ঘূর্ণিঝড় আসনা: যেসব এলাকায় আঘাত হানতে পারে

লেখক: Dhaka Bangladesh
প্রকাশ: ১ বছর আগে

আরব সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে অগ্রসরের পর ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে আসনা। ঘূর্ণিঝড়টি ভারত ও পাকিস্তানে আঘাত হানলেও বাংলাদেশে আঘাতের কোনো আশঙ্কা নেই। তবে এর প্রভাবে দেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।  ১৮৯১-২০২৩ সালের মধ্যে আরব সাগরে মোট তিনটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। তবে আগস্ট মাসে আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় একটি বিরল ঘটনা। ঝড়টির নাম দিয়েছে পাকিস্তান।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গভীর নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ইতোমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি কচ্ছ এবং সংলগ্ন পাকিস্তানের উপকূলবর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। ক্রমেই উত্তর-পূর্ব আরব সাগরের পশ্চিম দিকে সরে করাচির দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি। ‘আসনা’ ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে ভারতের গুজরাটের ভুজ অঞ্চল থেকে ১৯০ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমে এবং করাচি থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে। ছয় কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড় এগোচ্ছে ক্রমশ। সেই গতিবেগ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’ আঘাত হানতে পারে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের পাশাপাশি পাকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধের উপকূলে। এরপর এটি উত্তর-পূর্ব আরব সাগরের ওপর দিয়ে ওমানের দিকে অগ্রসর হতে পারে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতীয় উপকূল থেকে দূরে সরে যাবে। তবে নিম্নচাপের কারণে গত কয়েক দিন ধরে গুজরাটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে পড়েছে জনজীবন।

পানিতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ওই এলাকার পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলা কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে পাকিস্তানের দিকে ঘূর্ণিঝড় অগ্রসর হলেও গুজরাটের ওপর থেকে এখনই দুর্যোগের মেঘ কাটছে না।

আগামী দু’দিন গুজরাটের উপকূলবর্তী এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো জানিয়েছে, বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় বিরল। সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর শক্তিশালী প্রতিরোধের জন্য নিম্নচাপগুলো ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে পারে না। পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগের (পিএমডি) মহাপরিচালক মেহের সাহেবজাদা খান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় আসনা করাচি-গোয়াদার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। যার ফলে পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার পর ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

পিএমডির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিন্ধের প্রাদেশিক সরকারকে ঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে বলেছে। সিন্ধের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক বর্ষণ হচ্ছে বলেও জানা গেছে। বর্ষণের কারণে ঝড় আসার আগেই সিন্ধুর কয়েকটি স্থানে আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে তারা। পাকিস্তানের নাম দেয়া ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’ যে সে ঘূর্ণিঝড় নয়। গত ৮০ বছরে মাত্র চার বার এই ধরনের ঘূর্ণিঝড় দেখা গেছে।

নিম্নচাপ সাধারণত তৈরি হয় সমুদ্রে। পরে তা শক্তি বৃদ্ধি করে গভীর নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আছড়ে পড়ে স্থলে। কিন্তু আসনার ক্ষেত্রে উল্টো। নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়েছে স্থলে এবং এই নিম্নচাপ থেকে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে সমুদ্রে।

সংবাদটি শেয়ার করুন...