শামীম হাওলাদার : রাজধানীর ধানমন্ডি মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভীনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। পতিত সরকারের আমলে ৬ষ্ঠ, ৭ম এবং ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ ১০০০ টাকা, টাই বাবদ ১০০ টাকা, সিলেবাস বাবদ ৭০ টাকা, এবং পরীক্ষা ফি বাবদ ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ২০২৩ সালে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। এরপর ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয়ের স্বারক নম্বর-৩৮.০১.৩০০০.০০০.২৭.০৪৩.২৩-১৮৩।
সুত্র জানায়, ধানমন্ডি মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লায়লা আফরোজের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে তথ্য দেয়ার অভিযোগ এনে কৌশলে চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীনের স্বেচ্ছাচারিতায় শিক্ষার পরিবেশ তলানিতে ঠেকেছে। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে শেষ বরাদ্দে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীত করা হলেও প্রধান শিক্ষকের চাপিয়ে দেয়া খরচের বোঝা বইতে না পেরে ইতোমধ্যে অসংখ্য শিশু শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়টিতে সময়মত পাঠদান না করা, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনৈতিক পন্থায় বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আদায়ে প্রতিবাদ করলেই ‘রেড টিসি’ দিয়ে শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়ার হুমকি দেন ওই প্রধান শিক্ষিকা। তাছাড়া শিক্ষকদের ভিতরে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে অন্তকোন্দলে চরম দ্বন্দ্ব তৈরি হয়ে মারামারি, মামলা হামলা মোকদ্দমা পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের এক শ্রেণীর কর্মকর্তার প্রচ্ছন্ন ছায়ায় অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষিকা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে চিঠি দেয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। তাছাড়া তার ওই শিক্ষিকার ভয়ে এখন এলাকাবাসি ও অভিভাবকরাও তটস্থ থাকেন।
জানা গেছে, রাজধানীর হাজারীবাগ থানাধীন জিগাতলা ট্যানারি মোড়ে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ধানমন্ডি মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারী বিশেষ বরাদ্দে ২০১৪ সালে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি নামে সরকারি বিদ্যালয় হলেও টাকা ছাড়া গরীব শিশুরা এখানে পড়তে পারে না। বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায়ই টাকা আদায় করেন শিক্ষকরা। এতে প্রতি বছর অসংখ্য শিশু বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণে শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়ছে। ২০২৩ সালে প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভীনের অনিয়ম-দুর্নীতির ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি।
আরো জানা গেছে , প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভিন ৬ষ্ঠ, ৭ম এবং ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ ১০০০ টাকা, টাই বাবদ ৭০ টাকা, সিলেবাস বাবদ ৭০ টাকা, এবং পরীক্ষা ফি বাবদ ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত অর্থ আদায় করেছেন বলে ২০২৩ সালে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। এরপর ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয়ের স্বারক নম্বর-৩৮.০১.৩০০০.০০০.২৭.০৪৩.২৩-১৮৩ (৬) অফিস আদেশে মনেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভীনকে অসদ আচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে একটি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করে। তাছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারি পৃথক চিঠিতে তাকে চানখাঁরপুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি বদলির আদেশ না মেনে ওই চিঠির কার্যকারিতা চ্যালেঞ্জ করে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ।
আদালত চলতি বছরের গত ২৭শে আগস্ট তার দন্ড বহাল রেখে রায় দেয়ার পরেও তিনি স্বস্থানে অবস্থান করে অভিযোগকারী ও স্বাক্ষীদের বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি দেখান এবং মারধর করে নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের র্যাগিং শুরু করেন। এতে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লায়লা আফরোজ শিক্ষকদের অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেই প্রধান শিক্ষক তার সিন্ডিকেট নিয়ে এই সহকারী শিক্ষিকাকে নির্যাতন করে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীনের নেতৃত্বে সহকারী শিক্ষিকা উম্মে হাবিবা, মোঃ রফিক আহমেদ, সায়মা আক্তার টুসি, সোনিয়া আহমেদ, তানিয়া আহমেদ, ইসরাত জাহান, তৃপ্তি দে, তাসলিমা আক্তার এবং মিশরাত জাহান ডালিয়া মিলে অপর সহকারী শিক্ষিকা লায়লা আফরোজকে ব্যাপক মারধর করে আহত করে। শারীরিকভাবে আক্রমণ চালান। এসময় তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ও হাতে থাকা স্বর্ণের বালা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও সহকারী শিক্ষক মোঃ রফিক ওই শিক্ষিকাকে শ্রীলতাহানি করেন। ওই ঘটনায় আহত শিক্ষিকা হাজারীবাগ থানায় মামলা করতে গেলেও তার মামলা নেয়নি পুলিশ। উপরন্ত ওই ঘটনার নাটক সাজাতে সহকারী শিক্ষক রফিক অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার পায়তারা করছে। এর আগেও নানা অজুহাতে ও শিক্ষিকার উপর একাধিকবার আক্রমণ চালায় ওই সিন্ডিকেট।
এছাড়াও ওই সিন্ডিকেটের অত্যাচার গত এক বছরে অন্তত আরো দুই শিক্ষিকা স্কুল ছেড়ে চলে গেছে। তাদের মধ্যে সহকারী শিক্ষিকা সুরাইয়া আক্তার মানসিক বিকারগ্ৰস্ত হয়ে ছুটিতে রয়েছেন। আরেকজন সৈয়দা মাহবুবা খাতুন বিদেশে চলে গেছেন।
গত ৭ নভেম্বর সরেজমিনে মনেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা গেছে, স্কুলের নিয়মানুসারে সকাল সাড়ে ৭ টায় প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তখনও অধিকাংশ শিক্ষকরা উপস্থিত হননি। ওইদিন বিদ্যালয়টিতে সকাল ৮টা ২৩ মিনিটে ক্লাস শুরু হয়। ফলে, শিক্ষার্থীরা প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর ক্লাসে প্রবেশের সুযোগ পায়।
চাকরিচ্যুত ও সুবিধা বঞ্চিত সহকারী শিক্ষিকা লায়লা আফরোজ এ প্রতিবেদককে বলেন, তিনি ২০১০ সালের ১৩ ডিসেম্বর মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই এখানে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি, পরীক্ষার ফিসহ অনৈতিকভাবে বিভিন্ন সময়ে টাকা উত্তোলন করে আসছে প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীন। এতে বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন তারা। আমি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করতে অস্বীকৃতি জানালে নানাভাবে আমাকে নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে হয়রানি করে। আদালত থেকে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর পুণরায় তিনি আমার উপর বিভিন্নভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন এবং হয়রানি শুরু করেন। এক পর্যায়ে গত ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষিকাসহ তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা মিলে আমাকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পূণরায় টাকা উঠাতে বললে আমি অপারগতা প্রকাশ করার একপর্যায়ে প্রচন্ড মারধর করে ও আমার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন এবং হাতের বালা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনা আমি হাজারীবাগ থানায় অভিযোগ দিলে এখন পর্যন্ত মামলা নেয়নি পুলিশ। বর্তমানে আমি জীবনের চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্ন পারভীন আমার বিরুদ্ধে থানা শিক্ষা অফিসে কল্পিত অভিযোগ দিয়ে আমাকে পুনরায় হয়রানি করছে। তাছাড়া প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিভাবকরা অনেকবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ করলেও কোনো সমাধান পায়নি।
মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ফজলে রাব্বি ও ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তানজিলার মা ময়না বেগম এ প্রতিবেদককে জানান, মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীন, সহকারী শিক্ষক মো. রফিক, উম্মে হাবিবা, সোনিয়া আহমেদসহ আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলে নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ফর্ম বিক্রি করা থেকে শুরু করে টাই, মনোগ্রাম, টেস্টমোনিয়াম বিক্রি ও আয়ার টাকাসহ বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত টাকা দাবি করা হয়। এছাড়াও বছরে ৮টি পরীক্ষার নামে ৫০০ টাকা ফি নেয়া হচ্ছে।
একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে তিনি অভিভাবকদের হুমকি দেন। কেউ তার স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে কথা বলতে এলে তাকে অপমান এবং লাঞ্চিত করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের ‘রেড টিসি’ (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এ ধরনের ভীতি প্রদর্শনের কারণে অধিকাংশ অভিভাবক মুখ খুলতে সাহস পাননা এবং সমস্যাগুলো নিয়ে কোনো অভিযোগ জানাতেও নিরুৎসাহিত হন।শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের বিষয়ে একটি রেজিস্টার খাতার নয়া দিগন্তের কাছে এসেছে। ওই রেজিস্টার খাতা অনুযায়ী প্রতি মাসে শিক্ষার্থীদের কাছ ২০০টাকা করে আদায় করে উত্তোলিত টাকা নিজে স্বাক্ষর করে প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীন বুঝে নেয়। এই তালিকায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে জোবায়ের বিন আব্দুর রাজ্জাক, সাহাব হোসেন আলিফ, মাহামুদুল হাসান সিয়াম, তাহিয়া, আব্দুল আহাদ, তৌসিফা, তাহমিনা, মোস্তাকিম, জাইয়ান শিকদার এবং হুমায়রা। এভাবে বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীর নাম রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন খাতে এই টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বর্তমানে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা, সেতু, রিয়া, সুমাইয়া, ইয়াসিন, লিমন, নীপা মনি, শ্যামলী, নাসরিন, সিয়াম এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্ত, মিম, তানিশা প্রমুখসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। কিন্তু এখনো তা আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সরকারি মনেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীনকে ফোন দিলে অভিযোগ শুনে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিনি । পরে বার বার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী রেজা বলেন, ধানমন্ডিতে মনেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এমনকি তাকে অন্যাত্র বদলি করা হলেও সে আদালতে মামলা করে পতিত সরকারের মাধ্যমে আবার ওই স্কুলেই জয়েন্ট করেন। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ পূণরায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় সম্মাননা পেলেন চুয়াডাঙ্গার সন্তান এইচ এম হাকিম’
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন শির্ষক আলোচনা শেষে সারা বাংলাদেশ......বিস্তারিত