TadantaChitra.Com | logo

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রামের কিংখ্যাত উপ-পরিচালক জসিমের বদলী বাণিজ্য!

প্রকাশিত : এপ্রিল ০৬, ২০২৩, ১৬:০৬

চট্টগ্রামের কিংখ্যাত উপ-পরিচালক জসিমের বদলী বাণিজ্য!

অভিযোগ নিয়ে অচেনা কোন সাংবাদিকের সাথে কথা বলিনা!… ওয়াহিদুল ইসলাম, পরিচালক

চমকপ্রদেয় অনুসন্ধানী ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ পড়ুন প্রথম পর্ব.. পরের পর্বে থাকছে জসিম উদ্দিনের নিয়োগ, বদলী, ফায়ার সেপ্টিপ্ল্যান ও টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ

খান শান্ত ॥
১৯৩৯-৪০ অর্থ সালে তৎকালীন বৃটিশ সরকারের অবিভক্ত ভারতে সৃষ্টি হয় ফায়ার সার্ভিস। ১৯৫১ সালে আইনি প্রক্রিয়ায় সৃজিত হয় সিভিল ডিফেন্স। পরে ১৯৮১ সালের ৯ই এপ্রিল তৎকালীন একটি সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুসারে একীভূত হয়ে প্রতিষ্ঠিত করা হয় বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। সূচনা লগ্ন থেকে দেশের প্রতিটির্দুযোগ মোকাবেলায় প্রতিটি কর্মীর নিরলস ভূমিকায় নিজেদের সুনাম ও স্বচ্ছতার মানকেঅনন্যউ”্চতায় নিয়ে গেছে বাহিনীটি। কিন্তু এ যেন শর্ষের মধ্যে মিলল ভূতের সন্ধান। খোদ রাষ্ট্রয়াত্ত্ এই বাহিনীটিতে কর্মরত থেকে এই বাহিনীর কিছু অসাধু ও দুর্নীতিবাজউচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিদের অসীম আর্শিবাদ কে পুঁজি করে রীতিমত সিন্ডিকেট গড়ে তুলে রমরমা নিয়োগের বেসামাল বানিজ্যে মেতে উঠেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরে কর্মরত থাকা উপ-পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ জসিম উদ্দিন। সিন্ডিকেট প্রধান উপ-পরিচালক জসিমের বেসামাল এই অদৃশ্য খুঁটির জোরে এখন তটস্থ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে পিয়ন ও ঝাড়ুদারও। জসিমকে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরিতে এই প্রতিবেদক গিয়েছিল তার সাবেক কর্মস্থল চট্রগ্রামে। কথা হয় তার সাবেক সহকর্মী ও ভুক্তভোগীদের সাথে। তাদের সাথে কথা বলে বেড়িয়ে আসে উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিনের জ্ঞাতআয় বহির্ভূতসম্পদ অর্জন আর অনিয়ম ও দুর্নীতির নানান অন্ধকার গলির সাতকাহনের গল্প।

 

সূত্র বলছে, চট্রগ্রাম ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত থাকা সময়ে দুর্নীতি আর অনিয়মের মধ্য দিয়ে নানান বিতর্কিত কর্মকান্ডের সূচনা ঘটিয়ে ইমেজ সংকটে ফেলে দেয় রাষ্ট্রয়াত্ত্ব এই বাহিনীটিকে। বনে যায় অপ্রতিরোধ্য এক কিং খান খ্যাত কর্মকর্তা হিসেবে কিন্তু বেশীদিন টিকতে পারেনি তার এইবিতর্কিত কর্মকান্ড। ভুক্তোভোগীদের দীর্ঘ শ্বাস যেন পৌঁছে যায় সৃষ্টিকর্তার দরবারে। তাকে বদলি করা হয় দেশের সীমান্তবর্তী একটি অঞ্চলে। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য ব্যক্তির এক বিশেষ ফোনে ফাইলের ঘোর অন্ধকারে ডুবে যায় গিয়ে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে আবার বদলী হয়ে আসেন অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। এখানে এসেই শুরু হয় নানা বানিজ্য। অধিদপ্তর সূত্র বলছে,উপ পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) এই চেয়ারে আসতে জসিম উদ্দিন বেশ কিছু টাকা খরচ করেছেন। এছাড়াও রংপুর থেকেই চট্টগ্রামে ডাল ক্রয়ে বিশাল ভুমিকা রেখেছেন। অর্থাৎ চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের একক রাজত্ব জসিম উদ্দিনের।

 

তদন্ত চিত্রের অনুসন্ধান বলছে, এক সময়ে বিএনপি জামাতের দলীয় শীর্ষ পদে আসীন নেতাদের সাথে পারিবারিক যোগাযোগও ছিল তার। রাষ্ট্রীয় বাহিনীটির সাইনবোর্ডকে কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রামে কেমিক্যাল ব্যবসাও একচ্ছতর আধিপত্য গড়ে তুলেছেন। কেমিক্যাল ব্যবসা ও বেসামাল নিয়ম বহির্ভূত কর্মকান্ডে গড়ে তুলেছেন সম্পদের এক সুবিশাল সম্রাজ্য। রয়েছে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। তৈরি করেছেন আলিশান একাধিক বহুতল ভবন। “টাকা দিলে মিলে বাঘের চোখও ” এ বাগধারাটির যেন বাস্তবে রূপ দিল এই উপ-পরিচালক। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কোন এক কর্তাব্যক্তির বিশেষ গোল টেবিল বৈঠকে কোন এক সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকতার সাথে মোটা অংকের টাকা লেনদেনে, সংবিধানের ১৩৩ ও ১৩৪ অনুচ্ছেদ অমান্য করে মহাপরিচালকেরজারিকৃত অবৈধ আদেশে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা সদর দপ্তরে প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের উপ-পরিচালক পদে বদলি হয়ে আসেন। এসেই নেমে পড়েছেন দুর্নীতি আর অনিয়মের মহাসড়কে। যা নিয়ে রীতিমত নিজেকে “টক অব দ্যা টাউনের পরিনত” করেছে এই উপ-পরিচালক। অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে যা নিয়ে জন্ম নিয়েছে চরম ক্ষোভ আর অসন্তোষের। সৃষ্টি হয়েছে নানান অন্তর্বর্তীকালীন কোন্দল। তৈরি হয়েছে নানান প্রশ্নের। অধিদপ্তরটি যেন অঘোষিত উপায়ে জিম্মি এখন জসিম সিন্ডিকেটের কাছে।

 

অনুসন্ধান আরো বলছে, অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ও পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) কে নানান ভাবে ভুল বুঝিয়ে টাকা লেনদেন করে তার পছন্দের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলি করছেন। এমনকি হয়রানীমূলক বদলী করা হয়েছে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে। তার সলাপরামর্শে বদলী থেকে বাদ যাননি সহকারী পরিচালকরাও। অনেক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ইতিহাসে এতো বদলী আর কোন সময় দেখি নাই। জসিম উদ্দিন উপ পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) হিসেবে যোগদানের দুই মাসে প্রায় ২ শো এর অধিক কর্মকর্তা কর্মচারীকে বদলী করেন। এর মধ্যে কাউকে কাউকে দেয়া হয়েছেপানিশমেন্ট বদলী। অধিদপ্তরে রীতিমত কিংকর্তব্য বিমুখ এক আতঙ্ক এখন উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন সিন্ডিকেট। কর্মচারীদের কাছে জসিম উদ্দিনের ভাষ্য, মহা পরিচালক তাকে পছন্দ করে অধিদপ্তরের বদলী করে এনেছেন। পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) সরল সোজা ভদ্রলোক মানুষ। তাদেরকে যখন যা বলবো তখন তা-ই হবে। ধরে নিতে পারো, আমিই অধিদপ্তরের সব! বদলীতে কারো নাম আমি দিলে স্যাররা আমার সাথে দ্বিমত হন না। আমি চাইলে যখন ইচ্ছে যাকে তাকে বদলী করে দিতে পারি বলেও কর্মচারীদের এমন আতঙ্কমূলক কথা বলেন জসিম উদ্দিন এসব জানিয়েছেন অধিদপ্তরের একজন চতুর্থশ্রেনী কর্মচারী। তার এমন কথাবার্তায় কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

 

এদিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, আমি কোন অচেনা সাংবাদিকের সাথে কথা বলিনা। আপনার যা মন চায় লিখেন। সেটা আপনার বিষয়। আমি এই পত্রিকাকে চিনিনা। আপনাকেও চিনিনা। অফিসে আসেন। ভালো থাকবেন ধন্যবাদ। পরিচালকের এ কথায় প্রশ্নের উত্থান হয় একজন প্রতিবেদক এই সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন রচনা করার আগে এই পরিচালকের মন্তব্য নিতে তার কাছে পত্রিকা ও প্রতিবেদককে পরিচিত করাই কি প্রথম কাজ? না প্রতিবেদন রচনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা কাজ? সে প্রশ্ন এখন দেশের পেশাদার সাংবাদিক ও সচেতন মহলের কাছে।অপরদিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মরত উপ-পরিচালক (প্রশা: ও অর্থ) জসিম উদ্দিনের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। (জসিমকে নিয়ে ধারাবাহিক অনুসন্ধানের প্রতিবেদন পড়তে চোখ রাখুন তদন্ত চিত্রের আগামী সংখ্যায়।)


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।