- এইচ এম হাকিম, স্টাফ রিপোর্টারঃ বিশ্ব সূফি সংস্থার পক্ষ থেকে দরবার মাজার শরীফে উগ্রবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর হামলা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা এবং সুফিবাদি মাহফিলে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ ঘটিকার সময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বিশ্ব সূফি সংস্থার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ এহসানুল হক হাদির পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনটিতে স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন তৌহিদুল হক চিশতী নিজামি সহ সারাদেশ থেকে আগত মাজার ও দরবার শরিফের খাদেম এবং ভক্তরা, সারাদেশে বিগত ছয় মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৮০টির অধিক মাজার শরীফ ও দরবার শরীফে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ,সহ দরবার ও মাজারসমূহে হত্যা ও বিভিন্ন প্রকারের নির্যাতনের বর্ণনা করেন সংশ্লেষ্ঠ খাদেম ও ভক্তরা।
এর পর্বর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব সূফি সংস্থার পক্ষে প্রেস বিব্রতি পাঠ করেন হাসান শাহ সুরেশ্বরী দিপনোরী, তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন উপস্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্মানিত সাংবাদিক ও সুধীজন।
আপনাদের সকলকে গ্লোবাল সূফী অর্গানাইজেশন-এর পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক সালাম -আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।গ্লোবাল সূফী অর্গানাইজেশন বাংলাদেশের সুফীয়ায়ে কেরাম ও আউলিয়ায়ে কেরামের প্রতিষ্ঠিত দরবার শরীফ, খানকা শরীফ ও আস্তানাসমূহের কর্ণধার এবং অলী-দরবেশ-সাধকগণের মাজার শরীফের তত্ত্বাবধায়কদের সমন্বয়ে গঠিত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। বর্তমানে সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা ৫ হাজারের অধিক। সূফীবাদের চেতনা ধারণকারী দেশের বিভিন্ন দরবার ও মাজার শরীফ কর্তৃপক্ষ গ্লোবাল সুফী অর্গানাইজেশনের সাথে সংযুক্ত হয়ে এই সংগঠনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে একাত্মাতা প্রকাশ করছে। এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য হলো, সমাজে সকল শ্রেণির মানুষের মাঝে সূফীবাদের শিক্ষা তথা আত্মশুদ্ধি অর্জন ও একাগ্রচিত্ত ইবাদতের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের বিদ্যা পৌঁছে দেওয়া। এছাড়া হাতে-কলমে এই বিদ্যা শেখানের মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিজীবন, সামাজিক জীবন ও জাতীয় জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করা। পাশাপাশি পিস্ত্র-মাশায়েখ ও সুফীয়ায়ে কেরামের ওপর জুলুম-নির্যাতন, তাদের দরবার শরীফ, মাজার শরীফ ও আস্তানায় উগ্রবাদী ধর্মান্ধগোষ্ঠীর হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও অনুসারীদেরকে হত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলে সূফীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এই সংগঠনটির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
- ইতিহাস গবেষণা করলে দেখা যায় যে, আমাদের দেশে সুদূর আরব ও পারস্য থেকে সুফী ও আওলিয়ায়ে কেরাম এসে ইসলাম প্রচার করেন। এই দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ তাঁদের কাছ থেকে কালেমা পড়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আসেন। অলী-সুফী-দরবেশগণের প্রচেষ্টায় বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। এদেশের মানুষের প্রাণে অলী-আল্লাহগণ ইসলামের মধুর সুর বাজিয়েছেন। দেশ জুড়ে বিদ্যমান অসংখ্য মাজার শরীফ, খানকাহ শরীফ এবং ইসলামের পুরাকীর্তি নিদর্শনসমূহ সেই সাক্ষ্যই বহন করে। পরিতাপের বিষয় এই যে, যাঁদের মাধ্যমে আমরা ইসলাম পেলাম, তাঁদেরই উত্তরসূরিদের দরবার ও মাজার শরীফে আক্রমণ-সহ অনুসারীদের হত্যা করা হচ্ছে এবং বহু ভক্ত অনুসারীদের উপর চালানো হচ্ছে নির্মম অত্যাচার ও অমানবিক নির্যাতন। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, বিগত ছয় মাস যাবৎ একটি উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী আমাদের দেশে বিভিন্ন অঞ্চলের ৮০টির অধিক মাজার শরীফ ও দরবার শরীফ হামলা করে এবং ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে। শুধু তাই নয়, দরবারসমূহের খাদেম, ভক্তদের অনেককে হত্যা ও আহত করেছে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাসমূহ বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারিত হয়েছে।
ইসলাম শান্তির ধর্ম, প্রেমের ধর্ম, মানবতার ধর্ম ও আনুগত্যের ধর্ম। ইসলামের অনুসারীদেরকে ‘মুসলমান’ বলা হয়। ‘মুসলমান’ শব্দের অর্থ আত্মসমর্পণকারী, বশ্যতা স্বীকারকারী ও শান্তিতে বসবাসকারী। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত রাসুল (সা.) বলেন, “মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার জবান ও হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে।” (বোখারী ও মুসলিমের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ১২) অথচ পরিতাপের বিষয়, যারা অলী-আল্লাহগণের দরবার শরীফ, মাজার শরীফে হামলা, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ করছে এবং নিরীহ ভক্ত ও খাদেমনের শারীরিক নির্যাতন ও হত্যা করছে, তারা কি প্রকৃত মুসলমান হতে পারে? তাদের নৈতিক ও মানবিক সংকটের ফলে দেশব্যাপী ফেতনা ফ্যাসাদের সৃষ্টি হচ্ছে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ বলেন, “পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না।” (সূরা বাকারা ২: আয়াত ১১) এই প্রসঙ্গে আল্লাহ আরো বলেন, “আল্লাহ ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালোবাসেন না।” (সূরা মায়িদা ৫: আয়াত ৬৪) কিন্তু পির মাশায়েখ বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল ধর্মের অপব্যাখ্যা করে ফেতনা সৃষ্টির অপপ্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ আল্লাহ্ তায়ালা এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “আর ফেতনা হত্যার চেয়েও মহাপাপ।” (সূরা বাকারা ২। আয়াত ২১৭) নিরীহ ও নিরাপরাধ ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে হত্যার মাধ্যমে ফেতনাকারীরা গোটা মানবজাতিকেই হত্যা করছে। এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, “কারণ ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করল, আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।” (সূরা মায়িদা ৫: আয়াত ৩২) সূফী সাধক ও অলী-আল্লাহগণ পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মানুষকে সত্য ও সুন্দরের পথে পরিচালিত করেন। তাঁদের সান্নিধ্যে গিয়ে সাধারণ মানুষ আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আদর্শ চরিত্রের অধিকারী হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সূফীবাদের অনুসারীরা শান্তি প্রিয় মানুষ, তাদের দ্বারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংঘটিত হয় না। বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। এ দেশের প্রতিটি মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, “ধর্মের ব্যাপারে কোনো জোর-জবরদস্তি নেই।” (সূরা বাকারা ২: আয়াত ২৫৬) - অলী-আল্লাহগণ তাঁদের উত্তম আদর্শ, প্রেম ও ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করে এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁদের আচার আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি, শিক্ষা, কর্ম সবকিছুই ছিল সাধারণ মানুষের জন্য অনুসরণীয়। ফলে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা তাঁদের নিকট থেকে বায়াত গ্রহণ করে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণের শিক্ষা গ্রহণ করেন। তাঁদের প্রচেষ্টায় আজ বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। এই অলী-আল্লাহগণের সমাধিগুলো মাজার শরীফ হিসেবে পরিচিত। যেহেতু তারা নিজেরা আল্লাহ ও হযরত রাসুল (সা.)-কে লাভ করেছিলেন এবং
অন্যখ্য মানুষকে আল্লাহ ও হযরত রাসুল (সা.)-এর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ দেখিয়েছেন, তাই তাদের সমাধি বা মাজারগুলো শত-সহস্র বছর ধরে সপ্তানের সঙ্গে সংরক্ষিত হয়েছে। এসব মাজার শরীফ জিয়ারতের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষ এই অলী-সাধকগণের শিক্ষা নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের তাগাদা অনুভব করেন এবং নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এদেশে যে সকল উল্লেখযোগ্য অলী-আল্লাহ ও সূফী সাধকগণের মাজার শরীফ রয়েছে তাঁরা হলেন, হযরত সুলতান বায়েজিদ বোস্তামি (রহ.), হযরত শাহ্ সৈয়দ সুলতান বলখি মাহি সাওয়ার (রহ.), হযরত শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমি (রহ.), হযরত বাবা আদম শহিদ (রহ.), হযরত শাহ মুকদুম (রহ.), হযরত শাহ্ জালাল ইয়ামেনি (রহ.), হযরত শাহ পরাণ (রহ.), হযরত আমানত শাহ্ (রহ.), হযরত খানজাহান আলী (রহ.), হযরত জান শরীফ সুরেশ্বরী (রহ.), হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (রহ.) হযরত খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রহ.), ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ চন্দ্রপুরী (রহ.) ও সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (রহ.), শাহ্ সূফী সদর উদ্দিন আহমদ চিশতী (রহ.), আবু আলী আক্তার উদ্দিন শাহ কলন্দর,
মাজার শরীফ ও রওজা শরীফ নতুন কোনো বিষয় নয়। মানবজাতির আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর রওজা শরীফ রয়েছে। মূলত যে স্থানে আল্লাহর বন্ধুদের সমাহিত করা হয় তাঁদের সমাধিস্থলকে মাজার ও রওজা শরীফ বলা হয়। ইতিহাস গবেষণা করলে দেখা যায় যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নবি-রাসুল ও অলী-আল্লাহগণের মাজার ও রওজা মোবারাক রয়েছে। যেমন- ফিলিস্তিনের হেবরন শহরে হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর রওজা শরীফ, ফিলিস্তিনের নাবলুস শহরে হযরত ইউসুফ (আ.)-এর রওজা শরীফ, জেরুজালেমের জেরিকো নামক স্থানে হযরত মুসা (আ.)-এর রওজা শরীফ, মদীনা শরীফে অবস্থিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরীফ, ইরাকের নাজাফে শেরে খোদা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু-এর রওজা শরীফ, ইরাকের কারাবালায় ইমাম হোসাইন (রা.)-এর রওজা শরীফ, ইরাকের বাগদাদে বড় পির হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর রওজা শরীফ, তুরষ্কে কুনিয়ায় হযরত মাওলানা জালালউদ্দিন রুমি (রহ.)-এর রওজা শরীফ, ইরাকের মাদায়েনে হযরত সালমান ফারসি (রা.)-এর রওজা শরীফ, উজবেকিস্তানে হযরত খাজা বাহাউদ্দিন নকশবন্দ (রহ.)-এর রওজা শরীফ, ভারতের সিরহিন্দে হযরত মোজাদ্দেদ আল ফেসানী (রহ.)-এর রওজা শরীফ, ভারতের আজমিরে খাজা মাঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.)-এর রওজা শরীফ। এছাড়াও সারা পৃথিবীতে বহু সাহাবি, মাজহাবের ইমাম ও হাদিস সংকলক এবং আউলিয়ায়ে কেরামের রওজা ও মাজার শরীফ বিদ্যমান রয়েছে। তাঁদের মাজার ও রওজা শরীফ জিয়ারতের মাধ্যমে জিয়ারতকারী আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে অবারিত রহমত, বরকত ও ফায়েজ লাভ করে থাকেন।
মরা আগেই উল্লেখ করেছি, বিগত ছয় মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৮০টির অধিক মাজার শরীফ ও দরবার শরীফে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব দরবার ও মাজারসমূহের খাদেম ও ভক্তদের অনেককে হত্যা ও জখম করেছে আক্রমনকারীরা। যেসকল দরবার ও মাজার শরীফ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে তাদের প্রতিনিধিগণ এখানে উপস্থিত আছেন। যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের পরিবারের সদস্যরা এখানে আছেন। যাদেরকে আহত করা হয়েছে তারা ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন।
ভুক্তভোগী সকলের উপস্থিতিতে গ্লোবাল সূফী অর্গানাইজেশনের পক্ষ থেকে আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে সরকারের নিকট সুনির্দিষ্ট ৪টি দাবি উত্থাপন করছি:
১. অমিলম্বে দেশের সকল মাজার শরীফ ও দরবার শরীফে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং এসব দরবার ও মাজারসমূহের খাদেম ও ভক্তদের হত্যা এবং জখমের ঘটনা বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষী, মদদদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করা।
২. অগ্রাধিকারভিত্তিতে দেশের সফল সূফী দরবার, খানকা, মজলিশ, আস্তানা, আখড়া, মাজার শরীফ সহ সকল সুফী স্থাপনা ও নিদর্শনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সুফি-বাউল-ফকির-দরবেশদের নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে নিজ নিজ আচার-অনুষ্ঠান ও রীতি-নীতি পালনের নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে বাংলাদেশ পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার সহ সকল আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সামরিক বাহিনীর প্রতি নির্বাহী আদেশ প্রদান।
৩. ধর্মীয় সম্পূতি, সহাবস্থান ও দেশের শান্তি-শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে কোনো ওয়াজ মাহফিলে কিংবা মসজিদের খুৎব্যয় যেন সূফীবাদ, মাজার, দরবার, অলীআল্লাহ বিরোধী বক্তব্য দেওয়া না হয় সেজন্য দেশের সকল মসজিদ, কওমী মাদ্রাসা ও আলীয়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি ও প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নির্দেশ প্রদান করা।
৪. ধ্বংসযজ্ঞের শিকার সকল দরবার, মাজারের অর্থনৈতিক ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং যারা নিহত ও আহত হয়েছেন তাদের
5.
পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান।
এই দাবিসমূহ অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের নিকট জোড়ালো অনুরোধ জানাচ্ছি।
আমরা বিশ্ব সূফী সংস্থা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আজকের পর থেকে সূফী অনুসারীগণ ও সূফী স্থাপনাসমূহের ওপর আবার কোনো আঘাত এলে আমরা বিনা প্রতিরোধে বসে থাকবো না। ৫ হাজার দরবার ও মাজার শরীফের অনুসারি ও খাদেমগণ সম্মিলিতভাবে এই হামলা প্রতিরোধ করবে এবং দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে নেমে আসবে বল এ দাবি তুলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলের এ সম্মেলনে সারা দেশে ঘটে যাওয়া ৮০ টি দরবার এবং মাজার শরিফে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রমাণ চিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন বিশ্ব সূফি সংস্থার পক্ষ থেকে।
এর পর্বরতিতে সাংবাদিকদের সাথে প্রশ্ন উত্তর পর্বে জবাব দিয়েছেন শাহ সুরেশ্বরী দিপনোরী, নাশির উদ্দিন শিচতী, আফতাব জিলানী, আলাউদ্দিন, শাহ আলম,সজিব চৌধুরী, ইন্জিনিয়ার আনোয়ার পারভেজ সাগর সহ আগত অতিথি বৃন্দ, এসময় সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে তিনারা বলেন বিগত ৬ মাসে দরবার এবং মাজার শরীফে আক্রমণ, হামলা ভাংচুর, লুটপাট হত্যা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আপনারা কমবেশি অবগত হয়েছেন এবং আজ তার প্রমাণ চিত্র আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করেছি আমরা, আপনাীা গণমাধ্যম করমীরা হলো জাতির বিবেক আপনাদের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের কাছে আমরা আমাদের দাবি পৌছিয়ে দিতে চাই, সামনের দিন গুলোতে আর কোন দরবার এবং মাজার শরীফে উগ্রবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর সদস্যরা হামলা লুটপাট ভাঙচুর এবং দরবার এবং মাজার সংশ্লিষ্ট সদস্যদের যাতে হত্যা হতে না হয়, এ দিকে বর্তমান সরকার লক্ষ্য রাখবেন বলে আশা করি।
এবং তাদের চারটি যৌক্তিক দাবি যদি না মানা হয় পরবর্তীতে বিশ্ব সুখী সংস্থার পক্ষ থেকে সারাদেশের দরবার এবং মাজার সংশ্লিষ্ট ভক্তবৃন্দ এবং ভুক্তভোগীদের সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
‘সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় সম্মাননা পেলেন চুয়াডাঙ্গার সন্তান এইচ এম হাকিম’
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন শির্ষক আলোচনা শেষে সারা বাংলাদেশ......বিস্তারিত