TadantaChitra.Com | logo

৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দর্শনা কেরুজ বাংলামদ বোতলজাত করণের কফিনে পেরেক ঠুকে দিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ১৮:১১

দর্শনা কেরুজ বাংলামদ বোতলজাত করণের কফিনে পেরেক ঠুকে দিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর

স্টাফ রিপোর্টার : পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ বাংলা মদ প্লাস্টিকের বোতলে বোতলজাত করে বিক্রি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এজন্য তড়িঘড়ি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাংলা মদ প্লাস্টিকের বোতলে বোতলজাত করতে ক্রয় করেছে বোতলসহ অন্যান্য মালামাল। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়ে এমন উদ্যোগে কেরুজ বাংলামদ বোতলজাত করণের কফিনে পেরেক ঠুকে দিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর।

 

এদিকে কেরুর এই কর্মযজ্ঞে বাঁধ সেধেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই ছাড়পত্র নিতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে লাইসেন্স এবং ছাড়পত্র না নিয়ে বোতলসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয়ে প্রতিষ্ঠানের যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এর দায়ভার নেবেন কে? এর দায়ভার কি চিনিকলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক কোন ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন?

ব্রিটিশ আমল থেকে বিদ্যমান অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা পরিবর্তন ছাড়াই কর্তৃপক্ষ ‘তড়িঘড়ি করে’ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সর্বমহলে।

 

তথ্যসূত্রে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার ঐতিহ্যবাহী একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরুজ চিনিকল কমপ্লেক্স। এর মধ্যে ডিস্টিলারী বিভাগ অন্যতম। যেখানে বিলেতি মদসহ বাংলামদ (সিএস) তৈরী হয়। তৈরীকৃত বাংলামদ বৃটিশ আমল থেকেই ড্রামে করে বিভিন্ন পণ্যাগারে সরবরাহ হয়ে থাকে। কিছু দিন না যেতেই ড্রামে সরবরাহকৃত বাংলামদ প্লাষ্টিক বোতলে ১০০০ এমএল ও ৫০০ এমএল বোতলজাত করে বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেন কেরুজ কর্তৃপক্ষ। সে লক্ষে প্রায় ১০ লাখ টাকার ৪০ হাজার বোতল, বোতলের কর্ক ও লেবেলও ক্রয় করা হয়।

তবে অ্যালকোহল জাতীয় মালামাল উৎপাদন করতে হলে “মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর” এর লাইসেন্স এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়া বাধ্যবধকতা থাকলেও সে বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেছেন কর্তৃপক্ষ। এতেই বাঁধ সেধেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর।

 

কেরুজ বাংলামদ বোতলজাত করে বাজারজাত করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার যে বাধ্য-বাধকতা রয়েছে সে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ রাব্বিক হাসানকে নির্দেশ প্রদান করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় পরিবেশ-২ শাখার, উপসচিব ড. মোহাম্মাদ শহীদ হোসেন চৌধুরী

 

২০১৮ সালের অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালার ৩০ অনুচ্ছেদের ৫ ধারা অনুযায়ী, উৎপাদিত দেশি মদ অধিদপ্তরের পণ্যাগারে পৌঁছানোর পর তা পানের উপযোগী করতে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ‘গেজিং’ ও ‘প্লাম্বিং’ করা বাধ্যতামূলক। পণ্যাগারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ কাজ করবেন বলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে অধিদপ্তরের একটি সূত্র। এছাড়াও বিষয়টি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব বিবেচনায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় প্লাস্টিক বোতল বন্ধ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এমতাবস্থায়, কেরু এন্ড কোম্পানীর পিইটি বোতলে দেশিয় বাংলা মদ বিক্রির অনুমোদন বাতিল করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নিকট অনুলিপি প্রেরণ করেছেন বলেও জানা গেছে।  আর এতেই আটকে গেছে বাংলামদ বোতলজাত করার প্রক্রিয়া।

এদিকে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন বাংলামদ বোতলজাত করার পূর্বে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের লাইসেন্স এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়ে কেন এ প্রক্রিয়া গ্রহণ করলেন কর্তৃপক্ষ?

এ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে রাষ্টিয় প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ লাখ টাকার বোতলসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয় করা হলো এই ক্ষতির দায়ভার নেবেন কে?

একটি সূত্র জানিয়েছেন, বাংলামদ বোতলজাত করার যে আইনি ব্যাধ্যবাদকতা আছে সে বিষয়টি কি কেরু’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানতেন না ? যদি না জেনে থাকেন তাহলে এটা তার অদুরদর্শীতা এবং অজ্ঞতা ছাড়া কিছুই না। অনুমোদনে ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত কেরু অ্যান্ড কোম্পানি ১ লিটার ও আধা লিটারের বোতলে দেশি মদ বাজারজাত করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।

দেশি মদের প্রধান ভোক্তা ডোম, মেথর, মুচি ও চা-শ্রমিকদের মতো সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা নির্ধারিত বিক্রয়কেন্দ্র থেকে খোলা মদ অল্প পরিমানে কিনে থাকেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা বলছেন, অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের মতামত যাচাই করা হয়নি।

যার ফলে মদ বোতলজাত করণের জন্য ক্রয়কৃত ৪০ হাজার বোতল কেরু’র প্রতিষ্ঠানের পুরাতন গোডাউনে রেখেছে। সে বোতল গুলো গোডাউনে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে  এর দায়ভার কে নিবে? চিনিকলের ব্যবস্থপনা পরিচালক কোন ক্ষমতা বলে রাষ্টিয় প্রতিষ্ঠানের টাকায় এমন একটি কার্যক্রম গ্রহণ করলেন তা নিয়ে সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

এবিষয়ে কেরু’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাব্বিক হাসান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বন্ধের  চিঠি এসেছে তবে আমি চিঠিটা সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছি, বোতলজাত হবে কিনা সেটা সদর দপ্তর দেখবে।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয়

কাব্যকস সুপার মার্কেট, ৩ ডি কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

মোবাইলঃ ০১৬২২৬৪৯৬১২, ০১৬০০০১৪০৪০

মেইলঃ tadantachitra93@gmail.com, tchitranews@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

Web Design & Developed By
A

তদন্ত চিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েব সাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।