
এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের পাশাপাশি রোববার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার (০৩ আগস্ট) মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের একাধিক সমন্বয়ক।
রোববার (০৪ আগস্ট) সকাল থেকেই ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে ছাত্র-জনতাকে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানানো হয় এতে। কেন্দ্রীয়ভাবে শাহবাগে বেলা ১১টা থেকে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিতে সকলের অংশগ্রহণের আহ্বানও জানানো হয়।
সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিতে সকলের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার থেকে বলা হয়, কর্মসূচি সফল করতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, পেশাজীবী, রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ পালন করব। তবে আঘাত আসলে তা প্রতিহত করার সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখার আহ্বান রইল।
বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার থেকে বলা হয়, কর্মসূচি সফল করতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্ররাসা শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, পেশাজীবী, রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ পালন করব। তবে আঘাত আসলে তা প্রতিহত করার সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখার আহ্বান রইলো। এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠনটির সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন।
এদিকে শহীদ মিনার থেকে ফিরেই ফেসবুকে বার্তা দিয়েছেন আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘এইমাত্র শহীদ মিনার থেকে এসেছি। সেখানে ছাত্র-জনতার যে গণবিস্ফোরণ হয়েছে, সেখানে প্রতিটি মানুষের এক দফার প্রতি সমর্থন প্রকাশিত হয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত আমাদের এক দফা বাস্তবায়ন হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত শহীদ মিনারের এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ রোববার (৪ আগস্ট) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয়। এই নতুন কর্মসূচি সফল করার জন্য সবার উদ্দেশে ১৫টি নির্দেশনা দেন তারা।
সেইসঙ্গে এই আন্দোলনের আওতামুক্ত থাকবে কী কী, সেটিও জানানো হয়েছে। দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এসব নির্দেশনার কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।প্রাঙ্গণ থেকে অসহযোগ আন্দোলন বাস্তবায়নের জন্য যে ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে পালন করবেন। আমরা ঘোষণা করতে চাই, যতদনি না পর্যন্ত আমাদের বিজয় আসবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
জরুরি নির্দেশনাগুলো হলো:
১। কেউ কোনো ধরনের ট্যাক্স বা খাজনা দেবেন না।
২। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিলসহ কোনো ধরনের বিল পরিশোধ করবেন না।
৩। সব ধরনের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত ও কল কারখানা বন্ধ থাকবে। আপনারা কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন তুলবেন।
৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
৫। প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোনো ধরনের রেমিট্যান্স দেশে পাঠাবেন না।
৬। সব ধরনের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন।
৭। বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না! কোনো ধরনের পণ্য খালাস করবেন না।
৮। দেশের কোনো কলকারখানা চলবে না, গার্মেন্টসকর্মী ভাইবোনেরা কাজে যাবেন না!
৯। গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কেউ কাজে যাবেন না।
১০। জরুরি ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রোববার ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে।
১১। পুলিশ সদস্যরা রুটিন ডিউটি ছাড়া কোনো ধরনের প্রটোকল ডিউটি, রায়ট ডিউটি ও প্রটেস্ট ডিউটিতে যাবেন না। শুধু থানা পুলিশ নিয়মিত থানার রুটিন ওয়ার্ক করবে।
১২। দেশ থেকে যেন একটি টাকাও পাচার না হয়, সব অফশোর ট্রানজেকশন বন্ধ থাকবে।
১৩। বিজিবি ও নৌবাহিনী ছাড়া অন্যান্য বাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে ডিউটি পালন করবে না। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যারাক ও কোস্টাল এলাকায় থাকবে।
১৪। আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, ডিসি বা উপজেলা কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে যাবেন না।
১৫। বিলাসদ্রব্যের দোকান, শো রুম, বিপণিবিতান, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। তবে হাসপাতাল, ফার্মেসি, জরুরি পরিবহন সেবা যেমন-ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহন, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট সেবা, জরুরি ত্রাণ সহায়তা এবং এই খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহন সেবা চালু থাকবে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
