TadantaChitra.Com | logo

১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বহুতল ভবন নির্মাণে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিচ্ছে মানিকুজ্জামান, জসিম উদ্দিনের বদলী বাণিজ্য

প্রকাশিত : মে ১০, ২০২৩, ১৬:৩৩

বহুতল ভবন নির্মাণে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিচ্ছে মানিকুজ্জামান, জসিম উদ্দিনের বদলী বাণিজ্য

তদন্ত চিত্রঃ রাজধানী ঢাকার বহুতল ভবন বিল্ডিং নির্মাণের জন্য ফায়ার সার্ভিস  ও সিভিল ডিফেন্স ছাড়পত্রের প্রয়োজন বিধিতে থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। যেকোনো বিল্ডিং সাত তলার উপরে করতে হলে তাদের প্রত্যেকেরই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের অনুমোদন অর্থাৎ ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক নিতে হবে। আর এই ছাড়পত্র প্রদানের দায়িত্বে রয়েছে মোহাম্মদ মানিকুজ্জামান সহকারী পরিচালক ওয়্যারহাউস ও ফায়ার প্রিভেনশন।

অভিযোগ উঠেছে যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন তাদের প্রত্যেকেই মো. মনিরুজ্জামানকে তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা ঘুষ প্রদান করতে হবে। ঘুষের টাকা দেয়া না হলে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়  ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য, তারপরও মেলেনা কাঙ্খিত ছাড়পত্র। অন্যদিকে সেফটি প্লান বিদ্যমান ভবনের সেফটি প্ল্যান বাবদ ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নেন এই মানিকুজ্জামান। ৩৩ টি কনসালটেন্সি ফার্ম এর মাধ্যমে এই ঘুষের টাকা নেয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কনসালটেন্সি ফার্ম এর কর্মকর্তারা বলেন, কোন উপায় নেই এই কর্মকর্তাকে টাকা না দিলে কোন কাজই হবে না আপনি যত চেষ্টাই করেন না কেন। বাধ্য হয়েই আমাদেরকে এই টাকা মানিকুজ্জামানকে খুশি করতে দিতে হয়। এই কর্মকর্তা নিজেই মাঠে পরিদর্শনে বেরিয়ে যান শুক্র ও শনিবারে। যদিও এর আগে কোন পরিচালক এভাবে শুক্র ও শনিবার মাঠ পরিদর্শনে যাননি বা যাওয়ার কোন নজির নেই । ভাবটা এমন যে তিনি প্রতিষ্ঠানকে দেখাতে চান যে তিনি শুক্র ও শনিবারও কাজ করেন আসলে যাদের মাধ্যমে ঘুষ নেওয়া হয়েছে সেটি কম হয়েছে কিনা তা দেখার জন্যই মাঠে যান। এতে বিরক্ত অনেক কনসালটেন্সি ফার্ম। ফায়ার রিপোর্ট বাবদ শতকরা ৫ টাকা কমিশন ছাড়া কোন রিপোর্ট প্রদান করেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ও ফায়ার সার্ভিস ও ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মচারীগণ মানিকুজ্জামানের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। সেবা প্রার্থী ও কর্মচারীগণ বলেন মানিকুজ্জামান একজন সিনিয়র সহকারী পরিচালক হওয়ার পরও সিনিয়র ও জুনিয়র কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রায়ই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এই গালিগালাজ থেকে বাদ যায় না তার নিজের সন্তানও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক কর্মচারী বলেন, চাকরি করতে এসেছি মা-বাবা ভাই-বোনকে গালি শোনাতে নয়। অন্যায় করলে আমাকে বলা হোক কিন্তু এভাবে মা-বাবা তুলে কেন গালাগালি করবে। উপরোক্ত বিষয় ফায়ার সার্ভিস ও ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগী সেবা প্রার্থী ও জুনিয়ার কর্মচারীগণ।

৩২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ মোঃ জসিম উদ্দিন পি,এফ,এম এর বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মচারীদের কে বদলি বাবদ প্রত্যেকের কাছ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উপ পরিচালক প্রশাসন অর্থ মোঃ জসিম উদ্দিন পি,এফ,এম এর বিরুদ্ধে। একদিনে এতজন কর্মচারীকে বদলির ইতিহাস এই অধিদপ্তরে কমই আছে। মজার বিষয় হলো ৩০-৪- ২০২৩ তারিখে বদলির আদেশের সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন সিলেট পরিদর্শনে ও পরিচালক প্রশাষন ও অর্থ ছিলেন সরকারী কাজে লোক  প্রশাষন ও প্রশিক্ষন কেন্দ্র সাভারে। এই সুযোগটি নিয়েছেন মোঃ জসিম উদ্দিন পি,এফ,এম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই অধিদপ্তরের অনেক কর্মকর্তা বলেন জসিম স্যারের এই বদলির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, যা টের পাননি আমাদের মহাপরিচালক স্যার। ভুক্তভোগী ফায়ার ফাইটার অনেকেই আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন কত টাকা বেতন পায় তারপরও ঘুষ না দিলে বদলি হয় না। আমরা আপনাদের কাছে বলছি আপনারা জানান বা পত্রিকায় নিউজ করেন তাহলে আমাদেরকে আবার পুনরায় বদলি করে দিবে। ভুক্তভোগী ফায়ার ফাইটাররা রয়েছেন উভয় সংকটে। আর এই বদলির টাকা গ্রহণ করেন ফায়ারম্যান কামাল ডেমরা ফায়ার অফিস ও মোঃ জসিম উদ্দিনের ব্যক্তিগত সরকারি ড্রাইভার মোঃ লাইস এর মাধ্যমে। এ বিষয়ে একাধিক রেকর্ড ভুক্তভোগীদের হাতে রয়েছে, এত গেল ছোট বিষয়…।

একেকজন ইন্সপেক্টর থেকে বদলি বাবদ ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নেন এই কর্মকর্তা বলে অভিযোগ রয়েছে। সিনিয়র অফিসারদের বদলি বাবদ দুই তিন লক্ষ টাকা নেন এই কর্মকর্তা, সর্বশেষ রাজধানীর বঙ্গ বাজার আগুন লাগার যে রদবদল হয়। সিনিয়র ও জুনিয়র দের থেকে ম্যান ৪ লক্ষ টাকা করে নেন ডি,এ,ডি ফয়সালুর রহমান। এছাড়াও সিনিয়র অফিসারের কাছ থেকে  ঘুষ নেন ২ লক্ষ টাকা। প্রনব চক্রবর্তী ঢাকা ইপিজেড জসীমউদ্দীনের দেশীয় লোক বিধায় চার লক্ষ টাকার বিনিময়ে বদলি করেন, তাছাড়া আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন এজেন্সি যেসব লোক নিয়োগ দেয় তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে এক লক্ষ করে টাকা নেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় জসীমউদ্দীনের নিজ এলাকা চট্টগ্রামে রয়েছে একাধিক বাড়ি ও গাড়ি। কন্টাকটারের কাছ থেকে গাড়ির ফার্স্ট যন্ত্রাংশ ক্রয়ের ৫% না দিলে সে বিলের ফাইল অনুমোদন হয় না। তাছাড়া টেলিফোনে অনেক সিনিয়র অফিসারদেরকে হুমকি দেওয়া হয় টাকা না দিলে। অন্য কোন জায়গায় বদলি করে দেওয়া হবে এ বিষয়ে আরো একাধিক অভিযোগ আমাদের হাতে রয়েছে। বিষয়টি গোপনে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পি,এফ,এম এর  অনেক অজানা তথ্য।

এ বিষয়ে জসিম উদ্দিন পি,এফ,এম এর মোবাইল ফোনে অনেকবার চেষ্টা করার পরও পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, তিনি সেভ করা ফোন নাম্বার ছাড়া অন্য ফোন রিসিভ করেন না। যেসব কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকারের মামলা বহিষ্কারাদেশ রয়েছে তাদের কাছ থেকে মাথাপিছু এক লক্ষ দুই লক্ষ টাকার বিনিময়ে মামলা থেকে নিশ্পত্তি করে দেন জসিমউদ্দীন তদন্ত শাখার এস,ও এর মাধ্যমে। সহকারী পরিচালক (ওয়্যারহাউস ও ফায়ার প্রিভেনশন) মানিকুজ্জামানকে ফোন দিলে তিনি ফোন কেটে দেন। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।