রাজধানীতে চলছে ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ অভিযান। আর এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে নগরীর প্রবেশপথ গুলোতে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবজি সহ হয়রানী। ট্রাফিক পুলিশ যত্রতত্র যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র চেক করার নামে করছে চাঁদা আদায়। নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা বাস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন নানা ব্র্যান্ডের গাড়ি কারণে-অকারণে থামিয়ে কাগজপত্র দেখার অজুহাতে হয়রানি করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটক রাখার ফলে নগরীতে যানজট আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাড়ির কাগজপত্র চেক করা নয়, সাধারণ মানুষকে হয়রানি আর টাকা আদায়ই তাদের মূল টার্গেট বলে ভূক্তভোগীরা জানান। রাজধানীর মহাখালীর ট্রাফিক পুলিশের টিআই দেলোয়ারের হয়রানীতে অতিষ্ট সাংবাদিক সহ সাধারণ জনগন। কারোর কোন কথা না শুনেই ইচ্ছে মতো মামলা ঠুকে দিচ্ছে। আবার পরিচিত জনদের ছেড়ে দিচ্ছে হায় হ্যালো বলে। জানা গেছে, টাঙ্গাইল বাস স্ট্যান্ড দূরপাল্লা গাড়ি থেকে মাসিক ও সাপ্তাহিক টাকা চলে আসে। সোর্সের মাধ্যমে টাকা আসে মাসিক ও ফুটপাত লাইনে টাকা তোলেন শাহ আলম, মিজান, মমিন ও করিম মহাখালী কাচাঁবাজার সামনে। নেতৃত্বে টি আই দেলোয়ের কাছে টাকা চলে যায়। মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে দায়িত্বরত টিআই দেলোয়ার। তার সহকর্মী রয়েছে আরো আট দশ জন। তারা একটার পর একটা গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র চেকিং করছে। ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী বাস চলাচল করলেও সেদিকে তাদের নজর নেই। ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী বাস আটক করা হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে এসব ফিটনেসবিহীন বাসের চালক ও মালিকদের কাছ থেকে রয়েছে মাসোহারা। আর এ মাসোহারার জোরেই রাস্তায় চলাচল বন্ধ হচ্ছে না লক্কড়-ঝক্কড় ফিটনেসবিহীন যানবাহন। চাঁদাবাজির স্থান হিসেবে শতাধিক পয়েন্টকে চিহ্নিত করে সেখানে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নজরদারি করছেন বলে জানা গেছে। উত্তরায় বসবাসকারী মোটরচালক সবুজ বলেন, উত্তরা থেকে গুলিস্তান আসতে তাকে ৫টি পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের তল্লাশির মোকাবেলা পড়তে হয়। কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই গাড়ি থামিয়ে অবান্তর প্রশ্ন করা হয়। আবার ট্রাফিক পুলিশের দাবি করা টাকা দিলে কোনো কাগজপত্র না থাকলেও অনেক গাড়ি ছেড়ে দেয়া হয়। ট্রাক ড্রাইভার সুমন অভিযোগ করে বলেন, শুধু দিনে নয় রাতেও চলে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি। পুলিশ ফিটনেসবিহীন বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান শুরু করছে না। এ জন্য অনেকেই পুলিশের চাঁদাবাজিকেই দায়ী করছেন। কারণ হিসাবে তারা বলছেন, এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ হলে পুলিশের অবৈধ বাণিজ্য কমে যাবে। রাজধানীর রামপুরার প্রাইভেটকারের চালক মাসুদ বলেছেন, ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজিতে তারা অতিষ্ঠ। বনানী থেকে যাত্রাবাড়ী যেতে খিলগাঁও, টিটিপাড়ার মোড়, মানিক নগরসহ কমপক্ষে ৪-৫টি স্থানে ট্রাফিক পুলিশের মুখোমুখি হতে হয়। কারণে-অকারণে গাড়ি থামিয়ে মামলার দেয়ার ভয় দেখায়। টাকা দিলে সব ঝামেলা চুকে যায়। এক সাংবাদিক বলেন, মোটরসাইকেলের কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও তাকে থামিয়ে প্রথমেই গাড়ির চাবি কেড়ে নেয়। কথা বলতে চাইলে চড় মারতে এগিয়ে আসে টিআই দেলোয়ার। তিনি কোন কথা শুনতে চান না। টিআই দেলোয়ারের সহকারীরা জানায় স্যারের মাথা অনেক গরম আছে। এই বলে তারা এ প্রতিবেদকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বক্সের ভিতর ৪ ঘন্টা আটকে রাখেন। ভালো মন্দ কোন কথা শুনতে চান না। এভাবেই প্রতিটা মানুষকে হয়রানী করা হচ্ছে। সাংবাদিক আরো জানায়, অপর একজন লোককে আটক করা হয়েছে তারই সামনে। কিন্তু ওই লোক একটু কথা বলতে চাইলে টিআই দেলোয়ার বলেন কোন কথা বলবি না। বেশী বাড়াবাড়ী করলে অন্য মামলায় চালান দিয়ে দেবো।