সব জল্পনা কল্পনা শেষ করে অবশেষে বাংলাদেশের বাজারে এলো ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আইশার মোটরসের নিয়ন্ত্রণাধীন মোটরসাইকেল রয়্যাল এনফিল্ড। রয়্যাল এনফিল্ড বাংলাদেশে এক্সক্লুসিভ উৎপাদন ইউনিট এবং ফ্ল্যাগশিপ শোরুমের কার্যক্রম শুরু করেছে।
ইফাদ মোটরসের সহযোগিতায় স্থাপিত এ ইউনিট সার্ক অঞ্চলে রয়্যাল এনফিল্ডের ব্যবসার সম্প্রসারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং এটি বাংলাদেশের প্রতি কোম্পানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রয়্যাল এনফিল্ডের নতুন এ উৎপাদন ইউনিটটি নেপাল, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড, কলম্বিয়া এবং আর্জেন্টিনার পর বিশ্বের সপ্তম উৎপাদন ইউনিট। গতকাল বাংলাদেশে উৎপাদন ইউনিটের উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁও শোরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রয়্যাল এনফিল্ডের সিইও, বি. গোবিন্দরাজন বলেন, “রয়্যাল এনফিল্ডে, আমাদের লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী মিডলওয়েট মোটরসাইকেল সেগমেন্টকে প্রসার করা এবং বাংলাদেশে আমাদের প্রবেশ এ যাত্রায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
রয়্যাল এনফিল্ড ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী অন্যতম শীর্ষস্থানীয় একটি মিডসাইজ মোটরসাইকেল ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে, যুক্তরাজ্য, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মতো প্রধান বাজারসমূহে শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছে। গত বছর আমরা নেপালে সিকেডি অপারেশন চালু করে আমাদের আন্তর্জাতিক উপস্থিতি আরও শক্তিশালী করেছি, যা বিশাল সম্ভাবনাময় বাজারে প্রসারের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের প্রমাণ। এ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা মিডসাইজ মোটরসাইকেল সেগমেন্টে বিশ্বব্যাপী নেতৃত্বের অবস্থান নিশ্চিত করেছি, বিশ্বের উৎসাহী রাইডারদের কাছে মোটরসাইকেলিংয়ের আনন্দ উপহার দিচ্ছি।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে, বাংলাদেশ এক অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে এবং এদেশের উদীয়মান মোটরসাইকেলিং সংস্কৃতি এবং রয়্যাল এনফিল্ড মোটরসাইকেলের প্রতি আগ্রহ এটিকে সার্ক অঞ্চলে আমাদের উপস্থিতি শক্তিশালী করার আদর্শ মুহূর্ত করে তুলেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হবে মোটরসাইকেলগুলোর প্রি-বুকিং। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৪৫ দিন পর মোটরসাইকেল ডেলিভারি শুরু করবে কোম্পানিটি। এর আগে জানা যায়, এই চারটি মডেলে থাকবে উন্নত ফুয়েল ইনজেকশন সিস্টেম এবং পরিমার্জিত সিঙ্গেল-সিলিন্ডার ‘জে’ (J) সিরিজের ইঞ্জিন।
এছাড়া রং ও ব্রেকিং সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করে আলাদা ভেরিয়েন্টও থাকবে। ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু বলেন, “আমরা রয়্যাল এনফিল্ডের মতো একটি গ্লোবাল ব্র্যান্ডের সঙ্গে অংশীদার হতে পেরে আনন্দিত। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের বাইকিং সম্প্রদায় রাস্তায় একটি নতুন অভিজ্ঞতা পাবে।
এবং আমরা সারা দেশে আমাদের নিজস্ব এবং ডিলার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সর্বোত্তম পরিষেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’ কুমিল্লার এ উৎপাদন ইউনিটটি অত্যাধুনিক যা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে। প্রাথমিক পর্যায়ে, এ ইউনিট বিশেষত বাংলাদেশের বাজারের জন্য হান্টার ৩৫০, মিটিওর ৩৫০, ক্লাসিক ৩৫০ এবং বুলেট ৩৫০ এ চারটি ফ্ল্যাগশিপ মডেলের স্থানীয় উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ সেটআপের মাধ্যমে রয়্যাল এনফিল্ড বাংলাদেশে মোটরসাইকেল ক্রয়ের প্রক্রিয়াকে আরও সহজতর করতে এবং দেশে মাঝারি সাইজের বাইকের বাজারকে আরও প্রসারিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নতুন এ উৎপাদন কেন্দ্রের পাশাপাশি ঢাকায় রয়্যাল এনফিল্ডের প্রথম ফ্ল্যাগশিপ শোরুমও চালু করা হয়েছে। প্রায় ৭৯০০ বর্গফুটের এ শোরুম দেশের ক্রমবর্ধমান রয়্যাল এনফিল্ড ভক্তবৃন্দের জন্য হবে একটি প্রিমিয়াম বিক্রয় এবং এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার। ৩৯০০ বর্গফুটের অতিরিক্ত একটি সার্ভিস সেন্টারও থাকবে, যা বিক্রয়, সেবা এবং বিক্রয় পরবর্তী সেবাসহ সব প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
রয়্যাল এনফিল্ডের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার যাদবিন্দর সিং গুলেরিয়া বলেন, বাংলাদেশে ইফাদ মোটরসের সঙ্গে স্থানীয় কার্যক্রম শুরু করায় আজকের দিনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং বৈশ্বিক সম্প্রসারণ পরিকল্পনায়-এর ভূমিকা অপরিহার্য। এখানকার ক্রমবর্ধমান মোটরসাইক্লিং সংস্কৃতি এটিকে সার্ক অঞ্চলে আমাদের উপস্থিতি শক্তিশালী করার সঠিক সময় করে তুলেছে। স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে আমরা গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে এবং সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে চাই। আমরা বাংলাদেশে আমাদের চারটি জনপ্রিয় মডেল হান্টার ৩৫০, মিটিওর ৩৫০, ক্লাসিক ৩৫০ এবং বুলেট ৩৫০ লঞ্চ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত।
আমাদের প্রবৃদ্ধির অংশ হিসেবে, আমরা আগামী কয়েক বছরে দেশে আমাদের রিটেইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা নতুন গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে এবং দেশের মাঝারি ওজনের মোটরসাইকেল সেগমেন্টকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।” রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক মোটরসাইকেল হিসেবে সবসময়ই এর অটুট বংশগতি, চিরন্তন সৌন্দর্য, পুরনো দিনের জৌলুস এবং স্পষ্ট ও অটল বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেছে। ‘১৯৫০ সাল থেকে ট্রেন্ডিং’, রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক- ক্লাসিক অটোমোটিভ ডিজাইন, নান্দনিকতা, প্রকৌশল সংস্কৃতি এবং রয়্যাল এনফিল্ডের ডিএনএ-এর প্রতিনিধিত্ব করে আসছে।
এটি সবচেয়ে প্রিয় মোটরসাইকেল হিসেবে সমাদৃত হয়েছে, পাশাপাশি এটি হয়েছে কাস্টমাইজেশনের জন্য একটি শূন্য ক্যানভাস এবং অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে লাখ লাখ ওভারল্যান্ড ভ্রমণের- যা রয়্যাল এনফিল্ডের সাফল্যের ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করেছে। কুল ডিজাইন, গতিশীল পারফরম্যান্স এবং আধুনিক-রেট্রো আকর্ষণের জন্য হান্টার ৩৫০ আজকের তরুণ রাইডারদের পছন্দের মোটরসাইকেল।
শহরের সংকীর্ণ অলিগলি পেরনো হোক, বা শহরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এলাকায় ঘুরে বেড়ানো হোক, কিংবা উন্মুক্ত রাস্তায় দ্রুতগতিতে ছুটে চলা হোক তরুণ রাইডাররা হান্টার ৩৫০ বেছে নিচ্ছে এর গতিশীলতা ও আত্মবিশ্বাসী নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার জন্য। একেবারে নতুনভাবে ডিজাইন করা এ বাইক, রয়্যাল এনফিল্ডের শক্তিশালী চরিত্র এবং আকর্ষণীয় কমপ্যাক্ট ডিজাইনকে একত্রিত করে তৈরি করা হয়েছে।
‘বাগেটহাট চিতলমারী উপজেলা শ্রমিকদলের নতুন কমিটি ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা ঝড়!’
স্টাফ রিপোর্টারঃ আওয়ামী লীগ আমলে কয়েকটি মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া......বিস্তারিত