যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন উন্নত দেশ এবং বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে বাংলাদেশকে। এর ফলে বৈশ্বিক বিভিন্ন সূচকেও বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে এগিয়ে চলেছে। কিছু সূচকে ভারতকেও পেছনে ফেলে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। অর্থনীতির বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অবকাঠামো খাতে যেসব মেগা প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে, সেগুলো সম্পন্ন হলে উন্নয়নের এই গতি অনেক বেশি ত্বরান্বিত হবে। আগামী ১০ বছরে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান হবে ২৫ থেকে ৩০তম দেশের মধ্যে। এমন গৌরবময় একটি দেশের স্বপ্নই তো দেখেছিল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে কী ছিল? না ছিল রাস্তাঘাট, না ছিল কলকারখানা, না ছিল সম্পদ। প্রায় শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল। তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। সেই বাংলাদেশ যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় চলে এসেছিল, শুরু হয়েছিল ষড়যন্ত্রের রাজনীতি, থমকে গিয়েছিল উন্নয়ন। এক দশক আগেও দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল চার হাজার মেগাওয়াটের নিচে। মূলত গত এক দশকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যেতে থাকে। আজ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। ২০২৫ সালে তা ৩০ হাজার মেগাওয়াট ছাড়াবে। এর ওপর ভিত্তি করে দেশে ব্যাপক হারে গড়ে উঠছে কলকারখানা। কর্মসংস্থান বাড়ছে দ্রুত। দারিদ্র্যের হার কমছে। শিক্ষায় আসছে পরিবর্তন। কর্মমুখী শিক্ষা গুরুত্ব পাচ্ছে। শতভাগ শিশু প্রাথমিক শিক্ষায় অংশ নিচ্ছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেলের কাজ শেষ পর্যায়ে। উড়াল সেতু, উড়াল সড়ক, চার লেনের রাস্তা, নদী খনন—এসবই যোগাযোগব্যবস্থায় রীতিমতো বিপ্লব সূচনা করেছে। সংগত কারণেই বিশ্বব্যাপী আজ বাংলাদেশের এগিয়ে চলার এত প্রশংসা। বাংলাদেশের জিডিপির ব্যাপারে বরাবরই রক্ষণশীল হিসাব দেওয়া বিশ্বব্যাংকও তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে থাকবে। বিশ্বব্যাংকের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের জন্য এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যুক্তরাজ্যের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের (সিইবিআর) ২০১৯ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ দুই ধাপ এগিয়ে ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হয়েছে। তাদের মতে, ২০৩৩ সালে বাংলাদেশ হবে ২৪তম দেশ। শুধু অর্থনীতির সূচকেই নয়, সুশাসন-গণতন্ত্রের সূচকেও এগোচ্ছে বাংলাদেশ। গত বুধবার লন্ডনভিত্তিক ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) যে বৈশ্বিক গণতন্ত্র সূচক প্রকাশ করেছে, তাতে চার ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ৮৮তম। বৈশ্বিক লিঙ্গ সমতা সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে (৪৮তম), যেখানে ভারতের অবস্থান ১০৮তম আর পাকিস্তানের অবস্থান তালিকার সর্বনিম্নে। নানা ক্ষেত্রে অর্জনের এই ধারাবাহিকতা আমাদের ধরে রাখতেই হবে।
‘রাজশাহীতে আবাসন ব্যবসায়ী”র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যবসায়ীক ও যুবলীগ নেতা’
নিজস্ব প্রতিনিধি: আদালতে নির্দেশনা অমান্য করে জালিয়াতি মাধ্যমে জমি হাতিয়ে......বিস্তারিত