TadantaChitra.Com | logo

৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নির্বাচনী সুযোগ কাজে লাগিয়ে এসপি মোকতারের কোটি টাকার মিশন!

প্রকাশিত : নভেম্বর ২২, ২০১৮, ১৫:১১

নির্বাচনী সুযোগ কাজে লাগিয়ে এসপি মোকতারের কোটি টাকার মিশন!

আফতাব মিজান, বরিশাল ব্যুরোঃ ভোলা জেলার এসপি মোকতার হোসেন একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড করেও ভোলা জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে বহাল থেকে এবার নির্বাচনী সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোটি টাকার মিশনে নেমেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে আগে বদলী না হলেও নির্বাচনের শেষে পুলিশের বড় ধরনের রদবদল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই রদবদলের তালিকায় রয়েছেন ভোলা জেলার বিতর্কিত পুলিশ সুপার মোকতার হোসেন। ভোলা থেকে বদলী করে কোন জেলা নাও দেওয়া হতে পারে তাকে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে তিনিও নিশ্চিত হয়ে গেছেন তাকে আর কোন জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব দেয়া হবে। তাই তিনিও বসে নেই। আসন্ন নির্বাচনে বিভিন্ন দলের নেতাদের সাথে মোবাইল ফোনে ও গোপন মিটিং করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে দিবেন। ভোলা-২ আসনের এলাকার একজন বিএনপির স্থানীয় প্রবীণ কর্মী জানান, ভোলা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হাফিজ ইব্রাহিমকে জয় লাভ করাতে কিছুদিন আগে এই প্রার্থীর লঞ্চে ঢাকা যাওয়ার পথে হাফিজ ইব্রাহিমের সাথে একটি গোপন মিটিং করেন এসপি মোকতার হোসেন। ওই মিটিংয়ে নির্বাচনের ঠিক ৭ দিন আগে বড় অংকের টাকা লেনদেন করার কথা হয়। হাফিজ সাহেবও টাকা দিবে বলে কথা দেন এসপিকে। পরে এক সাথে আমরা সবাই খাওয়া দাওয়া করে যে যার মত করে কেবিনে ঘুমাতে যাই। তবে এই প্রতিবেদকের সাথে বিএনপির এই প্রবীণ কর্মীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকায় কথাগুলো বলেন। তবে তিনি কথাগুলো বলার পর আর কাউকে যেনো না বলা হয় তাই এই সংবাদ কর্মীকে নিষেধ করেন।

এদিকে  ভোলার এই পুলিশ সুপার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বাণিজ্যমন্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচারনের স্ট্যাটাস দিয়েছেন অনেক বার। তার এমন আচারনের ও স্ট্যাটাসে ভোলার অনেক সাধারন মানুষের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তিনি প্রশাসনের লোক নাকি কোন একক ব্যক্তির গার্ড হিসেবে এই জেলায় কর্মরত রয়েছেন। আবার তার এমন কর্মকান্ডকে অন্যভাবেও দেখছেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছেন, বাণিজ্যমন্ত্রীকে খুশি রাখতে তিনি এমন কৌশল অবলম্ভন করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সরকারী দলের বাহিরে গিয়ে অন্য দলের পক্ষপাত্বিত করে প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করবে। নির্বাচনের পর যে কোন সময় তাকে ভোলা জেলা থেকে বদলী করা হবে জেনেই তিনি টাকা রোজগারের জন্য টাকার কাছে বিক্রি হবেন এমনটাই ভাবছেন অনেকেই। ভোলা সদর-১ আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র ভোট হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং। এখানে প্রশাসন কারো পক্ষপাত্বিত করার সম্ভব্যনা নাই। কারন এখানে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ আর বিএনপি’র জোট থেকে সম্ভাব্য হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক এমপি আন্দালিব রহমান পার্থ। এই দুই প্রার্থী কেউ কাউকে ছাড় দিবে না এমনটাই জানান ভোলার সাধারন ভোটাররা।

এমন অভিযোগ সহ আরো ডজন খানেক অভিযোগ নিয়েও ভোলা জেলার মত গুরুত্বপূর্ন স্থানে প্রায় দুই বছর ছয় মাস ধরে বহাল রয়েছেন এসপি মোকতার হোসেন। অনেকেই মনে করেন, অদৃশ্য এক শক্তিধর ব্যক্তির কারনেই এসপি মোকতার এত অপকর্ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন এবং বহাল রয়েছেন।

এছাড়াও ভোলা জেলার পুলিশ হিসেবে যোগদান করার পর থেকে তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। শুধু ভোলা জেলাই নয় এর আগেও তিনি যেখানে কর্মরত ছিলেন ওইখানেও নারী কেলেঙ্কারীর করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভোলা জেলায় পুলিশ সুপার হিসাবে যোগদান করার পরই তিনি প্রতিটি থানা পরিদর্শনে গিয়ে সুন্দরী কনেষ্টবল মেয়েদের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে নিজে এবং তারা বাসার সাবেক অর্ডার্লী মনির হোসেনকে দিয়ে ফোন করে বাসায় নিয়ে প্রথম দৈহিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব ও পরে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। যদি তার প্রস্তাবে কোন নারী কনেষ্টবল রাজী না হয় তাহলে তাকে শাস্তিমূলক বদলী করার হুমকি দেন। এমনকি বদলী করে দেন। এ নিয়ে ভোলা জেলার বিভিন্ন থানার ও পুলিশ লাইনে কয়েকজন নারী কনেষ্টবল নারীবান্ধব ও নারী পুলিশ নেটওয়ার্কের প্রধান ডিআইজি মিলি বিশ^াস এর কাছে মৌখিক অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে নারীবান্ধব ও নারী পুলিশ নেটওয়ার্কের প্রধান ডিআইজি মিলি বিশ্বাস বিষয়টি পুলিশ প্রধান তৎকালীন আইজিপি শহিদুল হককে জানান। এ নিয়ে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশ ডিআইজি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমানও পেয়ে তদন্ত রিপোর্ট পুলিশ সদর দপ্তরে দাখিল করেছেন। কিন্তু অদৃশ্য এক শক্তির তদবীরে এসপি মোকতার হোসেনের কিছুই হয়নি। অবশেষে তার অপকর্মের ফলে চাকুরি থেকে বহিস্কার হলেন তার ই অর্ডার্লী ও নারী সরবরাহকারী কং মনির হোসেনের। অভিযোগ রয়েছে, ভোলা জেলায় যোগদান করেই বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সাথে আতাঁত করেন তিনি। প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে সাধারন নিরীহ মানুষকে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করেন। যারা তার চাহিদা মত টাকা না দেয় তাদেরকে মাদক মামলায় জেলহাজতে পাঠান। সাধারন মানুষের সেবা নয় তাদের হয়রানী করাই এখন তার মূল লক্ষ্য। সূত্র জানায়, তিনি ভোলার বিভিন্ন মানুষের সামনে প্রকাশ্যই বলে বেড়াচ্ছেন কিন কর্মকান্ড নাকি তার প্রথম টার্গেট। তার আচার আচারনের কারনে ভোলায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুধু ভোলা জেলাই তিনি নারী কেলেঙ্কারীর সাথে জড়ান নি। এর আগে সিরাজগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকা কালীন সময়েও তিনি নারী কনেষ্টবলদের তার সরকারী বাসায়, সরকারী অফিসে ডেকে নিয়ে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। তার এমন তথ্য প্রমানও আমাদের কাছে আছে। তৎকালীন সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকাকালীন মোকতার হোসেন এক নারী কনেষ্টবলকে সেক্সুয়াল কথাসহ তার অফিসে যেতে বলেন। ওই নারী কনেষ্টবল সেদিন তার অফিসে যাবে বলে শুনা যায়। এরপর যেখানেই তার পুষ্টিং হয়েছে সেখানেই নারী কনেষ্টবলদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন ভোলা জেলার এসপি মোকতার হোসেন। ভোলা জেলা সূত্রে জানা গেছে, মাদক স্পট, বাঘদা রেনু পাচার সিন্ডিকেট, ভোলার দুইটি ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটগুলোতে নিজস্ব সোর্স নিয়োগ দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছেন। এছাড়াও তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকাকালে এক নারী কনেষ্টবলের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে একটি অডিও রেকর্ড আমাদের কাছে এসেছে। ওই অডিও রেকর্ড হুবাহু নিজে তুলে ধরা হলঃ
মেয়েঃ এই তো কোথায় আপনে??
মোকতার হোসেনঃ ঘুমাতে ছো নাকি??
মেয়েঃ হে…..
মোকতার হোসেনঃ ঘুমাতে ছো????
মেয়েঃ হা ঘুমাচ্ছি. কই আপনে??
মোকতার হোসেনঃ বাসায়??
মেয়েঃ হা রুমে
মোকতার হোসেনঃ হা আমি অফিসে, কি কর???
মেয়েঃ এই তো অফিস থেকে আসি খুব মাথা ব্যাথা করতে ছিল তাই শুইছি।
মোকতার হোসেনঃ তোত দেখা করলা একটা সুযোগ ছিল।
মেয়েঃ যাইতে চাইছিলাম, মুন্সি বেটা ভাল না, বললাম আমারে আজ ডিউটি দিয়েন না কালকে দিয়েন, তাও কচ্ছে পোর্স নাই আজকের দিনটা কর।
মোকতার হোসেনঃ না সার আজকে আমারে ডাকছিল একবারে ফ্রি ছিল।
মেয়েঃ হিম…
মোকতার হোসেনঃ একবারে ফ্রি ছিল।
মেয়েঃ ফ্রি ছিলেন???
মোকতার হোসেনঃ হে হে …..
মেয়েঃ আজকে????
মোকতার হোসেনঃ আজকে তো শুভাষ (তৎকালীন এসপি ফরিদপুর) নাই এসপি সার নাই, কেই নাই।
মেয়েঃ নুসরাত??
মোকতার হোসেনঃ হে??
মেয়েঃ নুসরাত কই গেছে??
মোকতার হোসেনঃ ও তো চলে গেছে আড়াইটার দিকে।
মেয়েঃ আড়াইটার দিকে চলে যায়??
মোকতার হোসেনঃ হি……
মেয়েঃ হি হি তারপর পোস্টিং হয়নি এখনো??
মোকতার হোসেনঃ না, আসবা আজকে….এরপর স্পস্ট বুঝা যায় নি। পরে আসলে আজ কিছু হইতো।
মেয়েঃ ও দেখি, আপনে ওসি’ক বলছেন দেখে রাইখেন, ওসি সার একটু এদিক সেদিক গেলেই বাজারে গেলেই বলে যাওনা কেন? এই কর না সেই কর না এডিশনাল এসপি সার বলছে তোমারে দেখে রাখতে।
মোকতার হোসেনঃ ওটা আমার রেপারেন্সে দিয়া বলছে, এমনে তোমারে ই করার জন্য।
মেয়েঃ তাই
মোকতার হোসেনঃ আমার রেপারেন্স দিয়া তোমারে চাপাইয়া রাখছে, তুমি বুঝ নাই।
মেয়েঃ সার বলছে তোমারে দেখে রাখতে বলছে। বাজারে গেলে বলে যাবে। আমাগে বলে বাজারে গেলে বল্লে যাবে। ঠিক আছে এ জন্য বাজারেও যাইনা। বাজারও করি না।
মোকতার হোসেনঃ তুমি তুমি তিনটার দিকে, তিনটার দিকে আস কেউ থাকবে না
মেয়েঃ ও ও….আচ্ছা দেখি
মোকতার হোসেনঃ বুঝতে পারছো
মেয়েঃ হা….
মোকতার হোসেনঃ অস্পষ্ট ভাষায় কি যেন বলে,,,পরে আর এমনে শরীর ঠিক আছে তো???
মেয়েঃ হা শরীর ঠিক আছে সমস্যা নাই।
মোকতার হোসেনঃ প্যান্ডি ম্যান্ডি পরার দরকার নাই বুঝতে পারছো??।
মেয়েঃ এহ এহ না সমস্যা নাই হিম হিম সমস্যা নাই, সমস্যা নাই, সমস্যা নাই, আমি যাব নি, দেখি।
মোকতার হোসেনঃ হে….
মেয়েঃ আমি যাব দেখি, গোছ গাছ, উঠি উঠা গোসল টোসল কইরা আপনার সাথে যাই, চুপ করে চলে যাব, তিনটার দিকে টুপ করে চলে যাব। এরপর কি যেন বলতে চায় মেয়ে….
মোকতার হোসেনঃ আসার আগে রিং দিও।
মেয়েঃ আসার আগে রিং দিব??
মোকতার হোসেনঃ রিং দিবা না নাইলে তো আমি অফিসে থাকবো না।
মেয়েঃ আহ আহ আচ্ছা ঠিক আছে।
মোকতার হোসেনঃ আমি রওয়ানা দিলাম।
মেয়েঃ হ্যায়….
মোকতার হোসেনঃ যে সার আমি রওয়ানা দিলাম।
মেয়েঃ হ্যায় আচ্ছা ঠিক আছে..
মোকতার হোসেনঃ বুঝতে পারছ??
মেয়েঃ হ্যা…..
মোকতার হোসেনঃ রওয়ানা দিয়ে এখানে আসলে মানি বলবা যে পোস্টিং মোস্টিং এর জন্য..রব .রবে থাকবে তো।
মেয়েঃ রব??
মোকতার হোসেনঃ রব থাকবে রব, ওই যে অর্ডার্লী।
মেয়েঃ সমস্যা নাই।
মোকতার হোসেনঃ হে…
মেয়েঃ সমস্যা নাই।
মোকতার হোসেনঃ কইও যে পোস্টিং এর ব্যাপারে আলাপ করমু।
মেয়েঃ ও আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নাই।
মোকতার হোসেনঃ একটু পরিস্কার টরিস্কার কইরা আইসো।
মেয়েঃ হে হে হে…
মোকতার হোসেনঃ কইসা মাইজা সব ধুয়া মাইজা আইসো।
মেয়েঃ হা হা হি হি হি….আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নাই হে হে।
মোকতার হোসেনঃ ঠিক আছে।
মেয়েঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
মোবাইল ফোনে এমন সব কথা বলেন তৎকালীন সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন। যা মোবাইল ফোনে ধারনকৃত একটি রেকর্ডিং এর অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছি। ওই রেকডিং টি ছিল বর্তমান ভোলা জেলার এসপি মোক্তার হোসেন ও সিরাজগঞ্জ মডেল থানার কনেষ্টবল এক মেয়ের। যা ৩ মিনিট ১৯ সেকেন্ড ধরে তাদের মধ্যে এই কথা হয়।

আরো পড়ুনঃ

ভোলার এসপি’র নারী কেলেঙ্কারী তদন্ত চলছে!! ভোলায় যোগদান করেই গড়েছেন সম্পদের পাহাড়!


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।