TadantaChitra.Com | logo

২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কোনো প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হতে দেব না : গভর্নর

প্রকাশিত : নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ১০:২১

কোনো প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হতে দেব না : গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে দেব না। সেটা এস আলমের হোক কিংবা বেক্সিমকোর হোক। প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় সম্পদ। ব্যক্তি থাকুক আর না থাকুক, প্রতিষ্ঠান থাকবে, প্রতিষ্ঠান চলবে। এটাই হলো আমাদের লক্ষ্য।’ গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, ‘এসব বড় শিল্প গ্রুপের সঙ্গে বহু মানুষের জীবিকা জড়িত। এসব প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে আরো শক্তিশালী করা যায় সে বিষয়েও সরকার কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক কর্মচারী কর্মরত আছেন। উৎপাদনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আছে, তাদের সঙ্গে ব্যাংকের‌ও সম্পর্ক রয়েছে। এগুলো তো বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।

কাজেই আমাদের একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কিন্তু আলাদা। যাতে ফান্ড ডাইভারশন না হয়। এটা আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানকে আমরা মরতে দেব না। প্রতিষ্ঠান মারা খুব সহজ, কিন্তু গড়ে তোলা অনেক কঠিন এবং অনেক সময়ের ব্যাপার। প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে দেশ ও জাতি উপকৃত হয়। আমরা ব্যর্থ হতে চাই না। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যর্থ হতে দেব না।’

গভর্নর আরো বলেন, ‘তাড়াহুড়া বা ইমোশন অল্প সময়ের জন্য মানুষকে উত্তেজিত করে। কিন্তু ইমোশন দিয়ে দেশ চালালে সেটা ভালো হয় না। আমাকে বাস্তববাদী হতে হবে। পাশাপাশি সঠিক নীতি প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবর্তন আনতে হবে।’ ড. আহসান মনসুর বলেন, ‘সবার আমানতের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। আমাদের প্রধান লক্ষ্য সবার আমানত ফেরত দেওয়া।

এ জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করা হবে। তবে সেটা বাচ্চা নয়, ললিপপ চাইল আর দিয়ে দিলাম। এ রকম হবে না। সব হিসাব-নিকাশ করে টাকা দেওয়া হবে।’ লুটপাট হওয়া টাকা আদায় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে চারটা আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা নিয়োগ করেছি। তাদের কাজ হলো সার্বিক বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা। তদন্ত শেষ হলে মূলত আমরা অ্যাকশনে যাব। ক্ষতি নিরূপণসহ ব্যাংকের টাকা আদায় প্রক্রিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।’ আগামী জানুয়ারির মধ্যে প্রথম ভাগ সম্পন্ন হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। তিনি বলেন, ‘গত তিন মাসে আমাদের ব্যাংকের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণাত্মক কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স এখন দুই হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। ধীরে ধীরে এটা আরো কমবে। গত তিন মাসে আমরা চার হাজার ৯৭২ কোটি টাকার নতুন আমানত সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি। পাশাপাশি নতুন ঋণ বিতরণ পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে।

নতুন করে দুই হাজার ৭০০ এজেন্ট পয়েন্টে তিনজন করে ব্যাংকের কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।’ এর মাধ্যমে আমাদের আমানতের পরিমাণ অনেক গুণ বাড়বে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি। ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘এস আলমের শেয়ার বিক্রির জন্য শিগগিরই আদালতে মামলা করা হবে। এরপর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে এস আলমের মালিকানার মধ্য থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করা হবে।’

ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আমরা গ্রাহক এবং বিদেশি গ্যারেন্টার ব্যাংকগুলোর আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করছি। আমরা এস আলমের উৎপাদনরত কম্পানির এলসিও করছি। এস আলমের চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। কিন্তু তার কম্পানির সিএফ ওদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হয় আমাদের।’ ঋণ আদায়ের সব রকম প্রচেষ্টা চলছে বলে জানান ওবায়দুল্লাহ আল মাসুদ।

এস আলমের কম্পানির ৬০ মিলিয়ন ডলার এরই মধ্যে বকেয়া হয়ে গেছে। আগামী মাসে আরো ১৮০ মিলিয়ন ডলার ওভারডিউ হবে। গ্রুপটির এলসির বিপরীতে ২০ হাজার কোটি টাকার মতো দায় পরিশোধ করা হয়েছে।

এই দায়ের অর্ধেক সমন্বয় করা হবে তার নামে-বেনামে থাকা শেয়ার থেকে। বর্তমানে তার শেয়ার রয়েছে এক হাজার ৬০০ কোটি। যার বর্তমান শেয়ারমূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বাকি ১০ হাজার কোটি টাকার নতুন শেয়ার ইস্যু হবে। আল-রাজি, আইএফসিসহ বিভিন্ন সংস্থাকে এখানে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হবে বলেও জানানো হয়।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।