কিংবদন্তি অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াতের জন্য শনিবার (২ নভেম্বর) দিনটি ছিল একটু অন্যরকম। গতকাল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয় আবুল হায়াতের আত্মজীবনী ‘রবি পথ’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এরপর মঞ্চ, রেডিও, টিভি, সিনেমা, বিজ্ঞাপন-সব মাধ্যমেই সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন এ অভিনেতা ও নির্দেশক। অভিনয়ের পাশাপাশি লিখেছেন অনেক নাটক, পরিচালনাও করেছেন। শিল্পের প্রতি ভালোবাসার কারণে ছেড়ে দিয়েছেন চাকরি। জীবনের এ দীর্ঘ শৈল্পিক পথ পাড়ি দেওয়ার গল্পগুলো আবুল হায়াত এক করেছেন আত্মজীবনীতে।
আবুল হায়াত বলেন, ‘জন্ম থেকে এ পর্যন্ত যেসব কথা মনে হয়েছে বলা দরকার, বলেছি। সব মিলিয়ে নিজেকে প্রকাশের চেষ্টা করেছি এই বইয়ে। আশা করছি, সবকিছু মিলিয়ে আমার পুরো যাত্রাপথ জানা যাবে।’
আবুল হায়াত বলেন, ‘হঠাৎ মনে হয়েছিল, জীবনে তো অনেক ঘটনা আছে। ছোটবেলা থেকে অনেক কিছু দেখেছি। সেগুলো গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেছি বইতে। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা জানেও না, এ রকম পুরানো অনেক ঘটনা আছে। আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব সবাই উৎসাহ দিয়েছে। পরে ভাবলাম, লিখেই ফেলি।’ আবুল হায়াতের মতো অন্য অভিজ্ঞ, জ্যেষ্ঠ শিল্পীদেরও আত্মজীবনী লেখা উচিৎ বলেও মনে করেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটার একটা ভালো দিক আছে।
৮০ বছরের একটা ভ্রমণ আমার, অনেক কিছু দেখেছি, যা অনেকে হয়ত জানে না। সুতরাং আমার মতো যারা আছেন, তারাও যদি নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আত্মজীবনী লেখেন, তাহলে অবশ্যই সেটা নতুন প্রজন্মের জন্য ভালো।’ ‘রবি পথ-কর্মময় ৮০’ লেখার গল্প বলতে বলতে একসময় মঞ্চের পরিবেশ অন্য রকম হয়ে ওঠে। আবুল হায়াত কাছে টেনে নিলেন স্ত্রী শিরিন হায়াতকে। সেই গল্পটা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘আজ থেকে তিন বছর আগে চিকিৎসক বললেন, আমার ক্যানসার হয়েছে। আমি জানতে পারলাম, আমি ক্যানসার রোগী। হাসপাতাল থেকে বাসা পর্যন্ত আর কথা বলতে পারিনি।’
স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে আবুল হায়াত বললেন, ‘এই মহিলা (শিরিন হায়াত) সারাক্ষণ আমাকে বলতে লাগল, আরে কী হয়েছে। এটা কি কোনো ব্যাপার নাকি। আমরা আছি। চিকিৎসা করব। যেখানে যা যা লাগে, আমরা করব। তুমি ভালো হয়ে যাবে। আমার মেয়েরা খবর পেয়েছে। তারাও বিভিন্নভাবে আমাকে বুঝিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই খবর শুনে, আমার তো মন মানে না। রাতে খাবার খেয়েছি কি খাইনি, জানি না। বিছানায় শুয়ে পড়েছি। অন্ধকারে একা কাঁদছি। হঠাৎ টের পেলাম, উনি পাশে এসে শুয়েছেন। আমি তখনো নিঃশব্দে কাঁদছি। হঠাৎ ওনার একটা হাত আমার গায়ে এসে পড়ল। আমি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলাম।’
‘সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় সম্মাননা পেলেন চুয়াডাঙ্গার সন্তান এইচ এম হাকিম’
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন শির্ষক আলোচনা শেষে সারা বাংলাদেশ......বিস্তারিত