সাভারে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) মেধাবী শিক্ষার্থী শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনকে উপর্যুপরি গুলির পর মুমূর্ষু অবস্থায় কেবল সাজোঁয়া যানে ঘুরিয়েই ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ঝড় তোলা সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জায়েজ করতে ওই শিক্ষার্থীকে ‘দুস্কৃতকারী’ উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলাও সাজিয়েছিল পুলিশ।
ঘটনার ১৩ দিনের মাথায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ইয়ামিনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল সাভার মডেল থানায়। এনটিভির বিশেষ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য। বের হয়ে এসেছে সাঁজোয়া যানে থাকা সেই পুলিশ সদস্যদের পরিচয়। গত ১৮ জুলাই সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাকিজা পয়েন্টে আন্দোলনরত নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ দেহে ছটফট করা এমআইএসটির শিক্ষার্থী শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনেরকে নিয়েই ছুটছে সাঁজোয়া যান। চারদিকে পুলিশের গুলির আওয়াজ। একপর্যায়ে সাঁজোয়া যানের ওপর থেকে ফেলে দেওয়া হয় তাকে। পরে সেই সাঁজোয়া যানের দরজা খুলে ভেতর থেকে বের বের হয়ে আসেন আরেক পুলিশ সদস্য।
পরে আরেকজন বেরিয়ে এসে তাকে সহযোগিতা করতে। তারা চ্যাংদোলা করে ইয়ামিনকে টেনেহিঁচড়ে সড়কের এক পাশে নিয়ে ফেলে দেন সড়কের বিপরীত দিকের লেনে। ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, তখনও নড়াচড়া করছিলেন ইয়ামিন। ঘটনার অনেক পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ায় সেই ভিডিও চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়, যা জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। পুলিশের নৃশংসতা দেখে চমকে ওঠেন সাধারণ মানুষ। স্তম্ভিত হন দেশবাসী। গর্জে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। সাভারের প্রথম শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন ছিলেন মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী।
৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতি ও বোন শেখ রেহানাসহ পালিয়ে দেশ ছাড়ার পর ক্ষুব্ধ জনতা পুড়িয়ে দেয় সাভার মডেল থানা। পুড়ে যায় রেকর্ড রুমের যাবতীয় সব গুরুত্বপূর্ণ নথিও। এনটিভির বিশেষ অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুলিশের সেই সাঁজোয়া যানের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা জেলার মিলব্যারাক পুলিশলাইন্সে কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) (স.) মো. সিরাজুল ইসলাম। তার পুলিশ পরিচয় নম্বর বিপি-৮৭০৫০৯৭৯৩৭।
চালক ছিলেন কনস্টেবল আক্কাস আলী (কং/৬৮৬), এএসআই (স.) মোহাম্মদ আলী (নং-৪৬৮), নায়েক সোহেল (নং-৬৫৩), কনস্টেবল দ্বিপরাজ (নং-২৪৪০) ও কনস্টেবল মাসুম (২৪৪৪)। রাবার বুলেট, লেড বল বুলেট ও গ্যাস শেলে সজ্জিত সেই সাঁজোয়া যানের নম্বর ছিল এপিসি-১৪। মূলত সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের অত্যাধুনিক আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার। যাকে সংক্ষেপে বলা হয় এপিসি।
‘স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ককে খুন: ঘাতক সন্দেহে আরেক জনকে হত্যা’
বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে (৩৫)......বিস্তারিত