গাজীপুরের চান্দন এলাকায় টি এন্ড জেড অ্যাপারেল লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিকরা তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করায় কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন শত শত কর্মজীবী মানুষ। বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় এই অবরোধ করেছেন টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস্ লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা।
এছাড়া কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বোর্ড বাজারের এসএমএস ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার নিচে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। কোনাবাড়ীর বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় ৩৫ দফা দাবিতে কর্ম বিরতি পালন করছেন লাইফ ট্যাক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা।
গাজীপুর পুলিশের এডিসি (ট্রাফিক) অশোক কুমার পাল জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস্ লিমিটেডের শ্রমিকরা মহানগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
কারখানা শ্রমিক আলাল উদ্দিন বলেন, “গত দুই মাস ধরে বেতন দিব-দিচ্ছি বললেও এখন পর্যন্ত বেতন-ভাতা পাইনি। যার কারণে বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়েছে।” রাবেয়া আক্তার নামে অপর শ্রমিক বলেন, “গত এপ্রিল মাস থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। সেপ্টেম্বর বাসায় কারখানা খুললেও দুই মাসের বেতন না দিয়ে কর্তৃপক্ষ তালবাহানা করছে।”
শ্রমিকরা বলেন, কর্তৃপক্ষ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে তাদের সড়ক অবরোধ করতে হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের ৬টি কারখানার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন বকেয়া আছে। শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তা পরিশোধ করেননি। পরে শনিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা মালেকের বাড়ি কলম্বিয়া মোড় এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বেতন সংক্রান্ত সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। অপরদিকে, বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজারের এসএমএস ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড শ্রমিকরা কারখানার নিচে অবস্থান করছেন।
শ্রমিকরা জানান, কয়েক দফায় সময় দিয়েও কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন পরিশোধ করেনি। তাদের তিন মাসের বকেয়া বেতন যতক্ষণ পর্যন্ত না দেয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
শ্রমিকরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন পরিশোধ না করে গত ৬ নভেম্বর থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। শনিবার কারখানা খুলে দেয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ রেখেছে।
তাই বন্ধ কারখানা খুলে দেয়া ও বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা কারখানার নিচে অবস্থান করছেন। এসএমএস ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী মালিক শফিকুল আলম বলেন, “সোমবার কল-কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি সভা আছে। সেখানেই শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শ্রমিক বেতনসহ অন্যান্য দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করা হবে।”
এদিকে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানার বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় লাইফ ট্যাক্স লিমিটেড নামের কারখানার শ্রমিকরা ৩৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে কর্ম বিরতি পালন করছেন। আন্দোলনরত শ্রমিক ও পুলিশ জানান, শনিবার শ্রমিকরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিরতি, টিফিন বিল, নাইট বিল, কারখানার ম্যানেজমেন্টদের অপসারণসহ ৩৫ দফা দাবিতে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ না করে বিসিক শিল্প নগরীর প্রবেশ গেটের সামনে অবস্থান নেয়।
পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায় তারা। কোনাবাড়ী শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. মোরশেদ বলেন, লাইফ ট্যাক্স লিমিটেড শ্রমিক অসন্তোষের খবর ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। মালিক পক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে বিবেচনা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানান শিল্প পুলিশের এ কর্মকর্তা।
‘বাগেটহাট চিতলমারী উপজেলা শ্রমিকদলের নতুন কমিটি ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা ঝড়!’
স্টাফ রিপোর্টারঃ আওয়ামী লীগ আমলে কয়েকটি মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া......বিস্তারিত