TadantaChitra.Com | logo

৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সরকারের লুটেরা নীতির জন্যই সিলেটে এমন বন্যা: রিজভী

প্রকাশিত : জুন ২০, ২০২৪, ১৩:৩৩

সরকারের লুটেরা নীতির জন্যই সিলেটে এমন বন্যা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে যেন বন্যা ও ধ্বংস সমার্থক হয়ে উঠেছে। পাহাড়ি ঢল ও মেঘ-ভাঙ্গা বৃষ্টিপাতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার অঞ্চলে বন্যা ধ্বংসের তান্ডব চালাচ্ছে। বহু মানুষ বসতবাড়ি, ক্ষেতখামার প্রচন্ড ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস কাছারি, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ ও ক্ষেতের ফসল।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

সিলেটে জলধারাবর্ষণে মনে হয় যেন পৃথিবী ভেসে যাচ্ছে। প্রতিবছর পুন:পুন: বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ প্রচন্ড তান্ডবে সরকারের উদাসীনতা বিস্ময়কর। দেশের ভেতরের বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানিতে দিশেহারা মানুষ কোথাও নিরাপদ আশ্রয় পাচ্ছে না। ঘরের ভেতর উঁচু মাচা করার পরেও টিকতে পারছে না। এদিকে উত্তরপূর্বাঞ্চলের রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অবস্থাও মারাত্মক সঙ্গীন। উজানের ঢল প্রবল গতিতে নেমে আসায় সিলেট ও রংপুর বিভাগে নদীগুলো উপচে দুই পাশে প্রবল বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। লক্ষ-লক্ষ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। বৃহত্তর সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে পানিবন্দি মানুষের কাছে কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি। এক অসহায় বিপন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে লক্ষ-লক্ষ বন্যা উপদ্রুত মানুষেরা। তিনি উক্ত অঞ্চলে বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীদেরকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জোর আহ্বান জানিয়েছেন।বিএনপির মুখপাত্র বলেন, সরকারের ভুল নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে আজ বন্যাউপদ্রুত মানুষদের। বিশেষজ্ঞদের অভিমত সিলেটের হাওর উন্নয়নের নামে চলছে অপরিকল্পিত কর্মকান্ড। নদীতে বাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক গতি প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করার কারণেই বন্যার প্রকপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

একই অঞ্চলে প্রতিবছর বন্যা হওয়ার পরেও ‘আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম’ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি সরকার। মানুষকে সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দেওয়া যে সরকারের কর্মসূচি, সে সরকারের দ্বারা একটি জাতির সর্বাঙ্গীন উন্নতি লাভ কখনোই সম্ভব নয়। আজ ডামি সরকারের লুটেরা নীতির জন্যই ভুক্তভোগী জনগণের মর্মভেদী অশ্রুপাতের কারণ। আওয়ামী সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব দূর্বল করে নিজের ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখার জন্য উন্নয়নের কর্মকৌশল নির্মান করেছেন। সুতরাং সেই উন্নয়ন মধ্যে পাটকাঠির কাঠামো রয়েছে বলেই সেটি ধ্বসে পড়ছে, আর দেশের মানুষকে পোহাতে হচ্ছে দুর্যোগ ও দুর্ভোগ। বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ঈদের আনন্দকেও বাকশালীকরণ করা হয়েছে। ঈদের দিন মানুষ হত্যার উন্মাদনার মধ্য দিয়েই আওয়ামী ক্যাডাররা উৎসব পালন করছে। বাংলাদেশকে দখল করে নিয়েছে দূর্বৃত্ত সন্ত্রাসী আর সিন্ডিকেটবাজরা।

নৈরাজ্যের কালো ছায়া যেন সারা বাংলাদেশকেই ঢেকে ফেলেছে। আওয়ামীলীগ এখন অদম্য জমিদার হয়ে উঠেছে। দেশের কোথাও কোন সুস্থ প্রতিযোগিতার জায়গা নেই। ক্ষমতাসীনরা সবকিছু তাদের করায়াত্ব করার জন্য চোখ রাঙিয়ে বেড়াচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সন্তানরাও নিজেদের জমিদার সন্তান ভাবছেন। তারা মনে করেন আইন যেন তাদের হাতের মুঠোয়। ঈদের দিন রাতে বগুড়ায় আওয়ামীলীগ নেতার প্রবাসী মেয়ের গাড়ির সাথে একটি বাইকের ধাক্কা লাগায় দুুইজন বাইক আরোহীকে বাসা থেকে ঢেকে নিয়ে এসে আওয়ামীলীগ নেতার লোকজনরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। তিনি আরও বলেন, কোরবানীর পশুর চামড়া এবার বিক্রি হয়নি। আড়তদাররা কোরবানীর চামড়া ফিরিয়ে দিয়েছে। এটাও সিন্ডিকেটবাজদের কারসাজি।

গরীবের হককে বঞ্চিত করে একচেটিয়াকরণ করার জন্যই দেশের কোরবানীর চামড়া সিন্ডিকেটওয়ালারা কৌশলে মূল্যহীন করেছে। প্রশাসনের নির্ধারিত দামেও চামড়া কেনেননি আড়তদাররা। কোরবানীর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকে মাটির নিচে পুঁতে রেখেছে। এমনিতেই এবারে মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের মানুষেরা কোরবানী দিতে পারেনি। সরকারী হিসাবে অবিক্রিত থেকেছে ২৫ লক্ষ ৮১ হাজার গবাদী পশু। বাস্তবে এর সংখ্যা আরো অনেক বেশি। এরপরেও চামড়ার দাম নিয়ে এহেন নৈরাজ্য কেবলমাত্র শেখ হাসিনার শাসনেই সম্ভব। বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, বাংলাদেশে প্রধান শরনার্থী সমস্যা রোহিঙ্গা। প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা নিপীড়নের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখন মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গতকালও পাহাড় ধ্বসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১ জন মারা গেছে। কিন্তু তাবেদার নতজানু সরকার তাদের নিজ দেশে ফেরাতে কার্যকর কোন উদ্যোগ নিতে পারেনি। এদেরকে নাগরিক হিসেবে নিজ দেশে ফেরাতে মিয়ানমারকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। কিন্তু অতীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার সরকারের আমলেও এমন ঘটনা ঘটেছিলো।

সেসময় সফল কূটনৈতিক তৎপরতায় তাদেরকে ফেরত পাঠাতে তাঁরা সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোটি-কোটি যুবক এখন বেকার। শুধুমাত্র ভিন্ন মতের কারণে অনেক তরুণ যুবক কর্মসন্থানের সুযোগ না পেয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভূমধ্যসাগরসহ বিভিন্ন সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই সলিল সমাধি হচ্ছে। বহুসংখ্যক বাংলাদেশীরা এখন নিজ দেশেই পরবাসী। একদলীয় শাসনে নিজ দেশেরই ভিন্ন রাজনৈতিক মতের কারণে নিপীড়ণ ও অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। এরা দেশ ছেড়ে বিভিন্ন উদ্বাস্তুর জীবনযাপন করছে।

হিংস্র কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণেই বহুদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ অন্যদেশে শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়। তিনি সারাবিশ্বের শরনার্থীদের প্রত্যাশা ও উন্নত জীবনের আকাঙ্খার প্রতি সংহতি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল,সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স,স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু,সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন,সহ সম্পাদক সাইফ আলী খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং,কাজী রফিক, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি জাকের হোসেন সিদ্দীক, সাবেক যোগাযোগ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন মামুন প্রমুখ।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।