তদন্ত চিত্র: যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে কর্মরত বিএনপি ও জামাতপন্থী কর্মকর্তা পরিচালক (দা: বি: ও অর্থ) এ কে এম মফিজুল ইসলাম ও তার দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নানা কৌশলে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত ধামাচাপা পড়ে থাকলেও এখন সেটি প্রকাশ্যে এসেছে। এ বিষয়ে অডিট অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ নীরিক্ষাতেও স্পষ্টত: প্রমাণ মিলেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগ অনুসন্ধানে জানাগেছে, বর্তমানে সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে বেকার যুবদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু করে। বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। প্রাথমিক পর্যায়ে পাইলটিং কর্মসূচি হিসেবে ৩টি জেলা গোপালগঞ্জ, কুড়িগ্রাম ও বরগুনায় চালু করা হয় এ কর্মসুচি। নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিদিন ২০০ টাকা কর্মভাতা হিসেবে মাসিক ৬০০০/- টাকা ভাতার বিনিময়ে জেলার সংশ্লিষ্ট উপজেলার ১৫ হতে ৩০ পরবর্তীতে ২৫ হতে ৩২ বছর পর্যন্ত বেকার যুবদের ২ বছরের জন্য কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জামায়াত নেতা ডঃ আবু তাহের এর সুপারিশে তার দলের শিবির নেতা নোয়াখালী জেলার এ কে এম মফিজুল ইসলামকে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ১৮ টি ও ২৬ টি যুবক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পেয়ে তিনি ৩৪ টি জেলার জায়গা ক্রয়, ভবন নির্মাণ, আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামাদি ক্রয় ও জনবল নিয়োগের মাধ্যমে ৩৩ কোটি টাকা ঘুষ-বাণিজ্য করেন। নিয়োগের বড় একটি অংশ ছিল শিবির কর্মী। সে সময় এসব প্রকল্পের ক্রয় ও জনবল নিয়োগের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও জোট সরকারের প্রভাবে ধামাচাপা পড়ে যায়।
২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ কে এম মফিজুল ইসলামকে কুড়িগ্রাম বদলী করা হয়। কর্মকালীন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা সহ ৩টি জেলায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময় এ কে এম মফিজুল ইসলাম কোন নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে নামে বেনামে ২৬ হাজার যুবক ও যুব মহিলাদের কর্মসূচিতে সংযুক্ত করেন। সংযুক্ত কারীদের জন্য প্রতি মাসে ১৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা করে ২ বছরে ৩৭৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন। এছাড়াও সংযুক্ত কারীদের কর্মসূচিতে সংযুক্তির পূর্বে ৩ মাস প্রশিক্ষণার্থীদের যাতায়াত ভাতা বাবদ ২৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা, প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষক সম্মানী বাবদ ১২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা সহ মোট ৪১০ কোটি ২০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন। সেসময় এ কে এম মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ নিয়ে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠে। অর্থের বিনিময়ে তিনি সব অভিযোগ ধামাচাপা দেন।
উক্ত দুর্নীতির টাকায় ২৩১/১৯/এ, পশ্চিম ধানমন্ডি, ঢাকায় তিনি নিজস্ব জায়গা ক্রয় করে আধুনিক বাড়ী বানিয়ে বর্তমানে সেখানে বসবাস করছেন। এছাড়াও জয়কালী মন্দিরের সন্নিকটে তার পরিবারের নামে বাড়ী করেছেন। সেখানে কয়েক মাস পূর্বে তার মা মারা গেছেন। ঢাকার পান্থপথে ৫ কোটি টাকার আলিশান ফ্ল্যাট রয়েছে যা তিনি ৮০ হাজার টাকা ভাড়া দিয়েছেন। তিনি আত্মীয়দের নামে ঢাকা ও নোয়াখালীতে প্রচুর সম্পদ ক্রয় করেছেন।
অডিট আপত্তিতে যা বলা হয়েছে:
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, ঢাকা কার্যালয়ের ২০২১- ২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা দুর্বলতা, জাতীয় সমন্বিত সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ঋণ নীতিমালা, ক্ষুদ্র ঋণ নির্দেশিকার যথাযথ অনুসরণ না হওয়ায় ঘুর্ণায়মান পদ্ধতিতে মোট ঋণ ও অন্তর্ভুক্তিযোগ্য তহবিলসহ ৫১৪ কোটি টাকা ঝুঁকিতে ফেলেছেন তিনি।
নিরীক্ষায় কার্যালয়ের কর্মকান্ডর জন্য প্রযোজ্য নীতিমালা, ক্রেডিট ম্যানুয়াল, আদেশ, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তসমূহ, সকল রিপোর্ট রিটার্ন, অভ্যন্তরীণ ও বহিঃ নিরীক্ষা সহ হিসাবায়ন কার্যক্রম, প্রশাসনিক কর্মবন্টন ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, জাতীয় সম্মন্ধিত সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ঋণ নীতিমালা ২০১৯, ক্ষুদ্রঋণ কার্য- নির্দেশিকা, ২০১৫ ও ক্রেডিট ম্যানুয়ালসমূহ যথাযথ অনুসরণ না করা, প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং, পরিদর্শন, সুপারভিশন, হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা ব্যবস্থাপনা, রেকর্ড সংরক্ষণ, কর্মবন্টন সহ প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাবে ২০২১-২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত প্রদর্শিত পঞ্জিভূত হিসাবে ঘুর্ণায়মান পদ্ধতিতে মোট ঋণ ও অন্তর্ভুক্তিযোগ্য তহবিল সহ ৫১৪ কোটি টাকার হিসাবানয়, বিনিয়োগ ও আদায় ঝুঁকিতে পর্যবসিত হয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জুন, ২০২২ পর্যন্ত অন্তর্ভুক্তিযোগ্য চলমান ও সমাপ্ত প্রকল্প তহবিল প্রায় ৭২ কোটি টাকা, অব্যবহৃত এবং অন্যান্য আদায়যোগ্য তহবিল সহ প্রায় ৫১৪ কোটি টাকা তহবিলের যথাযথ হিসাবায়ন,অপর্যাপ্ত অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা, পরিদর্শন, মনিটরিং, প্রযোজ্য নীতিমালা, ম্যানুয়াল এর নির্দেশনা, সরকারী সিদ্ধান্ত, আদেশ প্রভৃতি বাস্তবায়নে প্রশাসনিক সমন্বয় এর অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জাতীয় সমন্বিত সঞ্চয় ও ক্ষুদ্রঋণ নীতিমালা ২০১৯ এর অনুচ্ছেদ ১০. ঘুর্ণায়মান তহবিলের হিসাব সংরক্ষণ ও বিনিয়োগ নিয়ে নির্দেশনা আছে। ১০.১, ১০.২, ১০.৩ ও ১০.৪ এ এরূপ তহবিল থেকে প্রাপ্তি, পুনঃবিনিয়োগ, মূলধন ও সার্ভিস চার্জ ব্যবহারের নির্দেশনা আছে।
এদিকে এ অধিদপ্তরের নিজস্ব ক্ষুদ্র ঋণ-কার্য নির্দেশিকা ২০১৫ এর পর আর কোন সংস্করণ সর্বশেষ সমন্বিত নীতিমালা অনুসরণ করে প্রকাশ করা হয়নি। অধিদপ্তরের জন্য গঠিত সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটি (স্টিয়ারিং কমিটি)র কিছু কিছু সিদ্ধান্তের আলোকে কিছু কার্যক্রমকে পরিমার্জন করে চর্চা করা হচ্ছে। এ কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ টিগুআর বলছে, কর্মসূচি পরিচালনার দিক- নির্দেশনা প্রদানসহ ক্ষুদ্র ঋণ কার্য-নির্দেশিকা পর্যালোচনা করা। অথচ এ নির্দেশিকার ১২,১৫,২১,২৫,২৬,২৭,২৮ এর সুষ্ঠু বাস্তব প্রয়োগ নেই। ২০১৫ এর নীতিমালা অনুসরণ প্রকৃতপক্ষে ডিসেম্বর ২৭, ২০০৩ তারিখে প্রকাশিত সরকারি পর্যাযয়ে পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি আওতায় আবর্তক ঋণ তহবিল ব্যবহারের সমন্বিত নীতিমালাকেই প্রতিফলিত করে।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত একই নীতিমালার সংরক্ষণেরও প্রতিফলন এ নির্দেশিকা ধারণ করেনি। ২০০৩ এর এবং ২০১৬ এর সমন্বিত নীতিমালাতেও অনুচ্ছেদ গুলোর উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। ২০০৩ এর অনুচ্ছেদ ১২ তে একটি পুর্নাঙ্গ নিরীক্ষা সেল গঠন করার কথা বলা হয়েছে। ১১ তে বলা হয়েছে প্রত্যেক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে তাদের আবর্তক তহবিলের সকল অর্থ কেন্দ্রীয়ভাবে সরকার অনুমোদিত যে কোন ব্যাংকের সুদযুক্ত হিসাবের মাধ্যমে আহরণ ও বিতরণ করতে হবে। ১০ এ মনিটরিং ও পরিদর্শনের কথা বলা হয়েছে।
এ অধিদপ্তরে কোন কেন্দ্রীয় হিসাবরক্ষণ (একাউন্টিং বেসিস), ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা (এমওইউ/এগ্রিমেন্ট), নিরীক্ষা সেল, মনিটরিং ও পরিদর্শনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিত হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে এবং ম্যানুয়াল (কোন অটোমেশন ব্যবস্থাও এখন পর্যন্ত অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়ন করার কথা ভাবা হয়নি) ব্যবস্থাপনায় এমএস এক্সেল প্রোগ্রামে শত শত কোটি টাকার রিপোর্ট কন্সোলিডেইট করা হচ্ছে যাতে হিসাবের বাস্তব গড়মিল থেকে যাচ্ছে এবং যার ভুল জিরে সার্বিক হিসাবে আঙ্গিক ও বাস্তব অর্থের আরও বড় পার্থক্য গড়ছে। এতে করে পলিসি সিদ্ধান্তগুলো বায়াস হবার আশংকা তৈরি হয়। আবর্তক তহবিলের সীড মানি (ঝববফ গড়হবু/ওহরঃরধষ ঈধঢ়রঃধষ)র হিসাবের উৎসের এবং অন্তর্ভুক্তিযোগ্য তহবিল সহ ৫১৪ কোটি টাকার প্রকৃত তথ্য ও প্রমাণক নিরীক্ষা দলের কাছে ঞৎঁব ধহফ ঋধরৎ ভাবে উপস্থাপন করা যায়নি। এমনকি এ অধিদপ্তর কোন সেন্ট্রাল রেকর্ড কিপিং, এমআইএস ম্যানেজমেন্ট নেই ; সীড মানি এর প্রকৃত উৎস সম্পর্কে সম্যক তথ্য, পি সি আর প্রভৃতিও উপস্থাপন করা হয়নি। মাঠ পর্যায়ে হিসাবের রেকর্ডও যথার্থভাবে রিফ্লেক্টেড হচ্ছেনা। ঈৎবফরঃ গধহঁধষ (১৯৯৬) এর ১১,১২ জবাড়ষারহম ঋঁহফ,ইড়ড়শং/জবমরংঃবৎং রহ ঃযব ঋরবষফ খবাবষ পর্যায়ে যে নির্দেশনা আছে তার অনুসরণ ও প্রকৃতপক্ষে হয় না। এ কার্যালয়ের সর্বশেষ কার্যবন্টন প্রণীত হয় ০৬/০৫/২০১০ সালে যা আর আপডেট করা হয়নি এবং এতে অনেক নতুন উইং বা শাখার কাজের স্পষ্ট কোন নির্দেশনা নেই, ডিউটি সেগ্রিগ্রেসন যথাযথভাবে পরিপালন করা হচ্ছে না। উপ-পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) এর কোন কর্মবন্টন উল্লেখ না থাকলেও হিসাবরক্ষণ অফিসার বা নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এর যে কর্মবন্টন করা আছে তাতে উপ-পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) কে সুপারভিসনে রাখা হয়েছে এবং সে অনুসারে তার তত্ত্বাবধানে নিরীক্ষণ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তারা একই সাথে বাজেট প্রিপারেশন, এসপেন্স, ক্রয়, স্টোর কিপিং, ব্যয় প্রাক্কলন, মঞ্জুরি, ডিডিও কার্যক্রম, হিসাব রক্ষণ, দাবি পরিশোধ, নিরীক্ষা সহ সার্বিক কর্মকান্ড করেন। এ দপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছর পর্যন্ত পুঞ্জিভূত আপত্তির সংখ্যা ৩৫৯ টি যেগুলোর উপর দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক সভার মাধ্যমে নিষ্পত্তিসহ কোনরূপ অগ্রগতি এ অর্থবছরে করা হয়নি।
আলোচ্য ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার সুষ্ঠু প্রয়োগ না হওয়ায়, অডিট আপত্তির ভিত্তিতে ম্যানেজমেন্টের বাস্তব ফলোআপ না থাকায় এবং প্রযোজ্য নীতিমালা, ক্রেডিট ম্যানুয়াল সমূহের পরিমার্জন, যথাযথ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে অটোমেশন সহ সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত না হওয়ায় এবং আন্ত: কমিটির সিদ্ধান্তের সমন্বয়ের অভাবে প্রশাসনিক ও আর্থিক অব্যবস্থাপনা অব্যাহত রয়েছে।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য মতিঝিলস্থ যুব ভবনে গিয়ে বেশ কয়েকদিন চেষ্টা করেও পরিচালক এ কে এম মফিজুল ইসলামের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তিনি কোন সাংবাদিককে সাক্ষাত দেন না। বলা হয় মহাপরিচালক স্যারের নিষেধ আছে। ফলে তার বক্তব্য তুলে ধরা সম্ভব হলো না।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা দুর্নীতিবাজ পরিচালক এ কে এম মফিজুল ইসলামের সকল অনিয়ম-দুর্নীতি ও আয়ের সাথে সংগতিহীন ধন সম্পদ অর্জনের বিষয়ে বিভাগীয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত কামনা করেছেন। (চলবে)
‘গাজীপুরে বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ, যানজট’
গাজীপুরের চান্দন এলাকায় টি এন্ড জেড অ্যাপারেল লিমিটেড পোশাক কারখানার......বিস্তারিত