TadantaChitra.Com | logo

৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পুলিশের ওয়্যারলেসে বার বার কী জানতে চাওয়া হচ্ছিল

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৯, ২০২৩, ১৮:১৭

পুলিশের ওয়্যারলেসে বার বার কী জানতে চাওয়া হচ্ছিল

‘কোথায় হাজার হাজার, কোথায় লোক আছে, বলেন তো ৩৫৬৮ (সংকেতিক নাম্বার)। এই যে চান মালিবাগ  ক্রসিংয়ে, এখানে এখন আমাদের অপারেশন চলতেছে। এখন একটু খালি হচ্ছে, খালি হলেই আমি জলিলরে নিয়ে আসবো। কমলাপুরের এদিকে কেউ যায়নি স্যার। কমলাপুর রেলস্টেশনের ওদিক পুলিশ-সাংবাদিক কেউ নাই। ওখানে ফ্রন্টলাইনে ধাওয়া দেয়া হয়েছে পার্টি অফিস থেকে। ও স্যার, আলফামাইট-২ স্যার, একটু দেখেন ওখানে গোলাগুলি হচ্ছে। আলফামাইট-২১১ কন্ট্রোল কটন বলেন, ও স্যার আলফামাইট-২১১ স্যার। স্যার, ওই যে কাকরাইল চার্চে কি কোনো আগুন বা ভাঙচুর করেছে নাকি স্যার। এটা কি সঠিক? সঠিক তথ্য দিতে হবে স্যার।

৪২১১ কন্ট্রোল আমি চার্চের সামনে আছি। এখানে ভিতরে এবং সামনে এখন কোনো কিছু নাই। এইখানে আমরা আছি এখন সামনে। এখন না, আগে কি ভাঙচুর করছিলো নাকি। স্যার, আপনারা বলছিলেন কাকরাইল চার্চে হামলা করছে। এখানে কি ভাঙচুর হইছে কিনা স্যার, এটা ভিক্টর-৬ স্যার জানতে চাচ্ছেন। এ আলফামাইট-২, চাল একিউ-২১। স্যার, ওই যে আমরা সেগুনবাগিচা ডিপ্লোমার গেইট দিয়ে ঢুকতেছি। এখানে আমাদের পুলিশ আটকে আছে স্যার। আমরা এগুলো আস্তে আস্তে ক্লিয়ার করতেছি। চার্ল একিউ-২১ এই যে কাকরাইল চার্চের ওখানে একটা অফিসার পাঠান তো। ই মানে ভিক্টর-৬ স্যার জানতে চাচ্ছেন, ভিতরে কিছু হইছে কিনা?  আমরা তো খবর পাইনি, কাকরাইল চার্চের ভিতর কিছু হইছে বলে কোনো খবর পাইনি। আইডিআর ভবনে আগুন লাগাইছিল। ওইটা নিভানো হইছে। আরেকটা স্যার, আলফামাইট-২ স্যার, আরেকটা ওই যে কালভার্ট রোডে একটা মন্দির আছে মনে হয়, এই মন্দিরে কী কোনো আগুন বা ভাঙচুরের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে কিনা? এই দুইটা জিনিস স্যার খুব দ্রুত সঠিক তথ্য দিতে হবে। এটা ভিক্টর-৬ স্যার জানতে চাচ্ছেন স্যার। কন্ট্রোল, ওখানে ওই যে আলফামাইট-২১২ তার  কাছাকাছি আছে।

আলফামাইট-২১২ তুমি যদি শোনো দেখো তো ওখানে কি মন্দির আছে নাকি, ওইটা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা। আলফামাইট-২১২, আলফামাইট-২ স্যার আমি তো বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির নিচে আছি। এখানে তো মন্দির আছে বলে মনে হয় না। এই কর্নারে মন্দির আছে নাকি দেখো তো। হ্যালো, ২১২ স্যার আমাদের এলাকায় তো কোনো মন্দির নাই স্যার। পল্টনের মধ্যে কী কোনো মন্দির আছে নাকি স্যার। চার্ল ৮২৫২ স্যার, রাস্তার আশপাশে আমাদের এখানে কোনো মন্দির নাই স্যার। কন্ট্রোল আলফা চাল এ টুয়েলভ স্যার, কোনো মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির আছে, দেখো কোনো মন্দিরে হামলা হয়েছে কিনা, ভাঙচুর অথবা অগ্নিসংযোগ হয়েছে কিনা, আর স্যার এই যে চার্চ-গির্জায় কোনো হামলা ভাঙচুর হয়েছে কিনা, এটা দুটোরই সঠিক তথ্য দিতে হবে স্যার। এটা ভিক্টর-৬ স্যার এবং সর্বোচ্চ উপর মহল থেকে জানতে চাচ্ছে। এটার সঠিক তথ্য দিতে হবে স্যার। সঠিক তথ্য জানতে লোক পাঠাচ্ছি, একটু সময় দিতে হবে। আলফামাইট-২১৫ কন্ট্রোল, ৯৪৮২ কন্ট্রোল, স্যার এই যে মৌচাক ফ্লাইওভারের উপর বাসে আগুন দিছে। মন্দির ও চার্চ এটা পুরোপুরি মুক্ত আছে। কোনো ধরনের এখানে কোনো আক্রমণ হয়নি। কোনো ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি। বাকি যে সিদ্ধেশ্বরীর কথা বললেন ওটার খোঁজ নিয়ে আমি আপনাকে পাঠাচ্ছি ভাই, ওভার। কন্ট্রোল আলফামাইট-২ স্যার সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির ওখানে কোনো ঝামেলা হয়নি স্যার।

সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকেই বিএনপি’র প্রোগ্রাম ঠিকঠাক চলছিল। দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ কাকরাইল উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের পাশে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। মূলত আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে শত শত নেতাকর্মী নিয়ে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের গাড়িবহর কাকরাইল বিচারপতি ভবনের সামনের মোড়ে আসলে বিএনপিকর্মীরা তাদের ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যা পরে সহিংসতায় রূপ নেয়। পল্টনের আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার ঘটনার সূত্রপাত এখান থেকেই। ওই সময় ঘটনাস্থলে ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব সরকার উপস্থিত হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে। বিপ্লব সরকার, পুলিশ, বিজিবি, এজিবি ও একাধিক এপিসি সহ হাজির হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের দিকে সাউন্ড গ্রেনেড মারতে থাকে। তখনই বিএনপি’র কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সূত্র বলছে, পুরো ঘটনাটিই ছিল পুলিশের পূর্বপরিকল্পিত। তারা বিএনপি’র প্রোগ্রামের অনুমতির আড়ালে একটা ছক আগে থেকেই কষে রেখেছিল। এ কাজে সর্বাত্মক সহায়তা করেছে পল্টন জোনের এসি রুহানি। রুহানি সাবেক ছাত্রলীগের সেক্রেটারি রাব্বানীর ভাই। এসি মতিঝিল রুহানীর তত্ত্বাবধানে পল্টন থানা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি পিয়ালের লোকজন দিয়ে হোটেল ঈসা খাঁর সামনে বিএনপি’র লোক সেজে, প্রথমে বিচারকদের বাস ভবনে পরে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে তারা হাওয়া হয়ে যায়। এরপর বাকি কাজ বিপ্লব সরকার ও ডিসি রমনা আশরাফুল আজিম করে দেয়। তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল কাকরাইলের চার্চে ও সিদ্ধেশ্বরীর কালী মন্দিরে যেকোনো ভাবে হামলা করে বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের দোষী আখ্যায়িত করা। কিন্তু ঘটনার তীব্রতায় ওই দলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে সে পরিকল্পনা আর সফল হয়নি। গতকাল পুলিশের রেডিও ট্রাংকিং সেটের বার্তা বিশ্লেষণ করলে এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়।

গতকালের তীব্র সংঘর্ষের সময়ে পুলিশের আইজি (কলসাইন ভিক্টর-৬) এর পক্ষ থেকে বার বার জানতে চাওয়া হয় কাকরাইল চার্চ ও মন্দিরে হামলার ‘সঠিক তথ্য’ জানানোর জন্য। বলা হয় সর্বোচ্চ মহল থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশ কর্মকর্তারা সেসব স্থাপনা পরিদর্শন করে নিশ্চিত করেন সেখানে কোনো ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।

সুত্র: মানবজমিন


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।