেকে বাদীর বাড়ী ১০ মাইল দুরে হওয়ায় এবং জমিতে বাদীর দখল না থাকায় আসামীগন উক্ত জমিতে অনুপ্রবেশ করে বাদীকে মারপিট করেছে এবং মোবাইল নিয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাছাড়া ১ লক্ষ টাকা কি ধরনের নোট ছিল সে বিষয়ে পি,ডব্লিও-১ তার জেরাতে বলেছেন যে ১০০টি ৫০০/- টাকার নোট ও ৫০টি ১০০০/- টাকার নোট ছিল। সাক্ষী গিয়াস উদ্দিন পি,ডব্লিও-৩ তার জেরাতে বলেছেন যে, ৫০০/- টাকার ১ বান্ডিল ও ১০০০/- টাকার একটি বান্ডিল দিয়েছিলাম। বান্ডিল বলতে সাধারনত ১০০টি নোটের সমষ্টিকে বুঝায়। ফলে ৫০০/- টাকার ১ বান্ডিল ও ১,০০০/- টাকার ১ বান্ডিলে ধারায় ১,৫০,০০০/- টাকা। একই বিষয় বাদীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম পি,ডব্লিও-৬ হিসাবে তার জেরাতে বলেছেন যে, ১ হাজার টাকার নোট ১০০টি ছিল। ফলে বাদীর কাছে ১,০০,০০০/- টাকা ছিল ইহা স্বাভাবিকভাবে বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাছাড়া বাদীর বাড়ী থেকে ১০ মাইল দুরবর্তী স্থানে ১,০০,০০০/- টাকা বাদীর লুঙ্গির কোচায় ছিল তাও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাছাড়া ১,০০,০০০/- টাকা ৫০০/- টাকার বান্ডিল লুঙ্গির কোচার মধ্যে স্বাভাবিকভাবে রাখা যায় না। পি,ডব্লিও-২ মোঃ কাশেম মাঝি বাদীর স্ত্রীর বড় ভাই। পি,ডব্লিও-৪ স্বপন বাদীর বড় শালার ছেলে। তাই তারা পক্ষাশ্রিত সাক্ষী বলে আমি মনে করি। তাছারা তারা জবানবন্দীতে আসামীদের সম্পৃক্ত করে সুনির্দিষ্ট ভাবে কােন বক্তব্য দেন নাই। বরং পি,ডব্লিউ-৪ তার জবানবন্দীতে বলেছেন যে, মাঝির হাটে উত্তর পাশে ঘটনা। অথচ ঘটনাস্থল মাঝির হাটের আশেপাশে নয়। পি,ডব্লিউ-৫ আজাহার বাদীর কোন আন্তীয় নয়। তিনি জবানবন্দীতে আসামীদের সম্পৃক্ত করে কোন বক্তব্য দেন নাই। পি,ডব্লিও-৬ মনোয়ারা বেগম বাদীর স্ত্রী। তিনি একজন পক্ষাশ্রীত সাক্ষী বলে আমি মনে করি। বাদি পক্ষের উপস্থীত ৬ জন সাক্ষীর মধ্যে পি,ডব্লিউ-৫ একজন নিরপেক্ষ সাক্ষি বলে আমি মনে করি। তবে তিনি ঘটনার তারিখ ও সময় ব্যাতীত অন্য কিছু বলেন নাই। ফলে বাদীর মামলা কোন স্থানীয় নিরপেক্ষ সাক্ষীর বক্তব্য দ্বারা সমর্থিত হয় নাই।
ফলে উপরোক্ত আলোচনা, বাদীপক্ষের সাক্ষীদের বক্তব্য, নালিশী দরখাস্ত পর্যালোচনায় ও পারিপার্শিক অবস্থার আলোকে বাদীপক্ষ ইহা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমান করতে সক্ষম হয় নাই যে, ঘটনার তারিখ ও সময় আসামীগন বাদীর ভোগ দখলিয় অনইধকার প্রবেশ করে মারপিট করেছে, বাদীর পকেটে থাকা ১,০০,০০০/- টাকা ও মোবাইল নিয়া গিয়াছে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন। ফলে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বাদী পক্ষ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমান করতে না পারায় আসামী গন উক্ত অভিযোগের দায় হতে খালাস পাবে মর্মে সিদ্বান্ত হলো।
অতএব, আদেশঃ
বাদীপক্ষ এই মামলায় আসামী (১) মোঃ জহিরুল ইসলাম, (২) জিয়ারুল ইসলাম, (৩) মো: ডালিম, সর্ব পিতা আ: মোতালেব, সর্ব সাং- ভেদুরিয়া, ৪ নং ওয়ার্ড, থানা ও জেলা- ভোলা’দের বিরুদ্বে দন্ডবিধির ৪৪৭/৩২৩/৩৭৯/৫০৬(২) ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমান করতে না পারায় আসামীদেরকে উক্ত ধারার অভিযোগের দায় হতে খালাস দেয়া হল।
আসামীদের বিরুদ্বে প্রেরিত W/A রিকল করা হোক।
আসামীদের জামিনদারদের স্ব-স্ব জামিননামার দায় হতে অব্যাহতি দেয়া হল।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।