
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক নথিপত্র গোপন করে সাবেক এক পর্ণ তারকাকে অর্থ দেয়ার বিষয়ে আনা ৩৪টি অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
তবে, আদালত আগামী ১১ই জুলাই এ মামলায় সাজা ঘোষণা করবে। এর চারদিন পরেই রিপাবলিকান পার্টির সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দলের মনোনয়ন দেয়ার কথা।
ওই মামলায় আনা ৩৪টি অভিযোগের সব কটিতেই দোষী প্রমাণিত হয়েছেন রিপাবলিকান এই নেতা। আদালতের এই রায়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেন। রায় ঘোষণার পর বিচারকে অন্যায্য দাবি করে ট্রাম্পের শীর্ষ আইনজীবী উইল স্ক্যার্ফ ফক্স নিউজকে বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্টের আইনি দল আপিলের সব বিকল্পগুলো পর্যালোচনা করে দেখছে।
তিনি বলেন, এই মামলার সবগুলো দিকই আপিলের উপযুক্ত, যতটা দ্রুত পারি আমরা আপিল করতে যাচ্ছি। ট্রাম্পের আইনি দলের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য টড ব্লাঞ্চে বলেন, তার মক্কেল ন্যায়বিচার পাননি। তিনি বলেন, এক বছর ধরেই আমরা বলে আসছি যে ম্যানহাটনে আমরা ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। তার অভিযোগ ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন ট্রাম্পকে ধ্বংস করার লাইফ মিশনে নেমেছেন। তিনি বলেন, এখানে কিছু লোক ছিল যাদের বিচারে সাক্ষী করা উচিত হয়নি।
আগামী ১১ জুলাই এ মামলায় ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে। সাবেক এ প্রেসিডেন্টের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে আইনজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পকে জরিমানা করার সম্ভাবনাই বেশি। রায় ঘোষণার পর আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, এই রায় মর্যাদাহানিকর। এই রায় দুঃখজনক। এই মামলার বিচারক মার্চানের সমালোচনাও করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে এক পর্ন তারকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ট্রাম্পের। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেয়া হয়।
তার হাতে এ অর্থ তুলে দিয়েছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন। তবে ব্যবসায়িক নথিপত্রে এ লেনদেনের তথ্য গোপন করা হয়েছিল। তবে এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন ট্রাম্প। ছয় সপ্তাহ ধরে শুনানির পর বৃহস্পতিবার এ রায় দিলেন আদালত। রায় ঘোষণা করেন ১২ জন বিচারকের একটি বেঞ্চ। ট্রাম্পের এই মামলার রায় ঘোষণা করা হল এমন সময়ে যখন আর কিছুদিন পরেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন।
এই নির্বাচনে জো বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন ট্রাম্প। তবে রায়ের কারণে তার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কোনো বাধা আসবে না।
