নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে দেশ যখন মহা সংস্কারের পথে হাঁটছে ঠিক তখনই রাষ্ট্রের জনগুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন স্বৈরাচারের আমলের সুবিধাভোগী ও দুর্নীতিবাজ একাধিক কর্মকর্তা। যাদের বিরুদ্ধে সরকারের সময় থেকে দুর্নীতি ও লুটপাটের সাথে জড়িত রয়েছেন বলে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্ট এর পট পরিবর্তনের পরবর্তীতে নতুন মহাপরিচালক হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল যোগদানের পর থেকে সকলের প্রত্যাশা ছিল ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরকে তিনি স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত সংস্কার প্রক্রিয়ার পথে এগিয়ে নেবেন। কিন্তু বাস্তবচিত্র তার সম্পূর্ণ উল্টো যা দেখে হতভম্ব সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। উল্টো এর আগে বিভিন্ন অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান তাদের বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে দায়মুক্তি দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, অধিদপ্তরের কোন কোন কর্মকর্তা বছরের পর বছর চাকরি করে যাচ্ছেন। চাকুরি পাওয়ার পর থেকে ঢাকার বাহিরে তারা কখনো এক মাস কাজ করার নজির নাই। কেউ কেউ ২০ বছর ধরে অধিদপ্তরের কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও নিজ জেলায় চাকরি করার নিয়ম না থাকলেও একজন সিনিয়র স্টেশন অফিসার তার নিজ জেলায় কর্মরত। এসব কর্মকর্তাদের বিষয়ে মহাপরিচালকের সব জানা থাকলেও না জানার ভাব ধরে আছেন। মহাপরিচালক কে অনেকে সৎ ও নিষ্পাপ মনে করলেও কেউ কেউ মনে করেন বর্তমান ডিজি সাবেক ডিজিদের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট কবলে পড়ে গেছেন। পরিচালক তাজুল ইসলাম, পরিচালক রেজাউল, উপপরিচালক (ঢাকা) ছালেহ উদ্দিন, সহকারী পরিচালক (ক্রয় ও স্টোর) মনোরঞ্জন সরকার, সহকারী পরিচালক (ওয়্যারহাউজ) আনোয়ার হোসেন, সহকারী পরিচালক (ঢাকা) আনোয়ারুল হক, উপসহকারী পরিচালক ফয়সালুর রহমান, উপসহকারী পরিচালক (মুন্সিগঞ্জ) শফিকুল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক কুমিল্লা সহ আরো বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী সাবেক মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন ও তার ভাই নুর উদ্দিন আনিছ এর দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট সদস্য। এরাই বর্তমান ডিজিকে কব্জা করে দুর্নীতির সাগরে ডুবাতে কাজ করছেন।
দেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় এমনকি মালিকানাধীন সকল প্রতিষ্ঠানেও যখন সংস্কারের জয়জয়কার, ঠিক তখন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক স্বৈরাচারের দোসরদের বহাল রাখতে যেন মরিয়া এমনটাই মনে হচ্ছে। দুর্নীতিবাজ একধিক কর্মকর্তা অধিদপ্তরে এখনো বহাল থাকার ঘটনায় হতবাক সবাই। ফ্যাসিস্ট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও আমলাদের ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে এসব কর্মকর্তারা ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরে বদলি ও পদোন্নতি পেয়েছিলেন।
নতুন মহাপরিচালকের যোগদানের পর থেকে সকলেরই প্রত্যাশা করেছিলেন স্বৈরাচারের দোসরদের সরিয়ে ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরে সংস্কারের পথকে উন্মুক্ত করবেন তিনি। কিন্তু এসব নিয়ে যেন কোন প্রকার মাথাব্যথা নেই তার। মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে বহাল রাখার ঘটনায় হতবাক সবাই। সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সংশ্লিষ্ট অনেকের মনেই নানাবিধ প্রশ্নের দানা বেঁধেছে। তারা মনে করেন নতুন মহাপরিচালক দেশের চলমান এই সংস্কারের বিপক্ষের মানুষিকতা সম্পন্ন হওয়ায় সংস্কার প্রক্রিয়ায় আন্তরিক নয় তিনি।
বহাল থাকা এসব কর্মকর্তাদের দুর্নীতি অনিয়ম ও আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয় অসংখ্য সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে লোক দেখানো তদন্ত কমিটির যেন তাদেরকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বহাল রাখার কৌশল মাত্র।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মানবাধিকার সংস্থা রিহাফ’ চেয়ারম্যান এইচ এম আব্দুর রাজ্জাক রাজ এর সঙ্গে। তিনি জানান, বিগত স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে যুক্ত থাকা সকল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও বদলি একটি অত্যাবশ্যক ও চলমান প্রক্রিয়া। এটা করতে কোন তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি না। বিগত সরকারের আমলে অধিক সময় ধরে একই পদে বহাল থাকা কর্মকর্তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টি জনমানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জন্মায়।
‘সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় সম্মাননা পেলেন চুয়াডাঙ্গার সন্তান এইচ এম হাকিম’
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন শির্ষক আলোচনা শেষে সারা বাংলাদেশ......বিস্তারিত